এম জাফরান হারুন, নিজস্ব প্রতিবেদক, পটুয়াখালী::
পটুয়াখালী-২ বাউফল আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আ.স.ম ফিরোজের সমর্থক বগা ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ রেজাউল খান (৫২) কে কুপিয়ে পিটিয়ে দুই পা এবং হাতে মারাত্মকভাবে জখম সহ পায়ে গুলি করে গুরুত্বর জখম করা হয়েছে। এছাড়াও ছাত্রলীগ নেতা অলিউল ইসলাম, মোঃ রাকিব, মোঃ ফেরদৌস, মোঃ শফিকুল ও যুবলীগ নেতা মোঃ বাদলকে কুপিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে এলাকাবাসী তাদেরকে উদ্ধার করে বাউফল হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থা গুরুতর দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। আর গুরুত্বর আহত রেজাউল করিমকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
শুক্রবার (২২শে ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে উপজেলার বগা ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের লালখান বাড়ির পাশে এ ঘটনা ঘটে।
আহত, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় জাদুর কাঠি নৌকা মার্কার উঠান বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগ নেতা অসুস্থ দিলীপ বাবুর সাথে দেখা করার পরে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করার পথে রাজনগর লালখান বাড়ির পাশে আসার সময় দুর্বৃত্তরা রাস্তায় মার্বেল ছিটিয়ে দিয়ে হোন্ডার গতিপথ রোধ করে বগা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ হাসান হাওলাদার ও ভাগ্নে শাহাবুদ্দিন এর নেতৃত্বে এলোপাথারি ভাবে কুপিয়ে পিটিয়ে জখম সহ গুলি করে আহত করা হয়। সেই গুলির খোসা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এব্যাপারে বগা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ মাহামুদ হাসান হাওলাদার বলেন, ঘটনার সময় আমি পটুয়াখালী ছিলাম। হামলার সাথে আমার কোনও সম্পৃক্ততা নেই।
এদিকে শনিবার (২৩শে ডিসেম্বর) বেলা এগারোটার দিকে নাজিরপুর ইউনিয়নের বড়ডালিমা ব্রিজ বাজারে প্রয়াত চেয়ারম্যান আমির হোসেন বেপারি সমর্থকদের মারধরের ঘটনা ঘটে। সরেজমিনে আহতরা অভিযোগ করে বলেন, আমরা সবাই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নৌকার প্রার্থী আ.স.ম ফিরোজের পক্ষে সাবেক চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুক ও চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এনামুল হক আলকাস মোল্লার নেতৃত্বে পথসভা করি। এমন সময় সাবেক চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুকের নেতৃত্বে তার ছেলে অন্যান্য পোলাপান নিয়ে হঠাৎ আমাদের ওপর হামলা চালায়। তাতে আমরা ৩জন আহত হয়েছি। কারণ আমরা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রয়াত চেয়ারম্যান আমির হোসেন বেপারির সমর্থক ছিলাম।
এব্যাপারে সাবেক চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুক বলেন, গতকাল সন্ধ্যার দিকে মেম্বার আনছার উদ্দিন কে অলিউল্লাহ, ফিরোজ সহ অন্যান্যরা মারধর করে। যাহার কারণে চেয়ারম্যান আলকাস মোল্লাকে নিয়ে গিয়ে সবাইকে এক জায়গায় বসিয়ে মীমাংসা করে মোটরসাইকেলযোগে রওয়ানা দেই। পথিমধ্যে অলিউল্লাহ আমার হাত ধরে টান দিলে পোলাপান তাদের থাপ্পড় ঘুষি মারে।
চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এনামুল হক আলকাস মোল্লা বলেন, অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তবে ফারুক ভাই মিটিং শেষে তার নেতাকর্মী নিয়ে যাবার পথে অলিউল্লাহ তার গাড়ি থামিয়ে উচ্চস্বরে কথা বলতে চাইলে পোলাপান তাদের গায়ে হাত তোলে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
এবিষয়ে বাউফল থানার ওসি শোনিত কুমার গায়েন বলেন, গত ১৮ তারিখ রেজাউল করিম একটা ঘটনা ঘটিয়ে ছিল বগাতে, সেই ঘটনার জের ধরে অন্যরা এঘটনা ঘটায়। আর বড়ডালিমার ঘটনা হলো আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে। যাহা নির্বাচনি কোনও ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত না। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সহ আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে। এসব ব্যাপারে এখনো কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি।