মোঃ আশরাফুল ইসলাম,শ্রীপুর গাজীপুর,
গাজীপুরের শ্রীপুরে বনভূমিতে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যৌথ অভিযান পরিচালনা করছে বন বিভাগ। এসব বনভূমিতে গড়ে ওঠা শতাধিক বসতবাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ৭ একর বনভূমি।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের রাজেন্দ্র রেঞ্জের কাফিলাতলী ও ইজ্জতপুর গ্রামে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য সহযোগিতা করে। এ ছাড়াও একটি চিকিৎসক দল ছিলেন এ অভিযানে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চারটি এক্সকাভেটর (ভেকু) দিয়ে একের পর এক আধা পাকা ও টিনশেড বসতবাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। অনেক বসতবাড়ির আসবাবপত্র স্থাপনার নিচে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। কিছু কিছু বসত ঘর থেকে আসবাবপত্র সরিয়ে নিচ্ছে দৌড়াদৌড়ি করছেন পরিবারের সদস্যরা। এ সময় মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে অনেককেই কান্নাকাটি করে অজ্ঞান হয়ে যেতে দেখা গেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য দাঁড়িয়ে নিরাপত্তা দিতেও দেখা যায়। দূর থেকে শত শত মানুষ দূরে দাঁড়িয়ে এসব দৃশ্য দেখছেন।
ঢাকা বিভাগীয় সহকারী বনসংরক্ষক এসিএফ শামসুল আরিফীন বলেন, গত কয়েক মাসে রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জের রাজেন্দ্রপুর পূর্ববিটে বনভূমির বিশাল একটি অংশ জবরদখল করে প্রায় শতাধিক বসতবাড়ি অবৈধভাবে গড়ে তুলে। বনভূমিতে থাকা শাল গজারিসহ বিভিন্ন বৃক্ষ নিধন করে দখলকারীরা। স্থানীয় বনকর্মীরা বাধা দিতে গেলে গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে বনকর্মীদের মারধর করে লাঞ্ছিত করে। দেশীয় অস্ত্র দিয়ে অনেকেই আঘাত করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে রাতারাতি কয়েক মাসে শতাধিক বসতবাড়ি গড়ে তুলে।
এই কর্মকর্তা বলেন, এরপর থেকে বনভূমি জবরদখল মুক্ত করতে বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে বিষয়গুলো উপস্থাপন করি। এর ধারাবাহিকতায় আজ সকাল থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে যৌথবাহিনীর মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে বনভূমি জবরদখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে বনভূমি জবরদখল মুক্ত করা হয়েছে।
উদ্ধার অভিযানে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য অভিযানে সহযোগিতা করছেন। অভিযানে বনভূমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা শতাধিক বসতবাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জের কাফিলাতলী মৌজার সিএস ২১ দাগের ২০ কোটি টাকা মূল্যের ৭ একর বনভূমি উদ্ধার করা হয়েছে, যুক্ত করেন এসিএফ শামসুল আরিফীন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজিব আহমেদ বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে বন আইনের ৬৬ ধারায় যৌথ অভিযানে পরিচালনা শুরু হয়েছে। উদ্ধার অভিযানে এখন পর্যন্ত কোনো বাধার সম্মুখীন হয়নি। আমাদের সঙ্গে সেনাবাহিনী, র্যাব-১ শ্রীপুর থানা-পুলিশের সদস্য এবং আনসার সদস্য রয়েছে। অভিযান পরিচালনার পূর্বে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য দুই সপ্তাহ মাইকিং হয়েছে। তবুও স্থানীয়রা অবৈধ স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেয়নি। এ কারণে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে বনভূমি উদ্ধার করা হয়েছে।