নিজস্ব প্রতিবেদক
রংপুর শহরে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে মাহামুদুল হাসান মুন্না হত্যা মামালার চার্জশীট থেকে সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদসহ কিছু আওয়ামীলীগ নেতাদের নাম বাদ না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তদন্ত কর্মকর্তাকে বদলী করালেন রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানার অফিসার-ইন-চার্জ আতাউর রহমান। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান জানান পুলিশ বিভাগের অনলাইনে চার্জশীট জমা দিলেও আওয়ামীলীগ নেতাদের বাঁচাতে ওসি আতাউর রহমান তাতে স্বাক্ষর না করে আবারও নতুন করে চার্জশীট দিতে দোঁড়ঝাপ শুরু করেছেন।
উল্লেখ্য যে, ৫ আগর্ষ্ট ২০২৪ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নিহত হন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মাহমুদুল হাসান মুন্না। ৩১ আগস্ট কোতয়ালী থানায় ১২৮ আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীর নামে হত্যা মামলা (জি আর নং ৪০২) করেন মৃত মুন্নার পিতা মোঃ আব্দুল মজিদ। এই মামালার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা সেলিম বদলী হওয়ার পরে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পাই আমি এসআই মোস্তাফিজার রহমান। উর্ধ্বতন কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশে তদন্ত করে আমি ৬ এপ্রিল ২০২৫ চার্জশীট (নং ১০৬/০৬-০৫-২৫) পুলিশ বিভাগের অনলাইনে দাখিল করলে ক্ষিপ্ত হন ওসি আতাউর রহমান।
মোস্তাফিজার রহমান আর ও বলেন, মামলা থেকে আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম বাদ না দেওয়ার জন্য ওসি আতাউর রহমান অভিযোগপত্রটি বাতিল করার জন্য আমাকপ চাপ দেয়। ওসির মন মতো চার্জশিট দেইনি বলে তেঁড়ে আসেন এবং তদবীর করে আমাকে বদলী করে দেন।
ছাত্র হত্যাকারী আওয়ামী লীগ নেতাদের বাঁচানোর তাগিদে ওসি আতাউর রহমান অভিযোগপত্রটি বাতিল করার জন্য পুলিশ সদর দপ্তরসহ সকল জায়গায় জোর তদবির চালাচ্ছেন। ওসি আতাউর রহমান ৯২ জন নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামীলীগ নেতাদের নামে দেওয়া অভিযোগপত্র বাতিল করার জন্য উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে জোর তদবির চালাচ্ছেন। আমি চার্জশিট ফাইনাল করে পুলিশ বিভাগের অনলাইনে জমা দেওয়ার পর তা ওসি এবং ওসি (তদন্ত) স্বাক্ষর করলে তা আদলতে জমা দেওয়া হয়। তদন্তে তদন্ত কর্মকর্তা যাদের নাম পাবেন সেইসব নামই চার্জশীটে থাকে, ওসি শুধু তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে স্বাক্ষর করেন আদালতে পাঠানোর জন্য।
২৯ এপ্রিল ওসির কাছে সে স্বাক্ষর করাতে যান তদন্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজার। ওসি স্বাক্ষর দিতে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। বাধ্য হয়ে তদন্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজার ৬ মে অনলাইনে চার্জশীট সাবমিট কনফার্ম করে মামলার বাদীকে কপি দিয়ে তা ওসি আতাউরের নিকট জমা দিয়ে আসেন।
সিনিয়র পুলিশ অফিসারদের নির্দেশ থাকার পরও ওসির পছন্দ অনুযায়ী চার্জশীটে নাম বাদ না দেওয়ায় ও এজহারবিহীন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে নতুনভাবে সরাসরি চার্জশীটে নাম অর্ন্তভুক্ত না করায় কৌশলে তাকে বদলী করে দেন।
এদিকে রংপুর কোতয়ালী থানার ওসি আতাউর রহমান এর কাছে নতুন করে তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলাটির তদন্ত আমার কাছে সঠিক মনে হচ্ছেনা। তাই তদন্ত রিপোর্টটি কোর্টে জমা না দিয়ে আমি নিজেই নতুন করে তদন্ত করতেছি। মামলার তদন্তকারী এসআই মোস্তাফিজার রহমান সংবাদকর্মীদের মিথ্যা তথ্য দিয়েছে।