নিজস্ব প্রতিবেদক:
মহান স্রষ্টার সৃষ্টির কোনো প্রকৃত গননা আর কেউ জানে না। তবে স্রষ্টার সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ। এতে কোনো ভুল নেই। আর এই মানুষের প্রধান মৌলিক চাহিদা তিনটি – আহার বস্ত্র বাসস্থান এই তিনটি চাহিদা থেকে কোনো একটি কমতি হলে। ব্যক্তি জীবনে মানুষ নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হয়। উল্লেখযোগ্য তিনটি মৌলিক চাহিদা থেকে একটি কম হলেই মানুষেরা সারাজীবনের জন্য সুখ বঞ্চিত হয়।
আমি যদি সমগ্র পৃথিবীর কথা বলতে যাই। তাহলে গড়ে মানুষের প্রয়োজনের চেয়েও অনেক বেশি ভূমি আছে।
কিন্তু সব ভূমি ব্যবহার উপযোগী নয়। আবার অনেক পরিবেশে মানুষেরা বাস করবে তাও সম্ভব নয়।
এবার আসি বাংলাদেশে। বতর্মান সময়ে মানুষের তুলনায় আমাদের দেশে ভূমির পরিমাণ খুবই কম।
যার ভূমি আছে তার অনেক আছে।
অনেকের আরো বেশি আছে।
এই সমাজে যার ভূমি নেই। তার একেবারেই নেই। অনেকের একহাত ভূমিও নেই। যার সংখ্যা প্রায় ৪০% প্রকৃত গননায় আরো বেশি হতে পারে।
আবার আমাদের দেশে সব ভূমি বাসস্থান বানানোর উপযুক্তও নয়।
কেননা বাংলাদেশ চির সবুজায়নের দেশ। এদেশের সিংহভাগ মানুষেরা কৃষি কর্মের উপর নির্ভরশীল।
তাহলে মানুষেরা থাকবে কোথায়? এরকম প্রশ্ন কিন্তু আজ প্রায় পনেরো বছর ধরে মানুষের মুখে মুখে আলোচনা চলে।
এদিকে খাদ্যের যোগান দিতে গেলে যেকোনো মূল্যে ভূমি রক্ষা করতেই হবে। আবার বাসস্থান করতে কৃষি জমি কমে আসবে। তখন দেশে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিবেই।
এর মধ্যে দেশের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা শুধু করেছে খাল ভরাট। নদী ভরাট।
এখানে আবাসন অথবা হাউজিং হচ্ছে। নতুবা দেশের বহুজাতিক কোম্পানি গুলোর কারখানা করে রেখেছে অনেকেই। ভবিষ্যতে হয়তো এই মানুষেরা সাগর ভরাট চেষ্টা করবে।
এধরনের পায়তারা শুধু নিজ স্বার্থহাসিলের জন্য। এই ধরনের ভরাট ভরাট খেলায় কোনো ভূমিহীনের কোনো লাভ নেই।
ভূমিহীন ব্যক্তিগণ শহরে বন্দরে ভাড়া প্রদান করে থাকতে হয়।
বিশেষ করে বাংলাদেশের একজন ভূমিহীন নাগরিক যেন সরকারের কাছে অচল মূদ্রা। সমাজের চোখে চির অবহেলিত। দেশের ভূমিহীন নাগরিক মানেই অনাদর অবহেলার পাত্র। তিরস্কারের পাত্র।
ভূমিহীন নাগরিক মানেই দিন শ্রমিক। কুলি লেবার রিক্সা বা ভ্যান ড্রাইভার অথবা প্রতিষ্ঠিত সমাজের কাজের লোক ইত্যাদি ইত্যাদি।
তবে কথা থাকে যে দেশের ভূমিহীন জনগণ যতদিন পযর্ন্ত তারা কোনো আপন বাসস্থান না পাবে ততদিন পযর্ন্ত এই জাতি সয়ং সম্পূর্ণ হতে পারবে না। তার প্রথম কারণ হচ্ছে অশিক্ষা। ভূমিহীন পরিবারের সন্তানে শিক্ষিত হতে পারবে না শুধু অর্থাভাবে।
ভূমিহীন পরিবারের ভাড়া দিয়ে থাকতে হয়। এই ভাড়ার টাকাটা যদি তাদের না লাগত। তাহলে প্রতিটা ভূমিহীনের সন্তান মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানের মতো শিক্ষিত হতে কোনো বাধা থাকবে না।
সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো। আমাদের দেশে বিশেষ করে এমপি নির্বাচনে একজন এমপি যত পরিমাণ ভোট পেয়ে তিনি এমপি হন।
তার ষাট ভাগ ভোট এই ভূমিহীন জন গুষ্ঠির অথচ একজন এমপিও সংসদে দাড়িয়ে এই ভূমিহীন নিয়ে কোনো কথা বলেন না।
সরকারি বিশেষ বিবেচনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প (২) থেকে সারাদেশে কয়েক লক্ষ্য ভূমিহীন গৃহহীন পরিবারকে ঘর করে দেয়া হয়েছে।
এখানে কোনো এমপির সফলতা নেই।
তারপরও সরকারের অবশ্যই নিম্ন সাত দফা বিষয় গুলো বাস্তবায়ন করা আবশ্যক।
সম্পূর্ণ পৃথক ভাবে সয়ং সম্পূর্ণ ভূমিহীন মন্ত্রণালয় করন।
প্রাপ্তবয়স্ক সকল ভূমিহীনদের রাষ্ট্রীয় পাস দিতে হবে যা দিয়ে স্থল পথও জল পথের সকল পরিবহনে অর্ধভাড়া নির্ধারণ করন।
দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেটে ভূমিহীন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করন।
সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ভূমিহীনদের জন্য আলাদা কোটা চালু করন।
প্রত্যেক জেলায় ভৃমিহীন জন
গুষ্ঠির জন্য আলাদা শুমারি করন।
১৪জুলাই কে সরকারি ভাবে ভূমিহীন দিবস ঘোষণা করন।
দেশের ভূমিহীন জন গুষ্ঠির জন্য প্রত্যেক জেলা উপজেলায় লাল তারকা বিশিষ্ট হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করন।
অথই নূরুল আমিন
কবি কলামিস্ট ও রাজনীতি বিশেষজ্ঞ।