নিজস্ব প্রতিবেদক:
হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে নারায়ণগঞ্জের
সাইনবোর্ড এলাকা । চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে পুড়ে যাওয়া আসবাব ও যানবাহন।সোমবার (৫ আগস্ট) সাইনবোড ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ঘুরে দেখা গেছে, আগুনে পোড়া গাড়ির সারি এবং ভেতরে ঢোকার কলাপসিবল গেট ভাঙা। ভবনে ঢুকেই চোখে পড়ল মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পুড়ে যাওয়া মামলার আলামত-নথিপত্র। থানা থেকে লুটপাট করা হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র। থানায় নেই কোনো পুলিশ সদস্য।
একদিন আগেও যে থানা ছিল কর্মব্যস্ত, গত সোমবার রাতে সেটা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। আগুন দেয়ার পর থানার ভেতরে ঢুকে যে যা পেরেছেন নিয়ে গেছেন। অনেকে পুড়ে যাওয়া গাড়িগুলো থেকে যন্ত্রপাতি খুলে নিয়ে গেছেন। থানা কম্পাউন্ডের ভেতরে ও বাইরে শতাধিক যানবাহন আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে কঙ্কালের মতো পড়ে আছে। থানার জানালার গ্লাস সব ভেঙে চুরমার করা হয়েছে। সোমবার সকালে এসব চিত্র দেখতে সেখানে শত শত সাধারণ মানুষ ভিড় জমায়।
ভুক্তভোগী মেহেদী হাসান নাঈম স্থানীয় প্রতিনিধিকে জানান: সরকারের প্রতি জনগণের অনেক ক্ষোভ ছিল। সেই ক্ষোভ থেকে সাধারণ জনগণ আমার মাইক্রোবাসহ অসংখ্য মানুষের গাড়ি -ঘোড়া, যানবাহন পুড়ে ছারখার করে দিয়েছে। তিনি আরো ও জানান ৩৫,০০,০০০ লক্ষ টাকা গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনছিলেন। সেই গাড়ি চালিয়েই সংসার ও ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতেন। এখন তাদের ভিক্ষা করার মত অবস্থা প্রায়।
এলাকার অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাজার হাজার জনতা থানা ঘেরাও করে হামলা করে। ওই সময় থানা থেকে ব্যাপক গুলি চালানো হয়। গুলিবিদ্ধ হয় তিন শতাধিক মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকে নিহত হয়েছেন। সেখানে ৪-৫ জন পুলিশও মারা যায়। তাদের অনেকের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। গত রবিবার বিকেল ৫টার দিকে থানা ঘেরাও করে পুলিশকে অবরুদ্ধ করে ফেলে আন্দোলনকারীরা। পুলিশের বড় একটি দল ফিল্মি স্টাইলে থানা থেকে বেরিয়ে নির্বিচারে গুলি করতে করতে সামনে এগিয়ে যায়। তখন বহু মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়ে হতাহত হয়েছে। তবে থানায় কয়েকজন পুলিশ আটকা পড়ে। তাদের গণপিটুনি দিয়ে সেখানেই মেরে ফেলা হয়েছে। ঢামেক সূত্র মতে, যাত্রাবাড়ী থেকে ৪০টির বেশি লাশ গিয়েছে ঢামেক হাসপাতালে।
বিকেল দিকে থানার ফটকে ঢুকতেই দেখা যায় শত শত মানুষের ভিড়। কেউ এসেছেন কোলের শিশু নিয়ে, কেউবা স্ত্রী-স্বজন নিয়ে। কেউ কেউ ছবি তুলছেন কেউবা ভিডিও করছেন। থানার সামনে দুই পাশে থানা পুলিশের যানবাহন ছাড়াও রিকুইজিশনের অন্তত ৬৫ যানবাহনে আগুন দেয়া হয়। অনেকে পুড়ে যাওয়া গাড়িগুলো থেকে যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া পূর্ব পাশে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) ভবনের সামনে থানার অন্তত ৩৫টি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়।
আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী মুস্তাফিজুর রহমান অর্ণব বলেন: মানুষের লক্ষ লক্ষ টাকা দামের গাড়ি পোড়ানো হয়েছে মানুষজন পথে বসে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে অর্থাৎ সাধারণ মানুষ অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এদের এই ক্ষতিপূরণ অপূরণীয়।