স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়নের কচুয়া বাজারে সরকারি খালের জমি দখল করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। অথচ স্থানীয়রা বাঁধা দিলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, বরং কর্মকর্তাদের নিষ্ক্রিয়তা ও রহস্যজনক নীরবতা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কচুয়া বাজারের ১ নম্বর খতিয়ানের ১৬১৫ নম্বর দাগে একটি সরকারি খাল রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে খালটি দখলের পাঁয়তারা চললেও সম্প্রতি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ হানিফ খান খালের জায়গায় দোকানঘর নির্মাণ শুরু করেন। স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং বিএনপি নেতারা এতে বাঁধা দিলেও তিনি নির্মাণ কাজ চালিয়ে যান। ঘটনার পর স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দপ্তরে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। ইউএনও জহিরুল ইসলামের নির্দেশে কাঁঠালিয়া ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার জসিম উদ্দিন এবং শৌলজালিয়া ইউনিয়নের তহসিলদার মো. মুসা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ফিরে আসেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই দুই কর্মকর্তা মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে অভিযুক্তের পক্ষ নিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেন। পরে আবারো ইউএনওকে জানানো হলে, তিনি তার অফিস সহকারী মো. সুমন কে পাঠান। কিন্তু তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘর নির্মাণ বন্ধ না করে শুধু মোবাইল ফোনে কয়েকটি ছবি তুলে চলে আসেন। এরপর থেকে নির্মাণ কাজ আগের মতোই চলতে থাকে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
শৌলজালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বাজার কমিটির সভাপতি মো. মোস্তফা হেলাল কিরণ বলেন, “আমরা প্রথমে নিজ উদ্যোগে বাঁধা দিয়েছিলাম। এরপর ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ করলেও তার লোকজন শুধু এসে দেখে চলে যান। এরপর আবার ঘর নির্মাণ শুরু হয়।”
কচুয়া বাজারের ব্যবসায়ী মো. রুস্তুম মিয়া, বাবু মালী, মমতাজ ও মো. ফারুক সিকদার বলেন, “আমরা সরাসরি বাঁধা দিলে ভূমি অফিসের লোকজন এসে কিছুক্ষণ থাকার পর চলে যান। তারপর থেকে হানিফ খান নিয়মিতভাবে ঘর নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাঁঠালিয়া ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার জসিম উদ্দিন বলেন, “আমি এবিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। ইউএনও স্যারের কাছ থেকে জেনে নিন।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহিরুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। একবার তিনি ফোন ধরে বলেন, “জানতে হলে অফিসে এসে জানুন,” বলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ এবং প্রশাসনের নীরবতায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা অবিলম্বে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
আজ সোমবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম সরেজমিনে এসে আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষ নিয়ে অভিযোগকারীদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন, এবং আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ হানিফ খানের পক্ষ নিয়ে সরকারি খালের জমি উদ্ধার না করে উল্টো তার পক্ষ নিয়ে অভিযোগকারীদের হুমকি ধামকি দিয়ে আসেন।