সোহাগ হাওলাদার:
ঢাকা মহানগর উত্তরে বিএনপির রাজনীতিতে দুই নেতার নাম এখন সর্বাধিক আলোচিত মো: আমিনুল হক ও এস সিদ্দিক সাজু। তাঁদের ত্যাগ, সাহসিকতা ও মানবিক নেতৃত্বের কারণে তাঁরা শুধু দলের ভেতরেই নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।
দলের দুঃসময়ে রাজপথে সাহসী ভূমিকা পালন করা, বিপদে-আপদে কর্মীদের পাশে থাকা এবং সর্বস্তরের মানুষের সুখ-দুঃখে অংশ নেওয়া—এই গুণগুলো তাঁদেরকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করে তুলেছে।
আমিনুল হক: ত্যাগী ও সহমর্মী নেতৃত্বের প্রতীক
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক বিএনপির রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একনিষ্ঠভাবে যুক্ত।
দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, ত্যাগ-তিতিক্ষা, এবং দলের প্রতি অবিচল নিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। আমিনুল হক সবসময় সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তাদের দুঃখ-দুর্দশায় সহমর্মিতা দেখিয়েছেন এবং দলীয় নেতাকর্মীদের সুখে-দুঃখে ছিলেন এক নিবেদিত সংগঠকের ভূমিকায়। তিনি শুধু রাজনৈতিক আন্দোলনের কৌশলী নেতা নন, বরং একজন মানবিক ব্যক্তি হিসেবেও পরিচিত। যখনই কোনো সাধারণ মানুষ বিপদে পড়ে, তিনি তাদের পাশে দাঁড়ান নিঃস্বার্থভাবে।
অভাবী মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে খাদ্য, চিকিৎসা বা আইনি সহায়তা দিয়ে তিনি বহুবার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। দলের কোনো কর্মী যদি মামলায় পড়ে বা নির্যাতনের শিকার হয়, আমিনুল হক ছুটে যান প্রথমেই। তাঁর অফিসে যেমন রাজনৈতিক আলোচনা চলে, তেমনি চলে দরিদ্র মানুষের সাহায্যের ব্যবস্থাপত্রও।
২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান আমিনুল হক। এর আগে তিনি একই ইউনিটে দুইবার সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্ব পালনে তার দক্ষতা, নিষ্ঠা এবং ত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ দল তাকে মহানগরের সর্বোচ্চ পদে বসায়। এর পাশাপাশি তিনি কেন্দ্রীয় কমিটিতে ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
ক্রীড়া বিভাগকে সক্রিয় ও তরুণমুখী করার লক্ষ্যে আমিনুল হক একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। ২০২৫ সালে বরিশাল বিভাগীয় পর্যায়ে “আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট”-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন,
“একটি সুস্থ জাতি গঠনে ক্রীড়াঙ্গনের ভিত্তি হোক বাংলাদেশ”
তার নেতৃত্বে ক্রীড়াক্ষেত্রে রাজনীতি নয়, বরং প্রতিভা ও প্রেরণাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ২০২৫ সালের এপ্রিলে তিনি রাজধানীর একটি হাসপাতালে আটটি হুইলচেয়ার উপহার দেন। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত রিকশাচালকদের আর্থিক সহায়তা ও রিকশা বিতরণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন একাধিকবার ।
মাদকবিরোধী অবস্থান ও সামাজিক উন্নয়ন চিন্তা
২০২৫ সালের জুন মাসে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবসে আয়োজিত এক সভায় তিনি বলেন,
“বিএনপি মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করছে। যুবসমাজকে ক্রীড়া, শিক্ষা ও নৈতিকতায় ফেরাতে হবে।”
তার চিন্তাধারা শুধু রাজনীতির গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সমাজ, রাষ্ট্র ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিয়ে তার গভীর ভাবনা রয়েছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের দীর্ঘ ১৭ বছরে অসংখ্য মিথ্যা মামলায় একাধিক বার গ্রেফতার ও কারাবরণসহ ব্যাপক হয়রানির শিকার হন জনপ্রিয় এই রাজনীতিবিদ আমিনুল হক।
এস সিদ্দিক সাজু: তৃণমূলের প্রিয়মুখ
সাবেক সংসদ সদস্য এস এ খালেক এর সু-পুত্র এস সিদ্দিক সাজু ঢাকা মহানগর উত্তরের একজন পরিচ্ছন্ন, পরিশ্রমী ও নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিক। তাঁর নেতৃত্বের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো—তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক রাখা এবং তাদের সুখ-দুঃখে পাশে থাকা।
তিনি প্রতিটি এলাকায় ঘুরে ঘুরে সাধারণ মানুষের খোঁজখবর রাখেন, বিশেষ করে যারা আর্থিক ও সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া। কেউ অসুস্থ থাকলে খোঁজ নেন, প্রয়োজনে রোগিকে হাসপাতালে পাঠানো থেকে শুরু করে যাবতীয় খরচ বহন করেন। গোপনে গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার খরচ বহন করার দৃষ্টান্ত রয়েছে বর্ষিয়ান এই রাজনীতিবিদের।
দলের আন্দোলন-সংগ্রামে যেমন তিনি রাজপথে ছিলেন, তেমনি দলীয় কর্মীদের মনোবল ধরে রাখতে তিনি নীরবে-নিভৃতে কাজ করে গেছেন। তাঁর এই নিঃস্বার্থতা ও আন্তরিকতা তাঁকে মহানগরের তরুণ ও প্রবীণ কর্মীদের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছে। বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলে অন্তত ৮২টি মিথ্যা মামলার শিকার হন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ এস এ সিদ্দিক সাজু।
জনগণের আস্থা, দলের ভরসা
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপির মহানগর উত্তরের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে এই দুই নেতার অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। দল এবং জনগণের সঙ্গে তাঁদের যে আন্তরিক ও মানবিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, তা রাজনীতিতে এক শক্ত ভিত হিসেবে কাজ করবে। আগামীতে ঢাকা ১৪ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে তাকেই দেখতে চান এলাকার সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় এক প্রবীণ বিএনপি নেতা বলেন,
“আমিনুল হক আর সাজু ভাই শুধু নেতা নন, তারা এই এলাকার মানুষের আত্মার আত্মীয়। দলের কঠিন সময়ে যেভাবে পাশে থেকেছেন, তেমন মানবিক নেতা এখন দুর্লভ।