শাহাদাত হোসেন রুবেলঃ,বরিশাল প্রতিনিধি:
বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার চাখার ইউনিয়নের সোনাহার এলাকার হক সাইবের হাট যেন ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে সন্ধ্যা নদীর অতল গর্ভে। নদীর ধারাবাহিক ভাঙনে গত কয়েক বছরে এলাকার শতাধিক পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। এখন সেই একই হুমকির মুখে পড়েছে এলাকার একমাত্র ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান — আবুল কাসেম মাস্টার দারুল আরকাম ইবতেদায়ী ও নূরানী মাদ্রাসা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে একাধিকবার মানববন্ধন, স্মারকলিপি ও স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করা হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে প্রতি বছর নদীর ভাঙন বেড়েই চলেছে। যারা এক সময় জমি, ঘর ও স্বপ্ন নিয়ে বসবাস করতেন, আজ তারা খোলা আকাশের নিচে আশ্রয়হীন।
মাদ্রাসার শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন,
“আমি নিজ চোখে দেখেছি—এই এলাকা থেকে প্রায় দেড়-দুই কিলোমিটার জমি নদীতে চলে গেছে। মাদ্রাসার সামনে নদীর স্রোত এখন খুবই ভয়াবহ। যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিও হয়তো আগামী বর্ষায় বিলীন হয়ে যাবে।”
এই মাদ্রাসাটি শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি এলাকার শিশুদের ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার প্রধান ভরসা। যদি এটি নদীগর্ভে হারিয়ে যায়, তবে সেই ক্ষতি পূরণ করা কঠিন হবে বলেই আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নদীর কিনারা ঘেঁষে অনেক বাড়িঘর ফাঁকা হয়ে গেছে। বাসিন্দারা নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে দূরে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি কিংবা খোলা মাঠে অবস্থান নিয়েছেন। শিশু-বৃদ্ধসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তারা।
এলাকার সচেতন মহল ও নদী পাড়ের বাসিন্দারা অবিলম্বে কার্যকর নদী রক্ষা বাঁধ নির্মাণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পুনর্বাসনের জোর দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ—তারা যেন অবিলম্বে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
প্রয়োজনে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলোতে জিও ব্যাগ ফেলা, পাইলিং নির্মাণ এবং নদীতীরে স্থায়ী বাঁধ তৈরির কাজ শুরু করা হোক। নয়তো হক সাইবের হাট, সাকরাল ও তার আশপাশের এলাকাগুলো খুব শীঘ্রই মানচিত্র থেকে মুছে যেতে পারে।