নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানী ঢাকার সাভার উপজেলার আমিনবাজার ভাঙ্গা লোহার ব্রিজ পাওয়ার গ্রিড সংলগ্ন এসবিবি ও শাহিন ব্রিকস এর ভিতরে ৫টি এবং পাশেই নীল টিন দিয়ে ঘেরার ভিতরে ৩টি স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় সর্বমোট ৮টি পুরাতন ব্যাটারি আগুনে জ্বালিয়ে সিসা তৈরীর কারখানা চলছে।
কারখানার দূষিত ধোয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে আশেপাশের এলাকায় বসবাসরত মানুষের জীবন , ধ্বংসের মুখে প্রাকৃতিক পরিবেশ, জীব ও বৈচিত্র।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় এসবিবি ব্রিকস এর ভিতরে দুইটি কারখানা পাশেই শাহীন ব্রিকস এর ভিতরে তিনটি কারখানা ও তার পাশেই নীল টিন দিয়ে ঘেরাও করা একটা বাউন্ডারির ভেতরে তিনটি সিসা তৈরির কারখানা ,কারখানার শ্রমিকেরা কেউ কেউ ব্যাটারির খোল ছাড়িয়ে প্লেট বের করছে আবার কেউ কেউ ব্যাটারির সেই প্লেট চুল্লির মুখে সাজাচ্ছে ও কারখানার ভিতরে এসিডের গন্ধে নিঃশ্বাস বন্ধ হতে চলছিল।
এই অবৈধ কারখানার মালিক গুলো সবগুলোর বাড়ি গাইবান্ধা জেলায় গণমাধ্যম কর্মীরা কারখানার কয়েকজন মালিক কে প্রশ্ন করলে আপনাদের পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র অথবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক কোন ট্রেড লাইসেন্স আছে কিনা।
তারা উত্তরে বলেন আমাদের কোন কাগজপত্র নেই প্রতিটি কারখানার মাসিক কন্ট্রাক্ট দেড় লক্ষ টাকা যা দিয়ে অনেককেই ম্যানেজ করে কারখানা চালানো হয়, আমরা আটটি কারখানায় সর্বমোট ১২ লক্ষ টাকা দুই সাংবাদিককে দেই যারা কারখানায় এসে ঝামেলা করে তাদের ম্যানেজ করার জন্য।
আপনারা নিউজ করলে করেন সমস্যা নাই আমরা সবাইকে ম্যানেজ করেই চলি,নিউজ করলে পরিবেশ অধিদপ্তরের লোক, ইউএনও, এসিল্যান্ড এনারাইতো আসবে দেখা যাবে নিউজ করে কি করতে পারেন।
কারখানা মালিকদের কাছে প্রশ্ন করলে ব্যাটারির প্লেটে আগুন জ্বালিয়ে সিসা তৈরি করার সময় যে দূষিত ধোঁয়া ৪০/৫০ ফুট উপরে ওঠে ও এসিডের প্রচুর ঝাঁজালো গন্ধ বের হয় এতে আপনাদের কোন সমস্যা হয়কিনা।
প্রশ্নের জবাবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার মালিক বলেন না এটা তেমন কোন ক্ষতি হয় না ,একটু হালকা-পাতলা গন্ধ হয় কিন্তু আমরা বাতাসের উল্টোদিকে থাকি।
এ ব্যাপারে মুরগা কান্দা এলাকার জৈনক মো: আবুল কালাম আজাদ ও প্রায় ৩০-৪০ জন বিভিন্ন জেলা হইতে আগত ভাড়াটিয়া গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির শ্রমিকেরা অভিযোগ করে বলেন প্রতিদিন রাত্রি০৯:০০ ঘটিকা হইতে ভোর ০৫:০০ ঘটিকা পর্যন্ত যখন চুল্লিতে কয়লার আগুনে পুরাতন ব্যাটারি প্লেট জ্বালিয়ে সিসা তৈরি করে ,তখন আশেপাশের এলাকায় বাড়ির ভিতরে থাকা কষ্টসাধ্য হয়ে যায় নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়।
এই কারখানার ধোঁয়ার ফলে আশেপাশে দুই তিন কিলোমিটার এলাকায় বাড়ির ভিতরে থাকা লোকজনের নাক মুখ চোখ জ্বালা করে ,এলাকার শিশু ও বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্ট সহ বিভিন্ন রোগে প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছে।
কিন্তু এদের বিরুদ্ধে কেউ কখনো কোনো ব্যবস্থা নেয় না যারা আসে টাকা খেয়ে মনের সুখে গান গাইতে গাইতে চলে যায় ,আমরা এদের কাছে অসহায় কখনো জোর করে কাউকে কিছু বলতে পারি না প্রাণভয়ে কারণ এদের অনেক মাস্তান ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী আছে। যারা বিভিন্ন ভয় দেখায়,আমরা বিভিন্ন জেলা হইতে এসে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকি চাকরি করি বিধায় সবসময় এদের কাছে জিম্মি ও অসহায়।
এসময় এলাকাবাসী অতি দ্রুত পুরাতন ব্যাটারি আগুনের জ্বালিয়ে সিসা তৈরির কারখানাগুলো ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে উচ্ছেদ করার জন্য ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ,ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার ,ঢাকা জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর ,সাভার উপজেলা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এ ব্যাপারে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ সামিরুল ইসলাম সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান অতি দ্রুত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তাদেরকে উচ্ছেদ করা হবে।
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাজহারুল ইসলাম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আপনার মাধ্যমে এই প্রথম জানলাম,অবৈধ কারখানার গুলোর বিষয়ে ,অতি দ্রুত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে উচ্ছেদ করা হবে।
আমিনবাজার এলাকার সহকারি কমিশনার (ভূমি) জুলহাস হোসেন সৌরভ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন অতি দ্রুত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে কারখানাগুলোকে স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করা হবে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তর সদর দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কাজী আবু তাহের ও পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকা জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোঃ জহিরুল ইসলাম তালুকদার এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান,আমরা প্রতিনিয়ত পরিবেশ দূষণকারী সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে কঠর ভাবে কাজ করি ইতিপূর্বে আমাদের জানা ছিল না এই আটটি কারখানার ব্যাপারে ,আপনাদের মাধ্যমে জানলাম অতি দ্রুত ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে কারখানা গুলোকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে ।