বরগুনা সংবাদদাতা:
আমতলী উপজেলাধীন উত্তর কালামপুর (কালিবাড়ী) নুরানী বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আলাউদ্দিন সিকদারের বিরুদ্ধে এডহক কমিটির নাম প্রস্তাবে আওয়ামী পরিবারের সদস্যদের নাম পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এডহক কমিটির সভাপতি মনোনয়নের জন্য সুপার কর্তৃক মাদরাসা বোর্ডের রেজিস্ট্রার বরাবর পাঠানো তিনজনের নামের তালিকা আমাদের হাতে এসেছে। পর্যালোচনা ও সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রথম জন অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম যিনি মাদরাসার ক্যাচমেন্ট এরিয়ার বাইরের লোক।
সুপার অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ থেকে আত্মরক্ষার জন্য তাকে ঢাল হিসেবে রেখেছেন বলে জানা গেছে। বাকি দু’জন কালিবাড়ী গ্রামের সর্বজনপরিচিত প্যাদা বাড়ির লোক যারা বংশপরম্পরায় আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত।
তালিকার থাকা দ্বিতীয় ব্যক্তি মোঃ নাজমুল আহসান প্যাদা নিজে, তার পরিবার ও আত্মীয় স্বজন সবাই আওয়ামী আদর্শের। তিনি ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। পূর্বে পটুয়াখালীর নেছারিয়া মাদরাসায় সাধারণ শিক্ষক পদে চাকরি করলেও শ্বশুরবাড়ির রাজনৈতিক পরিচয় ও দাপট খাটিয়ে কয়েক বছর আগে খাসেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ ভাগিয়ে নিয়েছেন। তার পিতা মরহুম জবেদ আলী প্যাদা বিগত সময়ে গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড মেম্বার ও আওয়ামীগের সদস্য ছিলেন। তার চাচা মোঃ কাঞ্চন আলী প্যাদা মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় ব্যবহার করে বিগত শাসনামলে উত্তর কালামপুর বালিকা দাখিল মাদরাসার একাধিকবার সভাপতি হয়ে সুপারের যোগসাজসে নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। এছাড়া গ্রামে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অনিয়ম, দুর্নীতি ও প্রতারণাসহ বেশ কিছু দুর্নাম রয়েছে।
তালিকায় থাকা তৃতীয় ব্যক্তি আব্দুস শাকুর প্যাদা পটুয়াখালীর ছোটবিঘাই ইউনিয়নের মাটিভাঙ্গা বালিকা দাখিল মাদরাসায় শরীর চর্চা শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থাকলেও আওয়ামীলীগের সুবিধাভোগী লোক। তার ফেসবুক ঘাঁটাঘাটি করে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। তার আপন চাচাতো ভাই তোফাজ্জেল হোসেন প্যাদা আওয়ামীলীগ এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ডিও লেটার ব্যবহার করে বিগত সরকারের আমলে উক্ত মাদরাসায় সভাপতি হয়েছেন। এই তোফাজ্জেল গত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের ডামি প্রার্থী গোলাম সরোয়ার টুকুর পক্ষে কাজ করেছেন। তার ফেসবুক ওয়ালেও এর প্রমাণ পাওয়া যায়। আবদুস শাকুরের আপন চাচা মরহুম আবদুল আজিজ প্যাদা বিগত সরকারের আমলে আওয়ামীলীগের সদস্য ছিলেন, ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হয়েছেন। তিনি একাধিকবার উপরোক্ত মাদরাসার সভাপতি হয়েছেন এবং সুপারের যোগসাজসে মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন। ঘুষ নিয়েও আবদুল হক নামে জনৈক বেকার যুবককে ভুয়া পদে নিয়োগ দিয়ে এলাকায় দুর্নাম কুড়িয়েছেন।
উল্লেখ্য, উক্ত মাদরাসার সুপার মাওলানা আলাউদ্দিন সিকদার আমতলী উপজেলা ওলামালীগের সভাপতি হওয়ায় এবং আওয়ামী সমর্থক এই প্যাদা বংশের লোকদের সহযোগিতায় দীর্ঘদিন যাবৎ অনিয়ম-দুর্নীতি করে মাদরাসার পড়াশুনার পরিবেশ নষ্ট করে ফেলেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়।