1. info@www.dailybdcrimetimes.com : দৈনিক বিডি ক্রাইম টাইমস.কম :
বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ০২:৪১ অপরাহ্ন
Title :
‘পাথরকান্ডে সংশ্লিষ্টরা কেউ দায় এড়াতে পারেন না’ স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক যতীন সরকার আর নেই সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে পাইকগাছার কপিলমুনিতে মানববন্ধন বরগুনায় প্রতারক হতে সাবধান করতে পুলিশের লিফলেট বিতরণ পলাশবাড়ীতে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন পাইকগাছায় ভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস জনগনের কল্যাণে আজীবন কাজ করবো পাইকগাছায় গনসংযোগে জামায়াতের এমপি প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ গোবিন্দগঞ্জে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস পালিত সদরপুরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধ নিহত  ফুলছড়িতে দৈনিক করতোয়ার ৫০ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে কেক কাটা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

‘পাথরকান্ডে সংশ্লিষ্টরা কেউ দায় এড়াতে পারেন না’

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫
  • ৪৩ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাষ্ট্রের সম্পদ রক্ষা করা স্থানীয় জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি) এবং সামগ্রিকভাবে প্রশাসনের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। বাংলাদেশে এ দায়িত্ব কয়েকভাবে আইন ও নীতিমালায় নির্ধারিত আছে। তবে দায়িত্ব পালন এবং অবহেলা দুটোই রাষ্ট্রের বিবেচিত হওয়া উচিত। তবে শুরুটা হোক এখান থেকেই।

সংবিধানগত ভিত্তিতে বাংলাদেশের সংবিধানের ২১(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক ব্যক্তি জনগণের সেবা করার এবং জনসম্পদের রক্ষা করার জন্য শপথবদ্ধ। অর্থাৎ প্রশাসনিক কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ রাষ্ট্রের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর দায়িত্ব জনসম্পদ রক্ষা করা।

ডিসি (জেলা প্রশাসক) তিনি জেলা পর্যায়ে সরকারের প্রধান নির্বাহী হিসেবে ডিসি সরকারি সম্পত্তি, জমি, ভবন, স্থাপনা ইত্যাদি রক্ষার জন্য আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেন। ডিসি ভূমি ব্যবস্থাপনা, দখলমুক্ত রাখা এবং রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি সংরক্ষণের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন। তিনি প্রয়োজনে পুলিশ, র‍্যাব বা আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কাজে লাগাতে পারেন।

এসপি (পুলিশ সুপার) তিনি জেলা পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ প্রতিরোধ ও তদন্তের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার ক্ষেত্রেও পুলিশ কাজ করে। দণ্ডবিধি (Penal Code) 1860 ও দুর্নীতি দমন আইন, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর বা আত্মসাতের শাস্তি সংক্রান্ত ধারাগুলো বাস্তবায়নে এসপি নেতৃত্ব দেন।

শাসন কাঠামোতে যৌথ দায়িত্ব যেমন শুধু ডিসি বা এসপি নয়, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান (উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা) এবং অন্যান্য দপ্তরও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় অংশ নেয়। উদাহরণ: সড়ক, ব্রিজ, স্কুল, হাসপাতাল, বনাঞ্চল, নদী—এসব রক্ষায় সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে কাজ করে।

সংক্ষেপে, রাষ্ট্রের সম্পদ রক্ষা করা আইনি ও প্রশাসনিকভাবে ডিসি, এসপি ও শাসন ব্যবস্থার মৌলিক দায়িত্ব এবং তারা এই কাজে অবহেলা করলে সেটি দায়িত্বে গাফিলতি বা আইনের লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হতে পারে, যা বিচার্য অপরাধ।

ধরুন; যদি ডিসি (জেলা প্রশাসক) বা এসপি (পুলিশ সুপার)-এর উপস্থিতিতে এবং তাঁদের জ্ঞাতসারে রাষ্ট্রের সম্পদ লুটপাট হয় এবং তাঁরা তা প্রতিরোধের জন্য কোনো পদক্ষেপ না নেন তাহলে সেটা অবহেলা, দায়িত্বে গাফিলতি এবং পরিস্থিতিভেদে অপরাধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সহযোগিতা হিসেবে গণ্য হতে পারে। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী এর শাস্তির ভিত্তি কয়েকটি জায়গা থেকে আসে; সরকারি কর্মচারী আচরণবিধি ও শাস্তিমূলক বিধান। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী: দায়িত্বে গাফিলতি, অবহেলা বা অসদাচরণের জন্য বদলি, পদাবনতি, বেতন কর্তন, বরখাস্ত, চাকরিচ্যুতি ইত্যাদি প্রশাসনিক শাস্তি হতে পারে। তদন্তে প্রমাণিত হলে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

ফৌজদারি শাস্তি (দণ্ডবিধি অনুযায়ী) বাংলাদেশ দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর কয়েকটি ধারা প্রযোজ্য হতে পারে। ধারা 119 সরকারি কর্মচারীর কর্তব্য পালনে অবহেলা যার কারণে অপরাধ সংঘটিত হয়; শাস্তি: সর্বোচ্চ ৩ বছর কারাদণ্ড, জরিমানা বা উভয়। ধারা 217 দায়িত্বে থেকে অপরাধ রোধে ব্যর্থতা; শাস্তি: সর্বোচ্চ ৩ বছর কারাদণ্ড বা জরিমানা। ধারা 409 যদি সম্পদ আত্মসাৎ বা লুটে সরাসরি যোগসাজশ থাকে, তবে শাস্তি: যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড এবং জরিমানা।

দুর্নীতি দমন আইন ২০০৪ এ যা বলা হয়েছে, যদি প্রমাণ হয় যে ডিসি/এসপি ইচ্ছাকৃতভাবে সহযোগিতা করেছেন বা সুবিধা নিয়েছেন, তবে এটা দুর্নীতি হিসেবে গণ্য হবে। এই ধারায় শাস্তি সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ড, ন্যূনতম ৪ বছর।

প্রশাসনিক ও আইনি প্রক্রিয়া: অভিযোগ উঠলে বিষয়টি অভ্যন্তরীণ তদন্ত বা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করতে পারে। প্রমাণ পেলে তাঁদের বিরুদ্ধে একইসাথে বিভাগীয় মামলা ও ফৌজদারি মামলা চালানো সম্ভব। সংক্ষেপে; দায়িত্বে অবহেলার জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা (বদলি, বরখাস্ত, পদাবনতি), সর্বোচ্চ ৩ বছর কারাদণ্ড। যোগসাজশ বা সরাসরি অংশগ্রহণের জন্য দুর্নীতি বা আত্মসাতের মামলা, যা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।

পাথরকান্ডে ওখানকার ডিসি, এসপি বা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আইনি ও নৈতিকভাবে দায় এড়াতে পারেন না, যদি ঘটনাটি তাঁদের এখতিয়ার ও দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এবং তাঁরা তা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেন। এখানে বিষয়টি কয়েকটি দিক থেকে স্পষ্ট যে,
আইন অনুযায়ী দায়িত্ব সংবিধানের ২১(২) অনুচ্ছেদ: সরকারি কর্মকর্তারা জনগণের সেবা ও জনসম্পদ রক্ষার শপথবদ্ধ। বাংলাদেশ দণ্ডবিধি 1860, ধারা 119, 217: সরকারি দায়িত্ব পালনে অবহেলা বা অপরাধ প্রতিরোধে ব্যর্থ হলে ফৌজদারি দায় হতে পারে।
খনিজ সম্পদ উন্নয়ন আইন ২০১৭: খনিজ (যেমন সাদা পাথর) অবৈধ উত্তোলন, পরিবহন, মজুদ বা বিক্রয় রোধে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে এ যাবতকালে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন মামলা বা জিডিও করেনি প্রশাসন বরং সাংবাদিকরা সংবাদ প্রকাশ করায় একটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক, প্রতিনিধিসহ মামলার শিকার হয়েছেন।

প্রশাসনিক এখতিয়ারে ডিসি: জেলা পর্যায়ে সরকারি সম্পত্তি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের প্রধান নির্বাহী। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, অভিযানে নেতৃত্ব ও অবৈধ কার্যকলাপ দমন তাঁর এখতিয়ারের মধ্যে। এসপি (পুলিশ সুপার): আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধে পুলিশ বাহিনী পরিচালনা করেন। অবৈধ পাথর উত্তোলন বা পাচার অপরাধ হলে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হয়। ঘটনাটি যদি দীর্ঘদিন ধরে চলে, তবে প্রশাসনের তথ্য না থাকা প্রমাণ করা কঠিন। কারণ সাদা পাথর লুট সাধারণত বড় আকারের পরিবহন, ডাম্পার/ট্রাক, খনন যন্ত্রপাতি জড়িত থাকে, যা স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক।

দায় এড়ানোর শর্ত রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যা বাতলে দিয়েছে তা হচ্ছে, ডিসি বা এসপি কেবল তখনই দায় এড়াতে পারেন যদি তাঁরা প্রমাণ করতে পারেন, যে ঘটনাটি সম্পূর্ণ গোপনে হয়েছে এবং তাঁদের কাছে আগে কোনো অভিযোগ বা তথ্য আসেনি। তথ্য পাওয়ার পর তাঁরা দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন। তাঁদের ক্ষমতার বাইরে কোনো কারণে (যেমন আদালতের স্থগিতাদেশ, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ) তাঁরা ব্যবস্থা নিতে পারেননি। কিন্তু এসব শর্ত প্রমাণ করা কঠিন, বিশেষত যদি ঘটনা প্রকাশ্যে চলে বা গণমাধ্যমে উঠে আসে। তবে দীর্ঘদিন ধরে পাথর লুটপাট চালায় প্রকাশ্যে; যা বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকরা ফলাও করে প্রকাশ করে। রাষ্ট্রের সম্পদ রক্ষা করতে সংবাদ প্রকাশ করা এ সকল সাংবাদিকদের রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া উচিত।

সম্ভাব্য দায়-অবহেলা: বিভাগীয় ব্যবস্থা (বদলি, বরখাস্ত, পদাবনতি) সর্বোচ্চ ৩ বছর কারাদণ্ড।যোগসাজশ/সহযোগিতা: দুর্নীতি দমন আইন অনুযায়ী ৪–১৪ বছর কারাদণ্ড বা যাবজ্জীবন।
প্রাকৃতিক সম্পদ আইনের লঙ্ঘন: জরিমানা ও কারাদণ্ড, পাশাপাশি পাথর বাজেয়াপ্ত। বাস্তবে, সাদা পাথর লুটের মতো বড় ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন সাধারণত পুরোপুরি দায়মুক্ত হতে পারে না, কারণ এ ধরনের কর্মকাণ্ড প্রচুর জনসমাগম, যন্ত্রপাতি ও পরিবহন ব্যবহার করে হয়, যা প্রশাসনের অজানা থাকার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম।

ডিসি, এসপি বা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আইনি ও নৈতিকভাবে দায় এড়াতে পারেন না, যদি ঘটনাটি তাঁদের এখতিয়ার ও দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এবং তাঁরা তা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেন। যা এখানে বিষয়টি কয়েকটি দিক থেকে স্পষ্ট যে, আইন অনুযায়ী দায়িত্ব যা সংবিধানের ২১(২) অনুচ্ছেদ: সরকারি কর্মকর্তারা জনগণের সেবা ও জনসম্পদ রক্ষার শপথবদ্ধ। বাংলাদেশ দণ্ডবিধি 1860, ধারা 119, 217: সরকারি দায়িত্ব পালনে অবহেলা বা অপরাধ প্রতিরোধে ব্যর্থ হলে ফৌজদারি দায় হতে পারে।

খনিজ সম্পদ উন্নয়ন আইন ২০১৭: খনিজ (যেমন সাদা পাথর) অবৈধ উত্তোলন, পরিবহন, মজুদ বা বিক্রয় রোধে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবস্থা নিতে হবে।

ডিসি জেলা পর্যায়ে সরকারি সম্পত্তি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের প্রধান নির্বাহী। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, অভিযানে নেতৃত্ব ও অবৈধ কার্যকলাপ দমন তাঁর এখতিয়ারের মধ্যে।

এসপি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধে পুলিশ বাহিনী পরিচালনা করেন। অবৈধ পাথর উত্তোলন বা পাচার অপরাধ হলে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হয়। ঘটনাটি যদি দীর্ঘদিন ধরে চলে, তবে প্রশাসনের তথ্য না থাকা প্রমাণ করা কঠিন, কারণ সাদা পাথর লুট সাধারণত বড় আকারের পরিবহন, ডাম্পার/ট্রাক, খনন যন্ত্রপাতি জড়িত থাকে, যা স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক।

দায় এড়ানোর শর্তে ডিসি বা এসপি কেবল তখনই দায় এড়াতে পারেন যদি তাঁরা প্রমাণ করতে পারেন যদি ঘটনাটি সম্পূর্ণ গোপনে হয়েছে এবং তাঁদের কাছে আগে কোনো অভিযোগ বা তথ্য আসেনি।
তথ্য পাওয়ার পর তাঁরা দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন। তাঁদের ক্ষমতার বাইরে কোনো কারণে (যেমন আদালতের স্থগিতাদেশ, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ) তাঁরা ব্যবস্থা নিতে পারেননি। কিন্তু এসব শর্ত প্রমাণ করা কঠিন, বিশেষত যদি ঘটনা প্রকাশ্যে চলে বা গণমাধ্যমে উঠে আসে।

পাথরকান্ডে সম্ভাব্য দায়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা (বদলি, বরখাস্ত, পদাবনতি) সর্বোচ্চ ৩ বছর কারাদণ্ড। যোগসাজশ/সহযোগিতা: দুর্নীতি দমন আইন অনুযায়ী ৪–১৪ বছর কারাদণ্ড বা যাবজ্জীবন। প্রাকৃতিক সম্পদ আইনের লঙ্ঘন: জরিমানা, কারাদণ্ড, পাশাপাশি পাথর বাজেয়াপ্ত।বাস্তবে, সাদা পাথর লুটের মতো বড় ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন সাধারণত পুরোপুরি দায়মুক্ত হতে পারে না, কারণ এ ধরনের কর্মকাণ্ড প্রচুর জনসমাগম, যন্ত্রপাতি ও পরিবহন ব্যবহার করে হয়, যা প্রশাসনের অজানা থাকার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। ডিসি, এসপি বা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আইনি ও নৈতিকভাবে দায় এড়াতে পারেন না, যদি ঘটনাটি তাঁদের এখতিয়ার ও দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এবং তাঁরা তা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেন।

এখানে বিষয়টি কয়েকটি দিক থেকে স্পষ্ট যে, আইন অনুযায়ী দায়িত্ব সংবিধানের ২১(২) অনুচ্ছেদ: সরকারি কর্মকর্তারা জনগণের সেবা ও জনসম্পদ রক্ষার শপথবদ্ধ। বাংলাদেশ দণ্ডবিধি 1860, ধারা 119, 217: সরকারি দায়িত্ব পালনে অবহেলা বা অপরাধ প্রতিরোধে ব্যর্থ হলে ফৌজদারি দায় হতে পারে।
খনিজ সম্পদ উন্নয়ন আইন ২০১৭: খনিজ (যেমন সাদা পাথর) অবৈধ উত্তোলন, পরিবহন, মজুদ বা বিক্রয় রোধে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রশাসনিক এখতিয়ার ডিসি: জেলা পর্যায়ে সরকারি সম্পত্তি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের প্রধান নির্বাহী। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, অভিযানে নেতৃত্ব ও অবৈধ কার্যকলাপ দমন তাঁর এখতিয়ারের মধ্যে।

এসপি: আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধে পুলিশ বাহিনী পরিচালনা করেন। অবৈধ পাথর উত্তোলন বা পাচার অপরাধ হলে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হয়। ঘটনাটি যদি দীর্ঘদিন ধরে চলে, তবে প্রশাসনের তথ্য না থাকা প্রমাণ করা কঠিন। কারণ সাদা পাথর লুট সাধারণত বড় আকারের পরিবহন, ডাম্পার/ট্রাক, খনন যন্ত্রপাতি জড়িত থাকে, যা স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক।

সাদা পাথর লুটপাটের মতো ঘটনায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা মন্ত্রী সাধারণত সম্পূর্ণ দায় এড়াতে পারেন না, কারণ তাঁদের ভূমিকা নীতিনির্ধারণ, অনুমোদন ও সর্বোচ্চ তদারকি পর্যায়ে থাকে। এখানে বিষয়টি পরিষ্কার যে, খনিজ সম্পদ, বন, নদী বা যে সম্পদই হোক তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অধীন। আইন, নীতি ও বিধিমালা প্রণয়ন করে। বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, এসপি ইত্যাদির মাধ্যমে বাস্তবায়ন ও তদারকি নিশ্চিত করে। মনিটরিং ও জবাবদিহির চূড়ান্ত দায়িত্ব রাখে। সাদা পাথরের ক্ষেত্রে, যদি এটা খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট বিভাগের আওতায় পড়ে, তাহলে নীতি প্রয়োগের ব্যর্থতা মন্ত্রণালয়েরও দায়।

মন্ত্রী বা দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব কেবল তখনই দায় এড়াতে পারেন, যদি ঘটনার ব্যাপারে তাঁদের কাছে কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ বা প্রতিবেদন না আসে।
অভিযোগ আসার পর তাঁরা তৎক্ষণাৎ প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সিস্টেম সচল ছিল এবং তা নিয়মিত প্রতিবেদন পেত। প্রমান পাওয়া যায় যে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা মন্ত্রণালয়ের অজ্ঞাতে অবৈধ কার্যকলাপ চালিয়েছেন।

দায় স্বীকারের পরিস্থিতি ; তাঁদের দায় ধরা হবে যদি-ঘটনা দীর্ঘ সময় ধরে চলে, অথচ গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ বা স্থানীয় প্রশাসন বারবার জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় নীতি প্রণয়ন করলেও কার্যকর বাস্তবায়ন মনিটরিং করেনি। রাজনৈতিক বা আর্থিক স্বার্থে ইচ্ছাকৃতভাবে চুপ থেকেছে বা অনুমোদন দিয়েছে।

সম্ভাব্য জবাবদিহি ও শাস্তি; রাজনৈতিক দায়- মন্ত্রী বা উপদেষ্টার পদত্যাগ বা অপসারণ (রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী)। প্রশাসনিক দায় (সচিব বা উর্ধ্বতন কর্মকর্তা): বদলি, পদাবনতি, চাকরিচ্যুতি।

ফৌজদারি দায়: যদি যোগসাজশ বা অবৈধ সুবিধা নেওয়ার প্রমাণ মেলে, তবে দুর্নীতি দমন আইন অনুযায়ী ৪–১৪ বছর কারাদণ্ড বা যাবজ্জীবন।

⚖ সংক্ষেপে: মাঠপর্যায়ে বহুল আলোচিত অপরাধ হলেও যদি মন্ত্রণালয় তদারকিতে ব্যর্থ হয় বা ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যবস্থা না নেয়, তবে মন্ত্রী বা দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব আইনি ও নৈতিকভাবে দায়মুক্ত থাকতে পারবেন না। মোট কথা রাষ্ট্রের সম্পদ লুটপাট বা ব্যাহতের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কেউই রেহাই পেতে পারেন না।

লেখক : আহমেদ আবু জাফর, চেয়ারম্যান, ট্রাস্টি বোর্ড, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved