1. info@www.dailybdcrimetimes.com : দৈনিক বিডি ক্রাইম টাইমস.কম :
রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন
Title :
অনলাইন প্রতারণার ফাঁদে বাংলাদেশ মিরপুর থেকে আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল হুদা আটক ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় প্রায়ত ডাঃ প্রণব কান্তির স্মৃতি চারন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত দূর্নীতির শ্রেষ্ঠ আখড়া এনটিআরসিএ’র রাহু গ্রাস থেকে মুক্তির পথ কি ? আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী ফুলছড়ি উপজেলা হেডকোয়ার্টার কালিরবাজার গরু ছাগল ও মহিষের হাট আপন বড় ভাইয়ের হাতে দিন-দুপুরে ছোট ভাই খুন চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতে সেনাবাহিনীর তাৎক্ষণিক সহায়তা রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তীতে সরকারি বাঙলা কলেজে সাহিত্য-সংস্কৃতির বর্ণাঢ্য উৎসব নীল রঙে সজ্জিত করা হবে নীলফামারী পৌরসভাকে : জেলা প্রশাসক খুলনার কয়রায় গলায় শিকল দিয়ে তালা বাধা অবস্থায় বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্মাণকাজ ফেলে উধাও ঠিকাদার খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫
  • ৮৫ Time View

মোঃ রেজাউল ইসলাম লিটন, নীলফামারী:

সৈয়দপুরে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ ফেলে আওয়ামী ঠিকাদার পালিয়ে যাওয়ায় খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করছে শিক্ষার্থীরা। এতে প্রতিষ্ঠানের অফিসের কাজকর্মসহ পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটলেও নজর নেই সংশ্লিষ্টদের।

দেড় বছরেই শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা ৫ বছরেও হয়নি। ঠিকাদারের নানা অজুহাতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর কাজ শেষ করতে তিন দফা মেয়াদ বাড়ালেও তা শেষ হয়নি। ফলে ভবনের ক্লাস রুম, শিক্ষকদের অফিস রুমসহ অন্যান্য কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হচ্ছে খোলা মাঠে। কবে নাগাদ এ কাজ শেষ হবে তা বলতে পারছে না কেউ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের কুমারগাড়ী দাখিল মাদ্রাসায়।

জানা গেছে, ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের জুন মাসে। নির্মাণের পর মাদরাসা কর্তৃপক্ষের কাছে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে হস্তান্তর করা হবে। দেড় বছর মেয়াদের কাজ ষাট মাস পেরিয়ে ৭৫ ভাগ কাজ শেষ হয়। এরই মধ্যে কাজের চুক্তি মূল্যের ৮০ ভাগ বিল তুলে নেয় ঠিকাদার। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পালিয়ে গেলে ঠিকাদারও লাপাত্তা হন। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় ওই মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। লাঘবে একাধিকবার শিক্ষা অফিস ও প্রকৌশল অধিদপ্তরকে লিখিতভাবে অবগত করেন মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট। এতে আশ্বাস মিললেও বাস্তবায়ন হয় না। শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে পাঠ গ্রহণ করতে হচ্ছে। নির্মাণাধীন ভবনের দুই পাশে রুটিন করে পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষকগণ। আর ব্যবহার না হওয়ায় নির্মাণাধীন ভবন ভূতের বাড়িতে পরিণত হয়েছে। স্কুল বন্ধ কিংবা রাতের বেলায় ওই ভবনে অবাধে চলে অসামাজিক কাজ।

ওই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত ওই মাদ্রাসায় বর্তমানে ২৮৫ জন ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়ন করছে। শিক্ষক-কর্মচারী মিলে রয়েছেন ১৬ জন। ওই মাদ্রাসায় শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে পাঠদানে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছিল। সমাধানে ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল দরপত্র আহ্বান করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর নীলফামারী। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ‘নির্বাচিত বেসরকারি মাদ্রাসাসমূহের উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় চারতলা ভবন নির্মাণে ৩ কোটি ২৬ লাখ ৫ হাজার ৫১৩ টাকা ১৯ পয়সা বরাদ্দ দেওয়া হয়। দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মোহাম্মদ শাহ আলমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মা এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড জিন্নাত আলী জিন্নাহ (জেভি) কাজটি পান।

পরে নিয়ম মেনে শুরু হয় কাজ। মাদ্রাসার জরাজীর্ণ ভবনের ৬টি শ্রেণিকক্ষ ভাঙা হয়। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর কাজ শেষের পর হস্তান্তরের নিয়ম ছিল। তবে সময় অনুযায়ী কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে ২০২১ সাল থেকে ৩ বছর কাজ বন্ধ রাখলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ২০২৩ সালে পুনরায় কাজ শুরু করে ওই আওয়ামী ঠিকাদার। তবে তিন মাস শেষে আবারও কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এই কাজ শেষ না করেই বরাদ্দ মূল্য থেকে ৮০ ভাগ টাকা তথা ১ কোটি ৮৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা তুলে নেয় ঠিকাদার। এদিকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ওই ঠিকাদারকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এতে বিপাকে পড়েন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর।

সরেজমিনে দেখা যায়, নির্মাণাধীন চারতলা ওই বহুতল ভবনের কাজ বর্তমানে বন্ধ। বিক্ষিপ্তভাবে ফেলে রাখা হয়েছে নির্মাণ সামগ্রী। এতে শ্রেণিকক্ষ সংকটে পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তারা বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠে বসিয়ে পাঠদান করাচ্ছেন। এর পাশে পুরনো টিনশেড জরাজীর্ণ ভবন রয়েছে। সেটাও সংস্কার না হওয়ায় গ্রীষ্মকালে ও বৃষ্টিস্নাত দিনে পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মনি আক্তার, রবিউল আলম, লাবনী আক্তার, আমির হামজা নামে শিক্ষার্থীরা জানায়, নির্মাণাধীন চারতলা ওই ভবনের কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। এতে শ্রেণিকক্ষ সংকটে পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে হচ্ছে। প্রতিকূল আবহাওয়ায় পড়াশোনা ব্যাহত হয়। এ নিয়ে শিক্ষকদের বললেও কোনো কাজ হয় না। বর্তমানে মাদ্রাসার শ্রেণিকক্ষ সংকট নিয়ে সকল শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

আবুল কালাম আজাদ, আমিনুল ইসলাম ও রিনা আক্তার নামে শিক্ষকগণ বলেন, সংকট হলেও পাঠদান অব্যাহত রয়েছে। জরাজীর্ণ পুরাতন ভবনে গাদাগাদি করে বসিয়ে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। তারপরেও সংকুলান না হওয়ায় খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নিতে হচ্ছে। মাদ্রাসা সুপার মোছা. ফেরদৌসী বেগম বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার তাগিদ দিয়েছি। তারপরেও তারা নির্মাণকাজ শেষ করছে না। বিষয়টি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর নীলফামারীর প্রধান প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে। তারপরেও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। এতে ভবনটি মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর নীলফামারীর নির্বাহী প্রকৌশলী হাজেরুল ইসলাম বলেন, ‘এ পর্যন্ত ভবনটির ৭৫ শতাংশ কাজ হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় ওই ঠিকাদারকে আর্থিক জরিমানাও করা হয়েছে। তিন বার মেয়াদ বাড়ানো হলেও বর্ধিত সময়েও কাজ শেষ হয়নি। যোগাযোগের চেষ্টা করেও খোঁজ মিলছে না ঠিকাদারের। তবে আগামী জুনের মধ্যে কাজ শেষ না হলে চুক্তি বাতিল করে অবশিষ্ট কাজের জন্য আবার দরপত্র দিয়ে কাজটি শেষ করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved
প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং