শরিফা বেগম শিউলী,স্টাফ রিপোর্টার:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী ও অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাইদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যকে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার(১০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় অভিযুক্ত রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন ও সুজন চন্দ্র রায়কে রংপুর মেট্রোপলিটন আমলি আদালতে নেওয়া হয়। এ সময় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তাঁদের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আইনজীবীদের যুক্তিতর্কের পর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোঃ আসাদুজ্জামান। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাঁদের আদালত থেকে নিয়ে যায় পিবিআই।
এর আগে গতকাল সোমবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার রিক্যুইজিশনের ভিত্তিতে গ্রেপ্তারের পর তাঁদের পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আজ সকাল ৯টায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে আনা হয় দুই আসামিকে। গত ৩ আগস্ট মহানগর পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ওই দুই পুলিশ সদস্যের অপেশাদার আচরণের প্রমাণ পাওয়ায় তাঁদের বরখাস্ত করা হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী শামীম আল মামুন বলেন, আদালতের বিচারক আসামি আমির হোসেন ও সুজন চন্দ্রের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার ভিডিও দেখেছেন এবং তাঁদের বক্তব্য শুনেছেন। তাঁরা আদালতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ আরিফুজ্জামান, সহকারী পুলিশ কমিশনার ইমরান হোসেন ও তাজহাট থানার সাবেক ওসি রবিউল ইসলামের নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে কিছু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কথাও বলেছেন।
কারা এই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, কারা আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী, কারা হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দিতে মামলা ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে—সব বের করার জন্য আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। সেই সঙ্গে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ প্রতিপালনের নির্দেশনাও দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই দুপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে বেরোবির ১ নম্বর গেটের সামনে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের গুলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হন। এ ঘটনায় গত ১৮ আগস্ট রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাজহাট আমলি আদালতে আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বাদী হয়ে পুলিশ কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষকসহ ১৬ জনের নামে এবং অজ্ঞাত ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।