নিজস্ব প্রতিবেদক:
মাঠ প্রশাসনে একের পর এক কেলেঙ্কারিতে জড়াচ্ছেন কর্মকর্তারা। তাদের অনৈতিক আচরণ কিংবা নারীঘটিত কেলেঙ্কারি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাশাপাশি গণমাধ্যমেও প্রায়ই সংবাদ দেখা যায়। ডিসিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তো অহরহই পাওয়া যায়।
এর বাইরে গত কয়েক বছরে নারী কেলেঙ্কারি, সাংবাদিক নির্যাতনসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজে তারা নিজেকে জড়িয়েছেন।
এছাড়াও বেশ কয়েকজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু এসব ঘটনায় ওএসডি ছাড়া নজির সৃষ্টি হওয়ার মতো শাস্তি দেয়নি সরকার। তবে বিভাগীয় মামলায় তারা যে খুব বেশি শাস্তি পেয়েছেন, এমন কোনো রেকর্ড নেই।
বছর কয়েক আগে জামালপুরের সাবেক ডিসি আহমেদ কবীর নিজ অফিসেই হেরেম খানা খুলে বসেছিলেন। ধরা খেয়ে ওএসডি হয়েছিল। তিনি এখন যুগ্ন সচিব।
বরগুনার সাবেক ডিসি হাবিবুর রহমান, খালি বাসায় নারী নিয়ে ফুর্তি করে ধরা খায়, পরদিন অসুস্থতার ভান করে হেলিকপ্টারে চড়ে বরগুনা থেকে পালিয়ে যায়। তার কি শাস্তি হয়েছিল জানিনা, তবে উনি পদোন্নতি পেয়ে এখন যুগ্ন সচিব।
দিনাজপুরের সাবেক ডিসি মাহমুদুল আলমের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারিতে জড়ানোর অভিযোগ ওঠে। এক ভিডিও বার্তায় ডিসির সঙ্গে নিজের অনৈতিক সম্পর্কের তথ্য ফাঁস করেন এক নারী।
জুনিয়র নারী সহকর্মীকে মেসেঞ্জারে অশোভন আচর ও খারাপ প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে নাটোরের সাবেক ডিসি গোলামুর রহমানকে ওএসডি করে জনপ্রশাসন। পরে তাকে বড় কোনো শাস্তি না দিয়ে একটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক করা হয়।
নেত্রকোনার সাবেক ডিসি মঈনউল ইসলামের বিরুদ্ধে তার কার্যালয়ের এক নারী কর্মীর সঙ্গে অনৈতিকতার অভিযোগ ওঠে। আর কি শাস্তি হয়েছে জানা নেই।
অন্যের স্ত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে বাগেরহাটের সাবেক ডিসি এ এন এম ফয়জুল হককে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে তাকে আর কোনো শাস্তির মুখে পড়তে হয়নি। বরং সময়মতো তিনি পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম সচিবও হয়েছেন।
সিভিল প্রশাসনে শৃঙ্খলা ভঙ্গের কোন শাস্তি হয় না, তারা টাকা-পয়সা দিয়ে সব কিছু মুহূর্তেই ম্যানেজ করে ফেলে। দুই দিন আগে শরিয়তপুরের ডিসি আশরাফ উদ্দিনের নারী কেলেঙ্কারির ভিডিও দেখলাম। তিনি কতটা নির্লজ্জ বেহায়া হলে এত কিছুর পরেও পরকিয়া প্রেমিকার প্রেমে অন্ধ হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কান্নাকাটি করছেন। আরেক ছবিতে দেখা যাচ্ছে একই অফিসের নারী জুনিয়র কর্মকর্তাকের চুম্বন করছেন। সেই নারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এখনো কেন ব্যবস্থা নেয়নি সরকার। অবশ্যই ওই নারীও অপরাধী।
এরা ছাত্রজীবন শুধু বই মুখস্ত করেই গেছে। সাধারণ জ্ঞান বলতে কিছুই অর্জন করেনি। এরা প্রজাতন্ত্রী কর্মচারী হয়েও মালিক জনগণের সঙ্গে জমিদারি ভাব নেয়।
ভদ্রলোকের কিছু হবে না। লোক দেখানো তদন্ত করে অন্যত্র পদায়ন করা হবে এবং পদোন্নতি পাবেন। সরকারি উচিত এই সমস্ত বিতর্কিত বেপরোয়া কর্মকর্তাদের ঝেটিয়ে চাকরি থেকে বিদায় করে দেওয়া।
এভাবেই চলে বিসিএস ক্যাডার অফিসারদের চাকরি। শাস্তি হয় না বলেই তারা বেপরোয়া হয়ে ওঠে।