রাজশাহী তানোর প্রতিনিধি: গোলাম রাব্বানী (সফল)
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনও জাতীয় নির্বাচনের নির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না করলেও রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে ইতোমধ্যেই নির্বাচনী আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। মাঠপর্যায়ে প্রার্থীরা গণসংযোগে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এবং ভোটারদের কাছে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরছেন।
৪ লক্ষাধিক ভোটারের এই আসনে শহরকেন্দ্রিক রাজনীতির প্রভাব লক্ষণীয়। একসময় বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এলাকা হলেও ২০০৮ সালের পর থেকে এটি আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এবারের নির্বাচন ঘিরে আসনটি ফেরত নিতে চায় বিএনপি। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে মাঠে সক্রিয় রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। একই সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জাতীয় পার্টি, খেলাফতে মজলিস, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি)সহ একাধিক রাজনৈতিক দলও প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেতে আগ্রহী একাধিক নেতা। আলোচনায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক কমিটির সহ-সভাপতি শফিকুল হক মিলন, রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্য রায়হানুল আলম রায়হান এবং সাবেক ভূমি প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত অ্যাডভোকেট কবির হোসেনের ছেলে নাসির হোসেন অস্থির। এছাড়া মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকায় আছেন জেলা বিএনপির সদস্য আব্দুস সামাদ এবং সাবেক ছাত্রদল নেতা ও প্রাক্তন এমপি আবু হেনার নাতি ইকবাল হোসেন।
মাঠপর্যায়ে শফিকুল হক মিলন ও রায়হানুল আলম রায়হান বেশি সক্রিয়। তারা দুই উপজেলা জুড়ে বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি প্রচার করছেন। শফিকুল হক মিলন বলেন,
“পবা-মোহনপুরে আমি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। বিএনপি নির্বাচনী দল, তাই জনগণের স্বার্থে আমরা তারেক রহমানের নির্দেশে কাজ করছি। নির্বাচন ঘনিয়ে এলে আমাদের শক্তি আরও স্পষ্ট হবে।”
রায়হানুল আলম রায়হানও দীর্ঘদিনের রাজনীতিক। তিনি গত দুইবার দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তিনি জানান,
“স্থানীয় হিসেবে সব সময় এলাকার মানুষের পাশে থেকেছি। এখন বিএনপির ৩১ দফা জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছি। আশা করছি এবার দল আমাকে মূল্যায়ন করবে।”
এ আসনে বিএনপির আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী নাসির হোসেন অস্থিরের পক্ষেও নেতাকর্মীরা সক্রিয়ভাবে সভা-সমাবেশ করছেন।
অন্যদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ইতিমধ্যেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে। পবা উপজেলার হড়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জামায়াতের কাশিয়াডাঙ্গা থানা সুরা কর্মপরিষদের সদস্য অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদকে মনোনীত করা হয়েছে। মনোনয়নের পর তিনি সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও জোরদার করেছেন। তার দাবি,
“দেশে পরিবর্তনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। জনগণ পরিবর্তন চায়, আর জামায়াতে ইসলামী মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। পবা-মোহনপুরে আমরা বিজয়ের জন্য প্রস্তুত।”
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে শোনা যাচ্ছে জেলা যুগ্ম সমন্বয়কারী নাহিদুল ইসলাম সাজুর নাম। তিনি বলেন,
“দলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। তবে জনগণের কল্যাণে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি এবং সুযোগ পেলে সর্বোচ্চ দেওয়ার চেষ্টা করব।
এছাড়া জাতীয় পার্টির সালাম খান, খেলাফতে মজলিসের ফজলুল হক এবং আমার বাংলাদেশ পার্টির আফজাল হোসেনও প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে ভোটারদের প্রত্যাশা দলমত নির্বিশেষে নির্বাচিত এমপি যেন এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখেন।