এম জাফরান হারুন, নিজস্ব প্রতিবেদক, পটুয়াখালী::
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নে একের পর এক চলছেই চুরি ও ডাকাতি। যেন দিনের পর দিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে চুরি ও ডাকাতি। আবার ফের দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে এই ইউনিয়নে। ঘরের সামনের দরজা ভেঙে ডাকাতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার (৭ আগস্ট) দিবাগত গভীর রাত ২ টার পরবর্তী সময়ে কালাইয়া ইউনিয়নের কর্পূরকাঠী গ্রামের মোঃ নজরুল ইসলামের ঘরে এ ডাকাতির ঘটনাটি ঘটে।
ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, মোঃ নজরুল ও তার বড় মেয়ে নুসরাত জাহান রাজধানী ঢাকায় বসবাস করেন। বাড়িতে তার স্ত্রী রুবিনা বেগম তাদের মেয়ে রুকাইয়া জাহান ও ছেলে আবদুল্লাহকে নিয়ে বসবাস করেন। সোমবার গভীর রাতে তাদের বসতঘরের প্রধান ফটক (সামনের দরজা) ভেঙে ৪ সদস্যের একটি ডাকাত দল ঘরে প্রবেশ করে। এসময় তাদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতি সংঘটিত করা হয়। ডাকাত দলের সদস্যরা প্রায় ৭ লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কার, নগদ আনুমানিক ১ লাখ টাকা ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ আসবাবপত্র নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী মোসা. রুবিনা বেগম বলেন, ডাকাত সদস্যদের বয়স আনুমানিক ২২-২৫ বছর হবে। আমি ডাকাতিতে বাধা দিতে চাইলে ডাকাতরা আমাকে মারধর করে। একপর্যায়ে তারা আমার এবং আমার সন্তানদের গলায় ছুরি ধরে হত্যার হুমকি দেয়। এ সময় আমি ভয়ে চুপ হয়ে গেলে তারা প্রায় ১ঘণ্টা বাসা তছনছ করে বীরদর্পে মালামাল নিয়ে চলে যায়।
এর সপ্তাহ খানেক আগে তিন দোকান নামক স্থানে রাত ১টার দিকে আলী আজম খানের ঘরে তার স্ত্রী ও মেয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা পয়সা স্বর্নলংকার নিয়ে বীরদর্পে চলে যায় ডাকাতরা। তার একদিন পরই সেই তিন দোকান সংলগ্ন দক্ষিণ পাশে জেলে রহিমের বাসায় দিনের বেলা ১০টার দিকে একদল ডাকাত প্রকাশ্য দিবালোকে রহিমের স্ত্রীকে জিম্মি করে স্বর্নলংকার নিয়ে বীরদর্পে চলে যায়।
নাম না বলা শর্তে একাধিক লোকজন জানান, কালাইয়া ইউনিয়ন যেন এখন মাদক, চুরি- ডাকাতিতে এক আতঙ্ক বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষের ঘুম কেড়ে নেওয়া হয়েছে, চলছে তাদের মধ্যে একটা আতঙ্ক। একের পর এক চুরি-ডাকাতি চলছেই। প্রশাসনের নেই কোনও তদারকি। দিন দিন সাধারণ মানুষ সব হারিয়ে হয়ে যাচ্ছে নিঃস্ব। সাধারণ মানুষ এই নিরাপদ আশ্রয় চায়, চায় তারা মুক্তি।
এব্যাপারে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসম কবিরুজ্জামান জানান, আমরা এব্যাপারে সোচ্চার হয়ে মাঠে আছি। এবং ইউনিয়নের প্রতি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে চেয়ারম্যানের নির্দেশে মাইকিংও করা হয়েছে। আমাদের তৎপরতা চলছে।
এবিষয়ে বাউফল থানার ওসি এটিএম আরিচুল হক বলেন, পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আর সপ্তাহ খানেক যে ডাকাতির কথা শুনেছি তা নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন যে তা নাকি সঠিক নয়। তারপরও আমাদের পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জরিত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, গত দুই মাসে বাউফল উপজেলায় প্রায় একডজন চুরি-ডাকাতির খবর পাওয়া গেছে। সূর্যমণি ইউনিয়নের একটি ডাকাতি ঘটনায় অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হলেও কমছে না ডাকাতির ঘটনা। এ নিয়ে পুরো উপজেলা তথা কালাইয়ার সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।