মোমেন আকন্দ
কথায় আছে, ব্যবহারে বংশের পরিচয়। আমাদের ব্যবহার কেমন, সেটার উপর ভিত্তি করে মানুষ ধারণা করে নেয়, আমরা কোন ধরনের পরিবার, কোন ধরনের বংশ থেকে এসেছি।
আমাদের একটি খারাপ কথা দিয়ে একটি খারাপ সম্পর্ককে ভালো সম্পর্কে রূপান্তরিত করতে পারি। আবার একটি ভালো সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যেতে পারে একটি খারাপ কথার বদৌলতে।
মহান আল্লাহ তা’আলা প্রদত্ত সর্বোচ্চ বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন জীব আশরাফুল মাখলুকাত হিসাবে আমরা প্রত্যেকেই অন্যের নিকট থেকে ভালো ব্যবহার আশা করি। কিন্তু মূলত ব্যতিক্রমটা ঘটে অন্যের বেলায়। নিজের বেলায় ভালো ব্যবহার আশা করলে অন্যের বেলায় আমরা ভালো ব্যবহার করতে প্রস্তুত থাকি না।
আমরা অনেকেই কোনটা ভালো ব্যবহার, কোনটা মন্দ ব্যবহার সেটার পার্থক্য বুঝতে পারিনা। কে কতটুকু ভালো বা মন্দ কাজ করছে সেটা যাচাইও করি না। তাই প্রত্যেকের উচিত ভালো-মন্দের মধ্যে পার্থক্যটা আয়ত্ত করা।
এ ব্যাপারে পবিত্র হাদিস শরিফে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন মুমিনের আমলনামায় সুন্দর আচরণের চেয়ে অধিক ভারী আমল আর কিছুই হবে না। যে ব্যক্তি অশ্লীল ও কটু কথা বলে বা অশোভন আচরণ করে, তাকে আল্লাহতায়ালা ঘৃণা করেন। আর যার ব্যবহার সুন্দর, সে তার ব্যবহারের কারণে নফল রোজা ও তাহাজ্জুদের সওয়াব লাভ করবে। ’ -সুনানে তিরমিজি
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘সবচেয়ে বেশি যা মানুষকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে তা হলো- আল্লাহতায়ালার ভয় ও সুন্দর আচরণ। আর সবচেয়ে বেশি যা মানুষকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবে তা হলো- (মানুষের) মুখ এবং লজ্জাস্থান। ’ -সুনানে তিরমিজি
হজরত রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘সুন্দর আচরণই নেক আমল। ’ –সহিহ মুসলিম
হাদিসে রাসূল (সা.) আরও বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যার আচার-ব্যবহার সুন্দর, সে আমার সবচেয়ে বেশি প্রিয় এবং কিয়ামতের দিন সে আমার সবচেয়ে কাছে থাকবে। ’ -সুনানে তিরমিজি
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও ইরশাদ করেন, ‘অশোভন-অশ্লীল কথা ও আচরণের সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। আর যার আচরণ যত সুন্দর তার ইসলাম তত সুন্দর। ’ -মুসনাদে আহমদ
আরেক হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যার আচার-ব্যবহার সুন্দর, আমি তার জন্য সর্বোচ্চ জান্নাতে একটি বাড়ির নিশ্চয়তা প্রদান করছি। -সুনারে আবু দাউদ
হজরত রাসূল (সা.) আরও বলেছেন, ‘যদি কেউ বিনম্রতা ও নম্র আচরণ লাভ করে, তাহলে সে দুনিয়া ও আখেরাতের পাওনা সব কল্যাণই লাভ করল। আর রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং সুন্দর আচরণ বাড়িঘর ও জনপদে বরকত দেয় এবং আয়ু বৃদ্ধি করে। ’ –আহমদ
তাই সামাজিক ও নৈতিক দিক বিবেচনায় আমাদের প্রত্যেকের উচিত সকলের সাথে ভালো ব্যবহার করা।