হেলেনা আক্তার,গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামী তুহিন কে ওই মামলায় আসামি করে ফাঁসানোয় ও হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন তার পরিবার।
বুধবার (২১ই মে) দুপুরে গাজীপুর সেন্ট্রাল প্রেস ক্লাবে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় গ্রেফতারকৃত তুহিনের বড় বোন ফারহানা আক্তার সম্পা,মা সাজেদা পারভিন এবং স্ত্রী ফারজানা আক্তার সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তুহিনের পক্ষে স্ত্রী ফারজানা আক্তার সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে তুহিনের স্ত্রী ফারজানা আক্তার অভিযোগ করে গণমাধ্যমকে জানান, গত ২০১৪ই সালের, ১৫ এপ্রিল, তুহিনের বাবা মারা যাওয়ার পর স্থানীয় স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদ সরকারে প্রভাবশালী ছাত্রলীগ নেতা সুমন চন্দ্র দাস, পৈত্রিক সম্পত্তি, ওয়ারিশানগণের নিজ নিজ নামে নামজারী করার কথা বলে প্রতারণামূলকভাবে কৌশলে সকল কাগজপত্র হাতিয়ে নেয়। গত ২০১৬ সালে দলিল লেখক ও সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসের কিছু অসাধু কর্মচারীদের সহযোগীতায় গ্রেফতারকৃত তুহিনসহ তার পরিবারের সদস্যদের স্বাক্ষর নকল করে ২টি আমমোক্তানামা দলিল রেজিষ্ট্রি করে, ১৮৭ শতাংশ জমি জবরদখল ও আত্মসাৎ করার চেষ্টা করেন। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সেই নেতার নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয় আমাদের পরিবারের সদস্যরা। ফারজানা বলেন জাল আমমোক্তারকৃত ১৮৭ শতাংশ জমি থেকে এই প্রতারক সুমন, তার স্ত্রী শ্রাবনী রানীর নামে ৪১ শতাংশ ও তার বাবা নিখিল চন্দ্র দাস, এর নামে ২৭শতাংশ জমি বিক্রয় দেখিয়ে বেআইনি ভাবে জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে, ৮ লাখ টাকার সরকারী কর ফাঁকি দেয়, তারা ২টি সাফ কবলা দলিল রেজিস্ট্রার করেন। যেন স্ত্রী ও বাবার মাধ্যমে জমি বিক্রয় করে অর্থ আত্মসাৎ করতে সমস্যা না হয়। সেই সাথে তাদের ভোগ দখলীয় জমি অবৈধ জবর দখল করার সুবিধার্থে জাল দলিল থেকে জমি জবরদস্তি দখলকারীদের অন্যান্য সদস্যকে এবং কথিত সৈরাচারী আওয়ামী দোসরদের নামে বিভিন্ন দলিল রেজিষ্ট্রার করে দেয়। তিনি বলেন এবিষয়ে পরিত্রাণ পেতে গাজীপুরের সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ২ টি জাল আমমোক্তারনামা দলিল বাতিলের লক্ষ্যে ৩৭৪/১৬ ও ২৮৭/১৮ নং দেওয়ানী এবং প্রতারনা, জাল জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অপরাধে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৮৩/২০২৩ নং সিআর মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী। এবিষয়ে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। বর্তমানে এই ৩ টি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এর কারণে সুমনসহ ভূমি জবরদস্তি দখলকারীদের সদস্যরা, আমাদের নিজ ঘর বাড়ি থেকে আমার স্বামী তুহিনসহ তার পরিবারকে উচ্ছেদ করতে বাড়িতে হামলা চালায়, এবং বাড়ির সামনের সব গাছ কেটে ফেলে। গাছ কেটে নেয়ার সময় প্রতিবাদ ও বাধা প্রদান করলে আমাদের কে মারপিট করে, জায়গা সম্পত্তি দখল করে নিতে সীমানায় প্রাচীর দেওয়াল নির্মাণ করা শুরু করে। সীমানায় দেয়ালের প্রাচীর করার কাজে তুহিনসহ স্থানীয় আশপাশের লোকজন বাধা দিলে তুহিনের বিরুদ্ধে জিএমপি, সদর থানার সাবেক ওসি সৈয়দ রাফিউল করিম রাফিকে ম্যানেজ করে মিথ্যা চাঁদা বাজির মামলা দায়ের করে জমি দখলকারীদের অন্যতম সদস্য হামিদ শিকদার। এঘটনায় কয়েকটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে চাঁদাবাজির অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তুহিনকে জামিনের আদেশ প্রদান করেন।
এরই মধ্যে জুলাই আগষ্টের বিপ্লব সংঘটিত হলে ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচার সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে আশার আলো দেখেন ভুক্তভোগী পরিবারটি । কিন্তু নিমেষেই তা যেন পরিনত হয় নিরাশায়। স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদ সরকারের দলের সকল সদস্যরা পালিয়ে গেলেও প্রতারক সুমন তার নিষিদ্ধ সংগঠন স্বৈরাচারী আওয়ামী মুখোষ পরিবর্তন করে বর্তমানে বিএনপির নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় ভয়ংকর রুপ নেয়। তাদের ক্ষমতা দেখিয়ে আদালতের আশপাশে হামলা চালিয়ে মামলা পরিচালনায় বাধা দেয় এবং সকল মামলা প্রত্যাহারের জন্য প্রতিনিয়ত ভয়ভীতি ও খুনের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। তুহিনসহ তার পরিবারের সদস্যরা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তুহিনকে বাসন থানার বৈষম্য বিরোধী ছাত্রহত্যা মামলার দায় হতে অব্যাহতি (খালাস) প্রদানের সুব্যবস্থাসহ ন্যায় বিচারের স্বার্থে নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : ইসমাইল হোসেন সৌরভ,
নির্বাহী সম্পাদক:মো:শাহাবুদ্দিন খান
বার্তা প্রধান : মোহাম্মদ শাহ্ কামাল,
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত