রাজশাহী তানোর প্রতিনিধি,গোলাম রাব্বানী (সফল)
রাজশাহী-১(তানোর-গোদাগাড়ী) এই ভিআইপি সংসদীয় আসনটি শুরু থেকেই বিএনপির হাতে ছিল।কিন্তু বিগত কয়েকবারের নির্বাচনে তা দখলে নেয় আওয়ামী লীগ। তবে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নির্বাচনে ফেরা কঠিন। স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে খ্যাত জাতীয় পার্টিরও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। তাই মাঠে এখন সক্রিয় গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোই।
এরই মধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রার্থী ঘোষণা না হলেও রাজশাহী-১ আসনে আলোচনায় এসেছে দলটির একাধিক প্রার্থীর নাম। তারা মাঠেও বেশ তৎপরতা দেখাচ্ছেন। যদিও এখানো তৃণমূলে পচ্ছন্দের শীর্ষে রয়েছেন অপ্রতিদন্দী নেতৃত্ব প্রয়াত ব্যারিস্টার আমিনুল হকের পরিবার।
অন্যদিকে এ আসনে সরব জামায়াতও। আসনটিতে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে দলটির পক্ষ থেকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। এরই মধ্যে মাঠে কাজ শুরু করেছেন তারা। বলা চলে এ আসনে জামায়াতই হবে বিএনপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।
জানা গেছে, রাজশাহী-১ আসনে ২টি উপজেলা, ৪টি পৌরসভা ও ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদে মোট ভোটার ৪ লাখ ৬২ হাজার ২৪২। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩০ হাজার ৫১০ ও নারী ভোটার ২ লাখ ৩১ হাজার ৭২৯। এছাড়াও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে তিনজন। এই আসনের নতুন ভোটারের সংখ্যা ৭ হাজার ৫৪২। এ আসনে সবচেয়ে বেশি ভোটার চরের বাসিন্দা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর। মূলত তাদের ভোটেই জয়-পরাজয় নিশ্চিত হয় বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
এদিকে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নির্ধারণের ফলে বিএনপি নেতাকর্মীরা বেশ চাঙা। তারা এখন ভোটের তারিখ জানার অপেক্ষায় দিন গুনছেন। দলটির কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত ছড়িয়েছে নির্বাচনী হাওয়া।
তানোর উপজেলা বিএনপির একাধিক জৈষ্ঠ নেতা বলেন, মেজর জেনারেল অবঃ শরিফ উদ্দিন ছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রেসিডেন্ট গার্ড, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সামরিক সচিব ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে তাকে মাঠের রাজনীতিতে তৎপর হতে বলা হয়েছে। নীতিনির্ধারণী মহলের সবুজ সঙ্কেত পেয়ে তিনি মাঠ গোছানো শুরু করেছেন,এতে
সাধারণ মানুষের কাছে থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। তারা ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে। গত ১৫ বছর তারা ভোট দিতে পারেনি। এবার তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন, যেখানে সবার থেকে যোজন যোজন দুরুত্বে এগিয়ে রয়েছেন প্রয়াত ব্যারিস্টার আমিনুল হক পরিবারের সদস্য তার ভাই মেজর জেনারেল অবঃ শরিফ উদ্দিন।
জানা গেছে, এখানে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা
রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগদানের পাশাপাশি অংশ নিচ্ছেন সামাজিক কর্মকাণ্ডে। এছাড়াও ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও অতিথি হচ্ছেন। এলাকার মানুষের সমর্থন চাইছেন। দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিভিন্ন উপায়ে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন তারা। ব্যানার-পোস্টার সাঁটিয়ে চাইছেন দোয়া। আপাতত বিএনপি এবং জামায়াতের দখলেই রয়েছে মাঠ। এনসিপির কমিটি না থাকায় রাজনৈতিক তৎপরতাও চোখে পড়ার মতো নেই।
এ আসনে আগাম নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করেছেন বিএনপির সম্ভাব্য চার প্রার্থী। জামায়াতের একক প্রার্থীও জোর সাংগঠনিক তৎপরতা চালাচ্ছেন। পাশাপাশি জামায়াতের নেতাকর্মীরা সাংগঠনিক কৌশলের অংশ হিসেবে মসজিদ-মাদরাসায়ও নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। দোয়া মাহফিলও করছেন। এসব অনুষ্ঠানে তারা ইসলামি শাসনব্যবস্থার নানাদিক তুলে ধরে বক্তব্য দিচ্ছেন। সমর্থন চাইছেন এলাকাবাসীর। এ আসনে জাতীয় পার্টির এক প্রার্থীর কথাও শোনা যাচ্ছে।
রাজশাহী-১ বিএনপির দুর্গ উদ্ধারের লড়াইয়ে প্রধান প্রতিদন্দী জামায়াত। তবে জামায়াতের একক প্রার্থীর বিপরীতে
বিএনপির সম্ভাব্য একাধিক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। বিএনপির অন্যতম মনোনয়ন প্রত্যাশী মেজর জেনারেল অবঃ শরিফ উদ্দিন। তিনি বিএনপির ভাইসচেয়ারম্যান এবং সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী
অপ্রতিদন্দী নেতৃত্ব প্রয়াত ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ছোট ভাই। শরিফ এখন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার (২০০১-২০০৬) সামরিক সচিব ছিলেন। এলাকায় ব্যাপক সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছেন তিনি। গত ১৫ বছর বিএনপির যেসব নেতাকর্মী হামলা মামলায় নিষ্ক্রিয় ও বিপর্যস্ত ছিলেন তাদের সংগঠিত করছেন। গোদাগাড়ী ও তানোরের তৃণমূল পর্যায়ে দলীয় কমিটিগুলো পুনর্গঠন করছেন। এলাকায় এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। শরিফ উদ্দিনের নিজের এলাকা গোদাগাড়ী।তবে তিনি তানোরেও ব্যাপক সাংগঠনিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। তার প্রতি দলের নেতা ও কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন দেখা গেছে।
এদিকে জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে দলীয় ও সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করেছেন দলের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। তার বাড়ি গোদাগাড়ী পৌর এলাকার মহিষালবাড়িতে। ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে তিনি এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে আরও কয়েকটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হলেও জয়ের মুখ দেখতে পাননি। এবার মুজিবুর রহমান যেমন সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন, তেমনি দলের নেতারাও ব্যাপক তৎপর।
অন্যদিকে শরিফ উদ্দিন ছাড়াও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মাঠে নেমেছেন সুপ্রিম কোর্ট জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন এবং ব্যবসায়ী এ্যাডঃ সুলতানুল ইসলাম তারেকপ্রমুখ। নির্বাচনী এলাকায় ঈদ পুনর্মিলনীসহ নানান অনুষ্ঠানের আয়োজনও করছেন তারা। তবে এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে সবার থেকে এগিয়ে রয়েছেন মেজর জেনারেল অবঃ শরিফ উদ্দিন।
আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে শরিফ উদ্দিন বলেন, এ আসনটি মূলত ছিল আমার ভাইয়ের। তার হাত ধরেই এ আসনের উন্নয়ন হয়েছে। তার রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজ করতে চাই। এ আসনে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ কি করেছে সেটি সবাই জানে। আমি এ আসনটির উন্নয়ন করতে চাই। তিনি বলেন, আমি শহীদ