তপন দাস, নীলফামারী
নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর থানাধীন চাঁদনগরে শিক্ষিকার বাড়িতে পরিকল্পিত ও নির্মম (ক্লু-লেস) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন এবং সাবেক সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার।
নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর থানাধীন একটি বাড়িতে গৃহপরিচারিকা শামসুন নেহার (৬০) হত্যাকাণ্ড ও লুণ্ঠনের ঘটনাটি ছিল এক নির্মম ও চাঞ্চল্যকর অপরাধ। নিহত শামসুন নেহার দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় এক শিক্ষিকার বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০২৫ সালের ১ জুলাই, বেলা আনুমানিক ১১.৪৫ ঘটিকায় দুর্বৃত্ত তার বাসায় প্রবেশ করে নির্মমভাবে মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে এবং ঘর থেকে একটি ৩২ ইঞ্চি স্যামসাং এলইডি টিভি ও একটি পুরাতন ল্যাপটপ লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে নীলফামারী জেলার পুলিশ সুপার মহোদয়ের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) জনাব এ.কে.এম. ওহিদুন্নবী এর নেতৃত্বে একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়। আধুনিক প্রযুক্তি, গোয়েন্দা তথ্য ও ঘটনাস্থলের সিসি টিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে এক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়, যিনি পূর্বে একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে ২০২০ সালে মুক্তি পেয়েছিলেন এবং ঘটনাস্থলের আশপাশে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ২৬ জুলাই ২০২৫ খ্রিঃ তারিখ রাতে সন্দেহভাজন আসামি মোঃ শামীম বেগ (৪৫), কে তার নিজ বাসভবন থেকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ রিমান্ডে এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে, মহরমের মিলাদে তবারক দিবে মর্মে শিক্ষিকার বাসায় প্রবেশ করে প্রথমে গৃহপরিচারিকা শামসুন নেহার এর মাথায় আঘাত করে, পরে মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘর থেকে একটি টিভি ও একটি ল্যাপটপ চুরি করে নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যমতে অভিযান চালিয়ে সৈয়দপুরের গোলাহাট বাজার এলাকার একটি দোকান থেকে ৩২ ইঞ্চি স্যামসাং এলইডি টিভি এবং একটি পুরাতন স্যামসাং ল্যাপটপ জব্দ তালিকা মোতাবেক উদ্ধার করা হয়। আসামি স্বীকার করে, সে উক্ত দুটি জিনিস মাত্র ৬০০ টাকায় বিক্রি করে।
এই মামলায় দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামি সনাক্ত, গ্রেফতার ও আলামত উদ্ধার নীলফামারী জেলা পুলিশের তৎপরতা, পেশাদারিত্ব ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর তদন্ত কার্যক্রমের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
জনসাধারণের সহযোগিতা ও আস্থার ভিত্তিতেই এ ধরনের অপরাধ দমন সম্ভব হচ্ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : ইসমাইল হোসেন সৌরভ,
নির্বাহী সম্পাদক:মো:শাহাবুদ্দিন খান
বার্তা প্রধান : মোহাম্মদ শাহ্ কামাল,
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত