স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. মাহমুদ হোসেন রিপন ও প্যানেল চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা কামালকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তাদের উপর এ হামলা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকে ইউনিয়ন পরিষদে কাজ করছিলেন চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন রিপন ও প্যানেল চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল। এসময় ৩০ থেকে ৩৫ জনের একটি দল পরিষদ ভবনে প্রবেশ করে তাদের পরিষদ ভবন থেকে টেনে-হিঁচড়ে বাইরে এনে ইউনিয়ন পরিষদের সামনের সড়কে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি, চড়-থাপ্পড় দিতে থাকে। হামলাকারীরা এ সময় চেয়ারম্যান রিপন ও প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা কামালের পরনের জামা ছিঁড়ে ফেলে। পরে স্থানীয়রা ও কিছু ব্যক্তি উত্তেজিতদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে কাঁঠালিয়া থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেন। তবে ঘটনার পর থেকে চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন রিপন আত্মগোপনে চলে গেছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
মোঃ মাহমুদ হোসেন রিপন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শৌলজালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি (বহিষ্কৃত) ও ৭নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শামসুল আলমের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী মাছুম, সজল, শৌলজালিয়া ইউনিয়ন ছাত্র দলের আহবায়ক মোঃ খালিদ হোসেন, উপজেলা ছাত্রদল নেতা মোঃ রাজিব হোসেন, ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী, মোঃ রিয়াজ হোসেন, মোঃ সাইফুল, মোঃ আব্দুল্লাহ, মোঃ আবু তাহের, মিরাজসহ ৪০-৫০ জন বিএনপি নেতাকর্মীরা এই হামলায় অংশ নেন। দলীয় কোন্দল, রাজনৈতিক শত্রুতা এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত হওয়ার কারণেই চেয়ারম্যান রিপনের উপর এই হামলা হয়েছে। শামসুল আলমের সঙ্গে চেয়ারম্যান রিপনের পূর্ব শত্রুতা ছিল। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে শামসুল আলম ইউনিয়নে বিএনপির প্রভাব বিস্তার এবং চেয়ারম্যানকে বিতাড়িত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।৷ এবং ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মাহমুদ হোসেন রিপনকে সরিয়ে তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য ভাড়াটিয়া লোক দিয়ে মামলা দিয়ে হয়রানি করেও কোন রেজাল্ট না পাওয়ার কারনেই আজকের হামলাও সেই ষড়যন্ত্রের অংশ বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, মোঃ মাহমুদ হোসেন রিপন শৌলজালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও পরপর তিনবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে, জেলার পরপর ৮ বার শ্রেষ্ট চেয়ারম্যানও বরিশাল বিভাগের ১ বার শ্রেষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। তিনি সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কাঁঠালিয়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টির চেয়ারম্যান পলাতক থাকলেও শৌলজালিয়ার চেয়ারম্যান রিপন স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সমঝোতায় দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তবে আজকের হামলার পর তার অবস্থান নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনা টহল জোরদার করেছে। আজ ৩ জুলাই রোজ বৃহস্পতিবার সকালে পরপর ৪ বার ইউপি সদস্য ও বিএনপির নেতা সৈয়দ আব্দুল কাইয়ুম পরিষদে ভিজিডির চাউল দিতে আসলে পরিষদের সচিবের সামনে বসা অবস্থায় হঠাৎ ইউপি সদস্য মোঃ শামসুল আলম তার দলবল নিয়ে নিজে কাইযুমকে চর থাপ্পর মারতে মারতে পরিষদ থেকে বের করে দিয়েছেন বলে ইউপি সদস্য কাইয়ুম জানান, তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় কাঠালিয়া থানা ও সেনাবাহিনীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের অন্য মেম্বারেরা আলমের ভয়ে রয়েছেন। এবং অনেক ইউপি সদস্যরা পরিষদে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : ইসমাইল হোসেন সৌরভ,
নির্বাহী সম্পাদক:মো:শাহাবুদ্দিন খান
বার্তা প্রধান : মোহাম্মদ শাহ্ কামাল,
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত