শাহাদাত হোসেন রুবেলঃ
বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়া বাকপুর ইউনিয়নের মাদারকাঠী গ্রামের মৃত আলতাফ হোসেন হাওলাদারের সন্তানরা পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে চরম বিরোধে জড়িয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে—মোট ৫ একর ১৬ শতাংশ জমির উত্তরাধিকার হিসেবে ৫ ভাই সম্পত্তি ভাগ করে নিলেও ৬ বোনকে কোনো অংশ দেওয়া হয়নি।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, গোলাম মোস্তফা দুলাল ও ফারুক নামের দুই ভাই প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন যে, বোনদের কোনো জমি দেওয়া হবে না। এমনকি গতকাল শুক্রবার প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের গাছ বিক্রি করেছেন ফারুক ও দুলাল। জমির বিরোধ নিয়ে বাধা দিতে গেলে ফরিদের স্ত্রী শেফালী বেগমকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
শেফালী বেগম বলেন, “আমার ভাসুর দুলাল বাড়িতে এলেই গালিগালাজ করে এবং বলে—তোর স্বামী কয়দিন পরেই মরে যাবে, তখন তোকে আর তোর সন্তানদের বাড়ি থেকে বের করে দেব।”
বোন নাজমার নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি আমাদের ১১ ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট। ঢাকা থেকে বহুবার ডেকে এনেছে জমি দেওয়ার কথা বলে। কিন্তু আসার পর জানায়, আমি কোনো জমি পাব না। এখন বলে, বাবার বাড়িতে ঢুকতেও পারব না। আমি সরকারের কাছে আমার ন্যায্য অধিকার চাই।”
অপরদিকে মিজানুর রহমান বলেন, “আমি আমার মায়ের অংশের জমি সম্পর্কে জানতে চাইলে মামারা হুমকি দেয় এবং বলে, ‘তোর মা মরছে, এখন তোরা কি চাস?’ এটা সম্পূর্ণ অমানবিক। আমি ন্যায্য হিস্যার দাবি জানাচ্ছি।”
জামাল হোসেন নামে আরেক উত্তরাধিকারী বলেন, “আমি চাই মা ও খালাদের যত সম্পত্তি আছে তা সবার মাঝে সমানভাবে ভাগ হোক। কিন্তু দুলাল ও ফারুক জানিয়ে দেয়, আমরা কোনো জমি পাব না।”
এ বিষয়ে এলাকাবাসীর দাবি, সম্পত্তি ভাগাভাগির ক্ষেত্রে ইসলামি শরিয়ত ও দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সকল উত্তরাধিকারীর সমান অধিকার রয়েছে। অথচ একাংশ অন্য অংশকে বঞ্চিত করছে, যা সামাজিক অবক্ষয়ের চিত্রই তুলে ধরে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বড় ভাই গোলাম মোস্তফা দুলাল বলেন, আমি পৌরসভার কর আদায়কারী এবং বানারীপাড়া থানার ওসি হল আমার বন্ধু, আমি বলছি ওরা কোন জমি পাবেনা তো পাবেইনা, আমার বিরুদ্ধে মামলা করর লাভ নাই কারণ হল, থানায় মামলা রেকর্ড করা হয় আমার কথায়।
সত্যতা যাচাইয়ে বানারিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: গোলাম মোস্তফা কে মুঠোফোনে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমার কোন বন্ধু না, আমি তাকে চিনি সে পৌরসভায় চাকরি করে।
বোনরা যদি জমি দাবী করে ও বিক্রিত গাছ দাবী করে তাহলে আদালতে মামলা দায়ের করলে আইনের মাধ্যমে তারা ন্যায্য প্রাপ্য বুঝে পাবে।