আরিফ হোসাইন, বরগুনা :
বরগুনার পাথরঘাটায় বলেশ্বর নদীতে মাছ ধরত গিয়ে নিখোঁজের তিন দিন পর সিদ্দিকুর রহমান (৩০) নামের এক জেলের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের বড়টেংড়া হাজিরখাল এলাকার মৃত জেলে আব্দুল মান্নার বড় ছেলে। সাত বছর আগে একই নদীতে মাছ শিকারে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন তার বাবা।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে পাথরঘাটা সংলগ্ন বলেশ্বর নদীর বিহঙ্গদ্বীপের উত্তর পাশে ধানসীর ভেতর থেকে সিদ্দিকুর রহমানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে বাড়ি থেকে বলেশ্বর নদীতে মাছ শিকারে বের হয়ে আর ফেরেননি তিনি। পরে তার নৌকাটি ডুবন্ত অবস্থায় পাওয়া গেলেও নিখোঁজ ছিলেন সিদ্দিকুর।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত তিন দিন আগে বলেশ্বর নদীতে মাছ শিকার করতে গিয়ে নিখোঁজ হন সিদ্দিকুর রহমান। স্বজনরা বলেশ্বর নদীতে খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারাও জেলে সিদ্দিকুর রহমানকে খুঁজতে বের হন। এক পর্যায়ে ডুবন্ত অবস্থায় তার নৌকাটি পেলেও সিদ্দিকুর রহমানকে আর পাওয়া যায়নি। পরে বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটার দিকে গরুর খাবারের জন্য ধারসি কাটার সময় কিছু লোক বিহঙ্গদ্বীপ এর উত্তর পাশে পড়ে থাকতে দেখেন সিদ্দিকুর রহমানকে। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারা গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
নিহতের স্ত্রী মনিরা আক্তার জানান, পরিবারের একমাত্র উপার্জন করার ব্যাক্তি ছিলেন তার স্বামী। তাদের সংসারে ৯ ও ২ বছরের দুজন কন্যা সন্তান রয়েছে এবং তার স্বামীর ছোট দুজন ভাই রয়েছে। সিদ্দিককে দিয়েই তাদের ভরশা এবং সংসার চলতো। তিনি আরো জানান, সাত বছর আগে তার শশুরও এই বলেশ্বর নদীতে মাছ শিকারে গিয়ে নিখোঁজ হন।পরে পুরো সংসারের দায়িত্ব ছিল তার স্বামীর উপরে।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন লিডার মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়। নিখোঁজের তিন দিন পর বৃহস্পতিবার দুপুরে মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মেহেদী হাসান বলেন, দুদিন ধরেই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকায় নদীতে ৩ নম্বর সংকেত চলছে, এবং নিখোঁজেরদিন ওই এলাকায় বজ্রপাত হয়েছিলো বলে প্রত্যক্ষদর্শী কিছু জেলেরা আমাদেরকে জানিয়েছেন। নিখোঁজের পরে খোঁজাখুঁজি করে শুধু তার জালসহ নৌকা পাওয়া গিয়েছিলো। আজ তার মরদেহ পাওয়া গিয়েছে। মরদেহের বিভিন্ন জায়গায় ফোসকা থাকায় ধারণা করা হচ্ছে তিনি বজ্রাঘাতে মৃত্যুবরণ করেছেন। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় নৌ পুলিশ নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।