সাজ্জাত হোসেন,কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ
উপমহাদেশের বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়। তার জন্ম কলকাতার গড়পার রোডে। তিনি থেকেছেন বিশপ লেফ্রয় রোডে। তবে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের বাড়ি বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রামে।
জরাজীর্ণ সেই বাড়ির সামনে একটি বোর্ডে লেখা, ‘অস্কার বিজয়ী সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি’। সেই সঙ্গেই আরেকটি বোর্ডে লেখা ওই বাড়িটি ‘সংরক্ষিত পুরাকীর্তি’। সেটি ‘অধিগ্রহণ’ করেছে বাংলাদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।
যদিও এই বাড়িতে কোনো দিন আসেননি বিশ্ববরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়। তবে সেখানে ছিলেন সত্যজিৎ রায়ের প্রপিতামহ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী এবং তার দাদা সারদারঞ্জন রায়। কিশোরগঞ্জে বাড়িটি পরিচিত ‘জমিদার বাড়ি হিসাবে’।
মসূয়ার জমিদার ছিলেন হরিকিশোর রায়চৌধুরী। প্রায় ৪ দশমিক ৩ একর জায়গা জুড়ে থাকা সেই জমিদার বাড়ির অধিকাংশই বিলীন হয়ে গেছে কালের গর্ভে। ছাদহীন দোতলা বাড়ি এখন পিলারের ওপর ভর করে কোনো রকমে টিকে আছে। তবে ছাদের কার্নিশের নিচে টেরাকোটার কারুকার্য এখনো দৃশ্যমান।
যদিও এখন বাড়িটির সংস্কার কাজ চলছে। গত মাসে এই সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। ওই বাড়ির সামনে সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি লেখা হলেও গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে সেটি পরিচিত ‘জমিদার বাড়ি’ হিসাবে। তারা জানেন, সত্যজিৎ রায় কলকাতায় সিনেমা বানাতেন।
বছর দুয়েক আগে এই বাড়িতে একটি শুটিং করেছিলেন কলকাতার পরিচালক প্রসূন রহমান। ছবির নাম ছিল ‘প্রিয় সত্যজিৎ’। তিনি জানান, ‘গ্রামের লোকজন জানেন সত্যজিৎ রায় একজন বিশ্ব বিখ্যাত পরিচালক। তবে, গ্রামের বর্তমান বাসিন্দারা সত্যজিতের বংশের কাউকেই দেখেননি।’
যদিও বাড়িটির একটা আলাদা গুরুত্ব আছে। এই বাড়িতেই সারদারঞ্জন রায় উপেন্দ্রকিশোরসহ চারভাইকে নিয়ে গড়েছিলেন ক্রিকেট ক্লাব। মসূয়া গ্রামের এই জমিদার বাড়ির মাঠেই ক্রিকেট খেলা শুরু করেছিলেন তিনি।