এম জাফরান হারুন::
পটুয়াখালীর বাউফলে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার ফাঁসির দাবিতে বাউফলে কর্মরত সাংবাদিকদের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) বেলা ১২টায় বাউফল প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়। উপজেলায় কর্মরত সকল পর্যায়ের ও স্থানীয় পেশাদার সাংবাদিকরা এ মানববন্ধনে অংশ নিয়ে হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে জোরালো বক্তব্য দেন।
মানববন্ধনে জাতীয় দৈনিক খবর বাংলাদেশ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ও বাউফল সাংবাদিক ক্লাব এর সভাপতি শেখ মোঃ জাফরান আল হারুন বলেন, তুহিন হত্যার সন্ত্রাসীদের অতি দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ডকে একটি নির্মম ও পরিকল্পিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করেন এবং দোষীদের দ্রুত বিচার ও ফাঁসি কার্যকরের দাবি জানান।
দৈনিক প্রথম আলোর উপজেলা প্রতিনিধি এবিএম মিজানুর রহমান বলেন, সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা, কিন্তু আজ এই পেশাকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে হুমকি ও ভয়ভীতির কালো ছায়ায়। তুহিন হত্যাকাণ্ড শুধু একজন সাংবাদিককে হত্যা নয়, এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে হত্যার চেষ্টা। আমরা চাই অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। এবং দ্রুত ফাঁসি দেওয়া হোক। যাতে করে ভবিষ্যতে এমন কাজ করতে কেউ সাহস না পায়।
দৈনিক মানবকণ্ঠ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি ও বাউফল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন বলেন, “সাংবাদিকদের রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে বাংলাদেশের মাটি। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে যারা জড়িত, তাদের বিচার না হলে কোনো সাংবাদিকই নিরাপদ নয়। সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অবশ্যই এই মামলায় দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি ও প্রেসক্লাব সভাপতি জলিলুর রহমান বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের আয়না। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তুহিন হত্যাকাণ্ডের বিচার যদি ঠিকমতো না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আরও সাংবাদিক হত্যার ঘটনা ঘটবে। আমরা চাই হত্যাকারীদের ফাঁসির রায় কার্যকর হোক।
দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি ও বাউফল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অতুল চন্দ্র পাল বলেন, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন গাজীপুরে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে সক্রিয়ভাবে কাজ করতেন। গত বৃহস্পতিবার একদল সন্ত্রাসীরা তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তিনি স্থানীয় অপরাধী চক্র ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন, যা তার হত্যার পেছনে মূল কারণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই হত্যাকাণ্ড সারা দেশে সাংবাদিক সমাজকে নাড়া দিয়েছে এবং ন্যায়বিচারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। তুহিন হত্যাকাণ্ডের দ্রুত ও স্বচ্ছ বিচার নিশ্চিত করতে হবে। হত্যাকারীদের ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হবে।
সাংবাদিক বক্তরা আরও বলেন, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ আইন প্রণয়ন করতে হবে। সাংবাদিক হত্যার সকল মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।সাংবাদিকতার স্বাধীনতা রক্ষায় সরকার ও প্রশাসনকে কঠোর ভূমিকা রাখতে হবে।
সাংবাদিকরা আরও জানিয়েছেন, যদি তাদের দাবি অনুযায়ী দ্রুত বিচার না হয়, তাহলে তারা আরও বড় আন্দোলনের পরিকল্পনা করছেন। আগামী সপ্তাহে জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে।
সাংবাদিক তুহিনের হত্যাকাণ্ড শুধু স্থানীয় পর্যায়ে নয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দৃষ্টিও আকর্ষণ করেছেন বাউফলের কর্মরত সাংবাদিকরা।
সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যাকাণ্ডের বিচার ও ন্যায়বিচারের দাবিতে বাউফলের সাংবাদিকদের এই মানববন্ধন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় একটি জোরালো বার্তা দিয়েছে। সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে এখন দায়িত্ব হলো, এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত দ্রুত শেষ করে দোষীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা। নইলে সাংবাদিকতা পেশা আরও অনিরাপদ হয়ে উঠবে, যা গণতন্ত্র ও মুক্ত মত প্রকাশের জন্য হুমকিস্বরূপ।