1. info@www.dailybdcrimetimes.com : দৈনিক বিডি ক্রাইম টাইমস.কম :
শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৪৭ পূর্বাহ্ন

পটুয়াখালীতে শিশু রাতুল’কে হত্যাপূর্বক মৃতদেহ গুম ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন সহ মৃত দেহ উদ্ধার ০২ জন আসামী গ্রেফতার

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ১১০ Time View

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:

গত ১৮-০৯-২৩ তারিখ রাত্র অনুমান ১০.৩০ ঘটিকা হতে ১৯-০৯-২০২৩ তারিখ রাত্র অনুমান ০৩.০০ ঘটিকার পূর্ববর্তী যে কোন সময় অজ্ঞাতনামা আসামীরা কৌশলে বাদী মোঃ গোলাম রহমান লিটন (৪৫), পিতা-মৃত হানিফ ঘরামী, সাং-ছোট আউলিয়াপুর, ইউপি-আউলিয়াপুর, থানা ও জেলা পটুয়াখালী এর বসত ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে খাবারের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্যে প্রয়োগ করে ০১। বাদী -মোঃ গোলাম রহমান লিটন @ লিটন ঘরামী, ০২। মোঃ রাতুল (ভিকটিম) (১০), পিতা-মোঃ গোলাম রহমান লিটন, ০৩। মোসাঃ আছমা বেগম (ভিকটিমের মাতা), ০৪। মোসাঃ রিজিয়া বেগম (ভিকটিমের দাদী) দেরকে অচেতন করে রাত্রিবেলা সঙ্গোপনে বাদীর বসত ঘর ও বসত ঘর সংলগ্ন ডেকোরেটর দোকান ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে ডেকোরেটরের রুমের মধ্যে থাকা মালামাল চুরি করাসহ অজ্ঞাত কারনে বাদীর ক্ষতি করার জন্য বাদীর শিশু সন্তান মোঃ রাতুল (১০)‘কে জোর পূর্বক বসত ঘরের পিছনের দরজা দিয়ে অপহরণ করে নিয়া যায় যা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এরূপ সংবাদ প্রাপ্তির সাথে সাথে পটুয়াখালী জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ একটি চৌকস টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন পূর্বক বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত, আলামত সংগ্রহ পূর্বক ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের তৎপর হয়। পটুয়াখালী জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ সাইদুল ইসলাম, বিপিএম, পিপিএম এর দিক নির্দেশনায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জনাব মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল এর নেতৃত্বে পটুয়াখালী সদর থানার একটি চৌকস আভিযানিক দল ঘটনার পর হতে অক্লান্ত পরিশ্রম শেষে গত ২৫-০৯-২০২৩ খ্রি. সারারাতব্যাপী অভিযান পরিচালনা করে পটুয়াখালী থানাধীন জৈনকাঠী ইউপির সেহাকাঠী সাকিন হতে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দিগ্ধ নি¤েœ বর্ণিত আসামীদের পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামী ঃ-
০১। মোঃ আনোয়ার হোসেন (৪৫), পিতা-মফেজ মাতুব্বর, সাং-ছোট আউলিয়াপুর, ৫নং ওয়ার্ড, থানা ও জেলা পটুয়াখালী
০২। মোঃ হানিফ হাওলাদার (৪১), পিতা এনছান হাওলাদার, সাং- সেহাকাঠী, ৯নং ওয়ার্ড, থানা ও জেলা পটুয়াখালী

উপরোক্ত আসামীদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হলে তাদেরকে ঘটনা সংক্রান্তে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ কালে তারা জানায় ঘটনার দিন ১৯-০৯-২০২৩ তারিখ রাত্র ১২:০৫ ঘটিকা হতে রাত্র ০৩:০০ ঘটিকার মধ্যবর্তী সময় বাদী মোঃ গোলাম রহমান লিটন (৪৫) এর বসত ঘর সংলগ্ন ডেকোরেটর এর দোকান হতে মালামাল চুরি করে। জিজ্ঞাসাবাদে ০১নং আসামী মোঃ আনোয়ার আরো জানায় যে, লিটন ঘরামীর ছেলে ভিকটিম রাতুলকে সাইকেল ক্রয়ের জন্য ১৪,০০০/-টাকা প্রলোভন দেখিয়ে পূর্ব পরিকল্পনামতে ছেলে রাতুলের মাধ্যমে ঘুমের ঔষধ/চেতনা নাশক ঔষধ তাদের রাতের খাবারে মিশিয়ে ভিকটিম রাতুলের বাবা, মা ও দাদীকে অচেতন করে গভীর রাতে ঘরের পিছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করে সামনের দরজা খুলে ঘর সংলগ্ন মালামালের ডেকোরেটর দোকান হতে সাউন্ড সিস্টেমের বিভিন্ন দামী সরঞ্জামাদি, অটোরিক্সার ব্যাটারী চুরি করে। পরবর্তীতে ঘটনা যাতে জানাজানি না হয় সে জন্য ঘটনার একমাত্র সাক্ষী ভিকটিম শিশু রাতুলকে ঐদিন রাতেই তাদের নিজ গৃহে মুখ চেপে ধরে গলাটিপে শ্বাসরোধে অমানবিকভাবে হত্যা করে। পরবর্তীতে লোমহর্ষক হত্যাকান্ড ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ভিকটিমের লাশ গুমের উদ্দেশ্যে আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডস্থ পূর্ব আউলিয়াপুর সাকিনের জনৈক মোঃ জয়নাল বিশ্বাস এর বাড়ীর পিছনে পরিত্যক্ত টিনসেড ইটের ওয়াল ঘরের কাঁচা মেঝের পশ্চিম দক্ষিণ কোনে ০৫ ফুট মাটির গভীরে লাশের গায়ে লবণ দিয়ে পলিথিনে মুড়িয়ে মাটি চাপা দিয়ে রাখেন। আসামীদ্বয়ের দেয়া তথ্যমতে চোরাইকৃত মালামাল ০২ নং আসামী মোঃ হানিফ হাওলাদার (৪১) এর বসত ঘরের পিছনে রান্না ঘরের মাটির নিচ হতে সাউন্ড সিস্টেমের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি এবং বসত ঘরের পিছনে ডোবা হতে অটোরিক্সার ব্যাটারী উদ্ধার করা হয় এবং আউলিয়াপুরের জনৈক মোঃ জয়নাল বিশ্বাস এর বাড়ীর পিছনে পরিত্যক্ত টিনসেড ইটের ওয়াল ঘরের কাঁচা মেঝের মাটির নিচ হতে শিশু রাতুলের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় আসামী মোঃ আনোয়ার হোসেন ভিকটিম শিশু রাতুলের প্রতিবেশী ও পূর্ব পরিচিত হওয়ায় তার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে সাইকেলের প্রলোভন দেখিয়ে পরিবারের সকলকে খাবারের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়াতে আসামীরা রাজী করায়। পরবর্তীতে আসামীরা অবুঝ শিশু ভিকটিম রাতুলের সহযোগিতায় বসত ঘর ও বসত ঘর সংলগ্ন ডেকোরেটরের দোকানে প্রবেশ করে দোকানে থাকা মালামাল চুরি করে বাড়ির পাশের খালে আসামীদের রাখা ট্রলারে উঠিয়ে পুনরায় ০১ নং আসামী মোঃ আনোয়ার হোসেন ভিকটিম রাতুলদের বসতঘরে প্রবেশ করে ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী ও সাক্ষী নির্মূল করতে তাকে (ভিকটিম রাতুল) নৃশংসভাবে গলাটিপে হত্যা করে আসামীরা। ভিকটিম শিশু রাতুলের লাশ গুমের উদ্দেশ্যে তার মরদেহ তার মায়ের উড়না দিয়ে প্যাঁচিয়ে নিজের কাধে করে নিয়ে পাশর্^বর্তী জঙ্গলে লুকিয়ে রেখে চোরাইকৃত মালামাল রাতের আধারে গোপনে নদী পথে নিয়ে ০২ নং আসামী মোঃ হানিফের বসত বাড়ির রান্নাঘরের মেঝেতে আগে থেকে খুড়ে রাখা গর্তে চোরাইকৃত সকল মালামাল লুকিয়ে রেখে উপরে লাকরি দিয়ে ডেকে রাখে যাতে বাইরে থেকে কেউ বুঝতে না পারে। অতঃপর ঐ দিন রাতেই ০১ নং আসামী মোঃ আনোয়ার হোসেন ভিকটিম রাতুলের লাশ রেখে যাওয়া জঙ্গল হতে উঠিয়ে নিজের কাঁধে করে প্রায় দুই কিলোমিটার দুরে নিয়ে জনৈক মোঃ জয়নাল বিশ্বাস এর বাড়ীর পিছনে পরিত্যক্ত টিনসেড ঘরের মাটির মেঝেতে রেখে গায়ে লবন মাখিয়ে পলিথিনে মুড়িয়ে ৫ ফিট নিচে মাটি চাপা দিয়ে রাখে যাতে লাশ পঁচা গন্ধ চারদিকে না ছড়ায় এবং লাশের সন্ধান কেউ যাতে না পায়।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী সদর থানায় গত ২১-০৯-২০২৩ তারিখে মামলা নং-২১, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী ২০০৩) ও পেনাল কোড এ মামলা রুজু করা হয় এবং গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved
প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং