মো:সৈকত জামান(প্রিন্স) গাইবান্ধা:
দাম্পত্য কলহের জেরে শিশু সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিতে যাচ্ছিলেন রাজিয়া বেগম নামে এক গৃহবধু। দেখতে পেয়ে তাদের বাঁচাতে এগিয়ে যায় জোবায়ের রহমান জামিল নামে এক কলেজ ছাত্র। কিন্তু আবির নামে শিশুটি প্রাণে বেঁচে গেলেও ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ যায় রাজিয়া ও জুবায়েরের।
সোমবার (১ এপ্রিল) সকালে গাইবান্ধা শহরের মাঝিপাড়া এলাকার রেললাইনে ঘটে এ দুর্ঘটনা। লালমনিরহাট থেকে সান্তাহারগামী টোয়েন্টি ডাউন ট্রেনের নিচে কাটা পড়েন ওই দুজন।
নিহত রাজিয়া বেগম মাঝিপাড়া এলাকার রিকশাচালক আনোয়ার মিয়ার স্ত্রী। আর জুবায়ের জেলার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালি এলাকার জাহিদুল ইসলামের ছেলে। সে গাইবান্ধার এসকেএস স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে রাজিয়া বেগম নামে ওই নারীকে বরিশাল থেকে বিয়ে করে নিয়ে আসেন আনোয়ার হোসেন। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এরই জেরে কোলের সন্তান নিয়ে বাড়ির পাশের রেল লাইনে শিশু সন্তানকে সাথে নিয়ে আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে ওই গৃহবধূ মাঝিপাড়া এলাকার রেললাইনে অপেক্ষা করছিলেন। এক পর্যায়ে ট্রেন আসতে দেখেও ওই গৃহবধূ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকায় কলেজছাত্র জোবায়ের রহমান জামিল তাকে লাইনের ওপর থেকে সরানোর জন্য হাত ধরে টানতে থাকে। উভয়ের টানাটানিতে এক পর্যায়ে ট্রেন দুজনকেই ধাক্কা দেয়। এ সময় শিশুকে রেললাইন থেকে সরাতে পারলেও চলন্ত ট্রেনের ধাক্কায় ওই গৃহবধূ ও জোবায়ের গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয় লোকজন আহত গৃহবধূ রাজিয়াকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং কলেজ ছাত্রকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তির পর ওই গৃহবধূ এবং জোবায়ের মারা যান।
গৃহবধূর সঙ্গে থাকা দুই বছরের শিশুটি লাইন থেকে ছিটকে পড়ে গুরতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে বাচ্চাটির অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে।
এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোনারপাড়া (গাইবান্ধা) রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম তিনি বলেন, শিশুসহ গৃহবধূকে বাঁচাতে গিয়ে কলেজছাত্রসহ দুজনেরই মৃত্যু হয়েছে। ওই নারীর কোলে থাকা শিশুটি ছিটকে পড়ে যায়। আহত শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য রংপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : ইসমাইল হোসেন সৌরভ,
নির্বাহী সম্পাদক:মো:শাহাবুদ্দিন খান
বার্তা প্রধান : মোহাম্মদ শাহ্ কামাল,
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত