 
																
								
                                    
									
                                 
							
							 
                    
শারমিন আক্তার:
“বাংলাদেশ আমার অহংকার”- এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকাল থেকে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে চাঞ্চল্যকর অপরাধে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
 এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৪ এবং র্যাব-৮ এর যৌথ আভিযানিক দল রাজধানীর মিরপুরে চাঞ্চল্যকর প্রকাশ্য দিবালোকে ১০৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ প্রায় বত্রিশ লক্ষ টাকার ডাকাতির মামলায় মূলহোতা মোঃ বিল্লাল হোসেনসহ চারজনকে গত ৩০ অক্টোবর ২০২৫ গ্রেফতার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয় গ্রেফতারকৃতরা হলোঃ (১) মোঃ হোসেন @ সোহান(৩৩), (২) বকুল বিবি (৫০) এবং (৩) কুলসুম বিবি (৫০)।
৩। মামলার এজাহার ও গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ১৯ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ সকাল ১০ টার দিকে ভিকটিম দারুস সালাম থানাধীন গাবতলী হাজী আহসান উল্লাহ মসজিদ মার্কেটে  তার নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যায়। এর পরপরই কয়েকজন মুখোশধারী লোক দারুস সালাম থানাধীন তার বাসায় প্রবেশ করে স্ত্রীকে অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে মারপিট করে আলমারীর লকার ভেঙ্গে  নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন জোরপূর্বক নিয়ে দ্রুত চলে যায়। এরপর ভিকটিমের স্ত্রী তার বাসার ভাড়াটিয়ার মোবাইল নম্বর হতে ভিকটিমকে ফোন করে জানায়,তার বাসায় অজ্ঞাতনামা ডাকাতরা প্রবেশ করে মারপিট করে টাকা ও স্বর্ণালংকার এবং মোবাইল ফোন লুট প্রাপ্ত করে নিয়ে গেছে। উক্ত সংবাদ পেয়ে ভিকটিম বাসায় এসে দেখে কাঠের আলমারী ভেঙ্গে  আলমারীর মধ্যে থাকা নগদ-৩১,০৫,০০০/-(একত্রিশ লক্ষ পাঁচ হাজার) টাকা এবং তার স্ত্রীর ব্যবহৃত ১০ ভরি স্বর্ণসহ পাঁচ মেয়ের ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের সর্বমোট-১০৫ (একশত পাঁচ ভরি) স্বর্ণালংকার, যার মূল্য অনুমান-১,৯০,০০,০০০/- (এক কোটি নব্বই লক্ষ) টাকা এবং একটি ওয়ান প্লাস মোবাইল ফোন, যার মূল্য আনুমানিক-১,৩৫,০০০/-(এক লক্ষ পয়ত্রিশ হাজার) টাকা গ্রেফতারকৃত আসামি ও তার সহযোগিরা নিয়ে যায়। ভিকটিমের স্ত্রী  জানায় একজন ব্যক্তি এসে বাসার গেইটের সামনে থাকা কলিং বেল ঢাপে, তখন তার স্ত্রী দরজা খোলামাত্র অজ্ঞাতনামা ০৩জন ব্যক্তি বাসার ভিতরে প্রবেশ করে এবং অজ্ঞাতনাম ০১ জন ব্যক্তি বাসার গেইটের সামনে অবস্থান করে। তাৎক্ষণিক অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে ভিকটিমের স্ত্রীর হাত-পা ও মুখ বেধে তার নিকট আলমারীর ঢাবি চায়। তখন সে চাবি না দিলে তারা ভিকটিমের স্ত্রীকে মারধর করে। ইতিমধ্যে অজ্ঞাতনামা ০৩ জন ব্যক্তি আলমারীর লক ভেঙ্গে উপরোক্ত নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন জোরপূর্বক নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। 
উক্ত ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারিত হয় এবং এ সংক্রান্তে ডিএমপি, ঢাকার দারুস সালাম থানায় একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করা হয়। ঘটনার পরপরই র্যাব-৪ এর আভিযানিক দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে চাঞ্চল্যকর উক্ত ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামিদের অবস্থান সনাক্ত করে। পরবর্তীতে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল ঢাকার সদরঘাট থেকে উক্ত মামলার মূল হোতা ও পরিকল্পনাকারী মো: বিল্লাল হোসেনকে গ্রেফতার করে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এবং র্যাব-৮ এর একটি যৌথ আভিযানিক দল ভোলা সদর থানাধীন উত্তর ভেদুরিয়ায় অভিযান পরিচালনা করে আরো তিনজন আসামিকে গ্রেফতার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে আলামতের স্বর্ণালঙ্কার (১ ভরি ১০ আনা), সিটি গোল্ড স্বর্ণালঙ্কার (৮ ভরি ২ আনা), নগদ ৮০,০০০/-(আশি হাজার টাকা মাত্র) এবং ৫টি মোবাইল ফোন উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়। ঘটনায় জড়িত পলাতক অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় প্রেরণ করা হয়েছে।