
শরিফা বেগম শিউলী,স্টাফ রিপোর্টার
রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন।
শনিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হাসপাতালের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা, চিকিৎসকবৃন্দ ও বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিগণ।
সংবাদ সম্মেলনে রংপুর কমিউনিটি হাসপাতালের এম. ডি নাজমুল হাসান সরকার লিখিত বক্তব্য পাঠ করে জানান, গত ৬ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার বামুনিয়া এলাকার ৫৫ বছর বয়সী মোকসেদুল ইসলাম নামের এক রোগীর মৃত্যু পরবর্তী কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
বক্তব্যে জানানো হয়, রোগী মোকসেদুল ইসলাম ৫ নভেম্বর বুকের ব্যথা ও হৃদরোগজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে রংপুর মেডিকেল কলেজের কার্ডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আবু জাহিদ বসুনিয়া-এর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। রোগী ও তাঁর স্বজনদের সম্মতিতে করোনারি এনজিওগ্রাম করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
পরবর্তীতে ৬ নভেম্বর বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে ডা. আবু জাহিদ বসুনিয়ার নেতৃত্বে এনজিওগ্রাম ও স্টেন্ট স্থাপন (রিং বসানো) সফলভাবে সম্পন্ন হয়। তবে সিসিইউতে নেওয়ার পথে রোগীর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। তাৎক্ষণিকভাবে ক্যাথল্যাব টিম সিপিআর (CPR) ও অন্যান্য জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করে রোগীকে আইসিইউ (ICU)-তে স্থানান্তর করে।
আইসিইউতে নেওয়ার পর রোগীর অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হয়। এমনকি তাঁর ছেলে উপস্থিত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতেও সক্ষম হন। কিন্তু প্রায় চার ঘণ্টা পর রাত ৮টার দিকে রোগী দ্বিতীয়বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত হন, এবং সর্বাত্মক চেষ্টা সত্ত্বেও রাত ৮টা ৩০ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়।
সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেন, রোগীর মৃত্যু পরবর্তী স্বজনরা উত্তেজিত আচরণ করতে থাকেন। তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করা হলেও পরিস্থিতি কিছুটা বিশৃঙ্খল হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে বলেন,
আমরা চিকিৎসা বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে রোগীর প্রতি যত্নবান ছিলাম। দুর্ভাগ্যজনকভাবে চিকিৎসা সেবা সত্ত্বেও তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।”
হাসপাতাল প্রশাসন ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও উন্নত যোগাযোগ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার আশ্বাস দেন।