আশরাফুল আলম সরকার,বিশেষ প্রতিনিধি
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ভেঙে পড়েছে মাটির ঘরের দেয়াল। অর্থের অভাবে মেরামত করতে পারছেন না বসবাসের একমাত্র ঘরটি। ছেলে মেয়ে না থাকায় অন্যের বারান্দায় রাত কাটাচ্ছেন এক অসহায় বৃদ্ধ দম্পতি।
উপজেলার শিবনগর ইউপির দক্ষিণ বাসুদেবপুর পুরাতন বন্দর এলাকার সুনির্মল চন্দ্র সামন্ত (৭৫) ও রিনা রানী সামন্তের (৬০) বসবাসের একমাত্র মাটির ঘরের দেয়াল গত ২৫ সেপ্টেম্বর ধ্বসে পড়ে গেছে। অন্যপাশের দেয়ালের অবস্থাও নড়বড়ে। যে কোন সময় পড়ে যেতে পারে। তাই জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়ে ছোট ভাই সুমল চন্দ্রের বারান্দায় রাত কাটাচ্ছেন সুনির্মল সামন্ত। অর্থের অভাবে নতুন ঘর তৈরি বা মেরামত করতে পারছেন না। ছেলে মেয়ে না থাকায় এবং বয়সের ভারে জীর্ণশীর্ন সুনির্মলের নিজে পরিশ্রম করে মাটির ঘর তৈরি করার সামর্থ্যও নেই। এক রকম অসহায় হয়েই অন্যের বারান্দায় রাত কাটাচ্ছেন এ দম্পতি।
সরেজমিনে বৃদ্ধ সুনির্মলের বাড়িতে দেখা যায়, মাটির একমাত্র ঘরটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পড়ে যাওয়া দেয়ালটি এর আগেও কয়েকবার মেরামত করা হয়ে ছিলো। ঘরে আসবাবপত্র বলতে একটি খাট ছাড়া আর কিছুই নেই। কাপর চোপর রেখেছেন অন্যের বারান্দায়। পেশা হিসেবে বাঁশ বেত কুটির শিল্পের কাজ করলেও বয়সের ভারে এখন তাও ঠিকমত করতে পারেন না। কোন রকম খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তাদের।
বৃদ্ধ সুনির্মল চন্দ্র সামন্ত বলেন, তিনটা বেটির(মেয়ের) বিয়া হয়া গেইছে অনেক আগে। কোন ব্যাটা(ছেলে) ছোল(সন্তান) নাই। ভারী বিষ্টিত দেওয়ালটা ভাঙ্গি পড়ল। টিন দিয়াও জল পড়ে। ঠিক করিম টাকা নাই। গাওত (শরীরে) জোর পাওনা যে নিজে ঠিক করিম। হামার(আমাদের) ধরার(সুপারিশ করার) মতন কেউ নাই বাবা। ঘরটা কেউ ঠিক করি দিলে খুব উপকার হল হয়।
বৃদ্ধা রিনা রানী সামন্ত বলেন, মানষের(মানুষের) চালিতে (বারান্দায়) দু এক দিন থাকা যায়। এই ঘর ঠিক করার ক্ষমতা হামার নাই বাবা। কত দিন এই ভাবে মানষের চালিত থাকবা হবে কে জানে!
কারো কাছে হাত না পাতলেও এখন বাধ্য হয়ে সমাজের বিত্তবান, জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সহায়তা কামনা করছেন এ অসহায় দম্পতি।