এম জাফরান হারুন, নিজস্ব প্রতিবেদক, পটুয়াখালী::
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নে পাহারাদার জনতার হাতে ডাকাত সন্দেহে দেশীয় অস্ত্র সহ ৩ জন আটক হয়েছে। পরে থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হলে থানা পুলিশ তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত করে সম্মানের সহিত ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (৬ই অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কালাইয়া-দশমিনা সড়কের কালাইয়ার শেষ সিমান্তে।
সন্দেহে আটককৃতরা হলো-১/মোঃ আল-আমীন (৩২), পিতা আব্দুল বারেক আকন, গ্রাম- কাটাখালী, দশমিনা। ২/মোঃ হাচান গাজী (৩৫), পিতা মৃত কালাম গাজী, গ্রাম- নলখোলা, দশমিনা। ৩/মোঃ রাকিব হোসেন (২২), পিতা মৃত কালাম গাজী, গ্রাম- নলখোলা, দশমিনা।
সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন ধরে কালাইয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন বাড়ি ঘরে রাতের আধারে একদল মুখোশধারী ডাকাত বিভিন্ন ভাবে চুরি ডাকাতি করে আসছিল। যাতে করে সাধারণ মানুষ রাত-দিন আতঙ্কে আতঙ্কিত হয়ে জান-মাল নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে। তারই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রতি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মেম্বার চৌকিদারের সমন্বয়ে ১৫/২০ জনের একটি টিম গঠন করে সাধারণ মানুষের জান-মাল রক্ষার্থে বিশেষ ভাবে পাহারা দিয়ে আসছেন। এদিকে শুক্রবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার সময় দশমিনা থেকে মোটরসাইকেল যোগে ৩ জনের একটি দল কালাইয়া সিমান্ত পার হওয়ার পরপরই পাহারাদার জনতা মোটরসাইকেল টা অবরোধ করে জিজ্ঞেসবাদ করে এবং ওই ৩ জনের মধ্যে হাচান গাজী নামক লোকটার হাতে থাকা ব্যাগ থেকে একটি চাপাতি ও ২টি ছুরি ও একটি রড উদ্ধার করা হয়। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে খবর দিয়ে থানা পুলিশ কে খবর দিয়ে তাদের হাতে সোপর্দ করা হয়।
স্থানীয় চেয়ারম্যান মনির মোল্লা বলেন, কিছুদিন ধরে একটি কুচক্রী মহল আমার ইউনিয়ন তথা আমার বিরুদ্ধে আমার দূর্নাম বদনামের জন্য বিভিন্ন ভাবে একটা চুরি ডাকাতি মতো ঘটনা ঘটালে সেই চুরি ডাকাতি রোধে মেম্বার চৌকিদারের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করে রাতভর পাহারাদার হিসেবে সাধারণ মানুষের জান-মাল রক্ষার্থে বিশেষ ভাবে বিভিন্ন পয়েন্টে পয়েন্টে পাহারাদার বসাই। এ পর্যন্ত সন্দেহভাজন হিসেবে ৪/৫ জনকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে। তারা কেউ কারাগারে আবার কেউ জামিনে এসেছেন। গতকাল রাতে স্থানীয় পাহারাদারদের খবরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে গিয়ে পরে আটককৃতদেরকে থানা পুলিশের তদন্ত ওসি আতিকুল ইসলাম ও এসআই মনিরুজ্জামান মনিরের হাতে দেশীয় অস্ত্র সহ তুলে দিয়েছি।
এব্যাপারে বাউফল থানার তদন্ত ওসি মোঃ আতিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে জানা গেছে যে আটককৃত ৩ জন পেশায় মাংস বিক্রেতা কসাই। তারা কালাইয়া ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত আব্দুল গনি বেপারীর ছেলে গরু ব্যবসায়ী মোঃ কবির বেপারী ৪টা গরু ও ইমাম হোসেন নামের এক গরু ব্যবসায়ীর ২টা গরু বেতাগা বাগেরহাট থেকে ক্রয় করে একটি ট্রাকে করে নিজ বাড়ি কালাইয়াতে এসে নামায়। এসময় ট্রাক থেকে গরুগুলো নামানোর সময় একটা গরু লাফ দিয়ে জখম হয়। গরু ব্যবসায়ী কবির বেপারী গরুটি মরে যেতে পারে আশংকা করেন এবং দশমিনা বাজারে দীর্ঘদিন গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করে আসছেন মোঃ হাচান গাজী কে খবর দেন। হাচান গাজী খবর পেয়ে তার আরও ২জন সহযোগী কে নিয়ে রাত ১২টার পরে কালাইয়াতে মোটরসাইকেল যোগে আসতে গরু জবাই সহ গরুর মাংস কাটার দেশীয় অস্ত্র সহ পাহারাদার জনতার হাতে ডাকাত সন্দেহে আটক হন। পরে আমরা খবর পেয়ে উদ্ধার পূর্বক তদন্ত করে তাদের নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাদের কে আইনগত ভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান মনির মোল্লা বলেন, আমার কালাইয়াতে বিশেষ করে কবির বেপারীর বাড়িতে গরু জবাইয়ের কসাই আছে। তাদের কে খবর না দিয়ে দশমিনা থেকে কসাই আনতে হবে এটা কেমন কথা। আবার অতো রাতে কালাইয়া আসবে বেশ ভালো কথা কিন্তু আমাকে বা থানা পুলিশ কে বিষয়টি অবগত করে আসতো। যা-ই ই হোক এখানে একটা কিন্তু রয়েছে বলে আমি ধারণা করছি।