
নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর ডোমারে কলেজ শিক্ষার্থী উর্মি এবং ছেলে সেতু দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক থাকার পর পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন।
পালিয়ে বিয়ে করার বিষয়টি মেয়ের পরিবার কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। এজন্য
মেয়ের পরিবার তাদের মেয়েকে উদ্ধারের জন্য থানায় জিডি করলে পুলিশ সেই জিডি মূলে দুজনকেই পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী থেকে প্রায় তিনদিন পর উদ্ধার করে ডোমার থানায় নিয়ে আসে। ছেলে মেয়ে উভয়কেই থানায় আনার পর মেয়ের পরিবার মেয়েকে কাছে পেয়ে তাকে চাপের মধ্যে রেখে তার নববিবাহিত স্বামীসহ তিনজনের নাম উল্লেখ পূর্বক অপহরণ মামলা দায়ের করলে ডোমার থানা পুলিশ আটককৃত সেতুকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরন করে। আদালত সেতুর জামিন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরন করেন।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার ৬নং পাঙ্গা মটকপুর ইউনিয়নের দক্ষিন মটুকপুর পাটোয়ারী পাড়া এলাকায়।
এলাকাবাসীর সুত্রে জানা যায় দক্ষিন মটুকপুর পাটোয়ারী পাড়া এলাকার মৃত এনামুল হকের মেয়ে উর্মি এবং একই এলাকার সাজু ইসলামের ছেলে সেতু।
সুত্র জানায়, সেতু এবং উর্মির ভালোবাসার সম্পর্ক দীর্ঘ কয়েক বছরের। তাদের সম্পর্ক পরিবার মেনে নিবে না জেনেই তারা পরিবারের অমতেই গত ৮ই অক্টোবর তিন লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য্য করিয়া পঞ্চগড়ে বিয়ে করেন।
ঘটনার বিষয়ে সেতুর বাবা সাজু ইসলাম বলেন,অনেক খোঁজা খোজির পর জানতে পারি আমার ছেলে পঞ্চগড়ে বিয়ে করেছে, এবং তাঁরা পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে আছে। পরে ডোমার থানা পুলিশ ও আটোয়ারী থানা পুলিশ সহ সেখানে উপস্থিত থেকে তাঁদের দুজনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে জানতে পারি আমার দুই ছেলেসহ তিনজনের নামে অপহরণ মামলা দিয়ে আমার আটককৃত ছেলেকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
মামলার এজাহার সুত্রে যানাযায়, উপজেলার ৭নং বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের বোড়াগাড়ী ব্রিজের পাশে ব্লুস্টার স্কুলের সামনে থেকে উর্মিকে অপহরণের ঘটনা উল্লেখ থাকলেও ৮ই অক্টোবর অপহরণের বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ সহ স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তাঁরা বলেন, স্কুলের আশেপাশে এই ধরনের অপহরণের কোন ঘটনা ঘটেনি।
এবিষয়ে কথা হয় ব্লু স্টার স্কুলের সামনে ফল বিক্রেতা গোলাম মোস্তফার সাথে তিনি বলেন, আমার দোকান সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত খোলা থাকে কিন্তু আমরা এরকম কোন কিছু লক্ষ্য করিনি।
এবিষয়ে ব্লু স্টার স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুজিত রায় বলেন, স্কুলের সামনে কোন অপহরণের ঘটনা ঘটেনি এবং কারো কাছ থেকে কোন কিছু শুনিওনি।
স্কুলের পাশে বক্করের মোড়ের গেলামাল দোকানদার স্বপন ইসলাম বলেন, সকাল ছয়টা থেকে রাত বারোটা পর্যন্ত আমার দোকান খোলা থাকে এই ধরনের অপহরণের ঘটনা আমাদের এলাকায় ঘটেনি এবং কারো কাছে শুনিওনি। স্কুলের সামনে সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করেও কোন অপহরণের ফুটেজ পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে অপহরন মামলার বাদী উর্মির চাচা রফিকুল ইসলাম বলেন, অপহরণের বিষয়ে আমরা কোন তথ্য দিবোনা, কোর্টে দিবো আপনারা মাঠে সত্য উদঘাটন করেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ডোমার থানার এসআই কাজল রায় বলেন, সাধারন ডায়েরীর ভিত্তিতে আমরা আটোয়ারী থেকে ছেলে মেয়ে দুজনকে উদ্ধার করি। থানায় উর্মি মেয়েটি স্বীকারোক্তি দিয়েছে তাকে ব্লু স্টার স্কুলের সামনে থেকে অপহরণ করেছে। বর্তমানে মামলা চলমান রয়েছে।