এম জাফরান হারুন, পটুয়াখালী::
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পরপরই পটুয়াখালীর বাউফলে ১৫ বছর পর উজ্জীবিত হয়ে মাঠ দখলে নিয়েছে বিএনপি- জামায়াত নেতারা সহ চরমোনাইয়ের নেতারা। নিষ্ক্রিয় ও আত্মগোপনে রয়েছে উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন।
সূ্ত্র জানায়, গত ৫ই আগস্ট তীব্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে ওইদিন থেকে বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ প্রভাবশালী নেতা ও কর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। এমনকি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্দেশনার পরেও ১৫ আগস্টকে ঘিরে এখানে পদচারণা দেখা যায়নি নেতাকর্মীদের। তাদের দলীয় কার্যালয়ে ছিল না কারও উপস্থিতি। যদিও দলীয় কার্যালয় আগুন দিয়ে পুড়ে ধ্বংস করা হয়েছে।
উপজেলাবাসীরা জানায়, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাঠে না থাকলেও এখানে রাজপথ দখলে রয়েছে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। আওয়মীলীগ সরকার পতনে আনন্দ মিছিল থেকে শুরু করে দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি করে গণহত্যা ও গুম এর অভিযোগে শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির পাশাপাশি প্রায় প্রতিদিনই স্থানীয়ভাবেও বিক্ষোভ থেকে শুরু করে সমাবেশ, অবস্থান কর্মসূচি পালনসহ কোনো না কোনো কর্মসূচি নিয়ে উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিক দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, তাতী দল সহ জামাত ও চরমোনাই দল মিছিল, বিক্ষোভ এর মধ্য দিয়ে মাঠে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। এখানে এমনিতেই কোনো ট্রাফিক পুলিশি ব্যবস্থা নেই। শুরুতে কোনো পুলিশকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তারা না থাকায় জাতীয় পতাকা নিয়ে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা পরিষদ গেটের সামনে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা ও সন্ধ্যার পরে চরমোনাইয়ের একটা টিম দায়িত্ব পালন করে। নৈতিক দায়িত্ব থেকে বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী, সহ একাধিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ছাত্র-ছাত্রী যানজটমুক্ত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতারা বলেন, ফাসিবাদী আওয়ামী সরকারের ১৬ বছরের দুঃশাসন থেকে দেশ মুক্ত হয়েছে। এই ২য় স্বাধীনতা ২০২৪ ছিনিয়ে নিতে নানা তালবাহানা করছে আওয়ামী লীগ। আমরা তাদের নীল নকশা বাস্তবায়ন হতে দেব না। তাই সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছি। আমরা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে সারা দেশে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে গণহত্যার বিচার চাই।”
এদিকে নেতারা আরও বলেন, “রংপুরের আবু সাঈদের গুলির সামনে বুক পেতে দেওয়ার দৃশ্য এখনও ভুলতে ও ঘুমাতে পারি না। আওয়ামী লীগের কাছ থেকে বাংলাদেশ নতুন করে আবার স্বাধীন হলো। আবু সাঈদ থেকে শুরু করে গুলিতে নিহত বাউফলের সকল শহীদের সহ সব হত্যার বিচার চাই আমরা।