নিজস্ব প্রতিবেদক:
বরগুনার বেতাগী উপজেলায় জমি দখলের চেষ্টা এবং জোরপূর্বক ফসলি জমি চাষাবাদের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়রা বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
রবিবার (০৬ জুন) সকাল ১১টার দিকে বরগুনার বেতাগী উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের গড়িয়া বুনিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীদের তথ্যসূত্রে জান যায়, দেওয়ানি মামলার বেতাগী উপজেলার গড়িয়া বুনিয়া মৌজা-র এসএ খতিয়ান নং ৯৫/৯৬/৯৭ এবং জে এল নং ৫-এ অন্তর্ভুক্ত ৭৫ শতাংশ জমি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ আদালতে দেওয়ানি মামলা (নং ১৩৪/১২) চলমান রয়েছে। মামলার প্রেক্ষিতে সহকারী জজ আদালত, বেতাগী কর্তৃক উক্ত ভূমিতে নিষেধাজ্ঞা আদেশ দারা বিবাদীদেরকে বারিত করেন। এমন নির্দেশনা থাকলেও তা উপেক্ষা করে প্রতিপক্ষরা লোকজন নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ করেন তারা।
ভুক্তভোগীর তথ্য মতে অভিযুক্তরা হলেন, মৃত্যু আঃ জব্বার এর ছেলে মো. জাফর ইকবাল, মৃত্যু আঃ জব্বার এর ছেলে মো. আলমগীর হোসেন, মৃত্যু আঃ আজিজ এর ছেলে মো. গফফার, আঃ গফফার এর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম শান্ত ও ছোটন। এরা সকলেই বরগুনার বেতাগী উপজেলার গড়িয়া বুনিয়া এলাকার বাসিন্দা। এছাড়াও বরগুনার তালতলী উপজেলার মো. রুস্তম আলী ঘরামি ছেলে মো. লিটন সহ আরও ৪০-৫০ জন এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মতিয়ার রহমানের প্রতিপক্ষরা সংঘবদ্ধভাবে হঠাৎ করে জমিতে প্রবেশ করে। তারা চাষের সরঞ্জাম নিয়ে মাঠে কাজ শুরু করলে জমির মালিক পক্ষ বাঁধা দেয়। এ সময় প্রতিপক্ষরা দেশীয় অস্ত্রসহ হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক চাষাবাদ শুরু করেন।
ভুক্তভোগী আলহাজ্ব মো. মতিয়ার রহমান হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, আমার মালিকানাধীন জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকাকালীন, একদল প্রভাবশালী ব্যক্তি জাল দলিল তৈরি করে জমিটি দখলের চেষ্টা করছে। তারা দেশীয় অস্ত্রসহ এসে আমাকে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বাঁধা উপেক্ষা করে জোরপূর্বক চাষাবাদ শুরু করে।
তিনি আরো জানান, অভিযুক্তরা ১৯৬৩ সালের খেপুপাড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে একটি ভুয়া ও জাল দলিল তৈরি করে সম্পত্তি আত্মসাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
বেতাগী বিবিচিনী ইউপি সদস্য মো. বারেক মুন্সী বলেন, আমার জানামতে, দীর্ঘদিন ধরে মতিউর রহমান ওই জমি চাষাবাদ করে আসছেন। তবে সম্প্রতি জাফর ইকবালের পরিবারের লোকজন ওই জমিতে চাষাবাদের চেষ্টা চালাচ্ছেন। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা চলছে বলে আমি শুনেছি।
মো. জাফর ইকবাল বলেন, আমরা বাপ-দাদার জমিতে বহু বছর ধরে চাষাবাদ করে আসছি। অন্যের জমি দখলের প্রশ্নই ওঠে না। আমাদের বিরুদ্ধে এটা একটা ষড়যন্ত্র ও মানহানির চক্রান্ত চলছে। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে দু’পক্ষের মধ্যে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মনিরুজ্জামান মনির বলেন, এ ঘটনার ব্যাপারে আমি শুনেছি। এখন পর্যন্ত দু’পক্ষের কোন পক্ষই লিখিত অভিযোগ করে নায়। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।