নিজস্ব প্রতিবেদক
উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অবস্থান অভিযোগ পত্র দাখিল
রাজধানী শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ ও সাকিবের বিরুদ্ধে গোপনে মেয়েদের অশ্লীল ছবি তোলা, ইভটিজিং,সাধারণ শিক্ষার্থীদের টাকা আত্মসাৎ ও নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় ভিসির বাসভবনের সামনে সাধারণ শিক্ষিত জড়ো হয়। উপাচার্য মহোদয় অনুপস্থিত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর জনাব আরফান আলির নিকট অভিযোগপত্র তুলে দেন। দ্রুত সামাদ এবং সাকিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তারা অনশন এবং ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায় শেকৃবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ ৫ই আগস্ট এর পূর্বে রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় ছিল এবং একটি চাকরিতে ছিল জুলাই আন্দোলনে তার কোন ভূমিকা না থাকলেও ২০২৪ সালের ৫ ই আগস্ট এর পর সে ছাত্রত্ব না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে হলে অবৈধভাবে অবস্থান করে নেয়। তার ছাত্রদলের পদ ব্যবহার করে ক্যাম্পাসে নানান অপকর্ম শুরু করেন। সাধারন ছাত্রদের তার গ্রুপ করার জন্য সামাদ ও তার সঙ্গীসাথীরা বিভিন্নভাবে বল প্রয়োগ করতেন। যার অন্যতম সহযোগী ৮৩ ব্যাচের সাদমান সাকিব।সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পত্র থেকে দেখা যায় সাদমান সাকিব সামাদের হয়ে তার ব্যাচের বিভিন্ন মেয়েদেরকে প্রেমের প্রস্তাব দিতে থাকে। ক্যাম্পাসের চাকরির লোভ দেখিয়ে অনেক মেয়েকে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করার কথা বলে। এর পাশাপাশি অনেক মেয়েদের অনুমতি ছাড়া তাদের বিভিন্ন রকম অশ্লীল ছবি তোলে।সেগুলো দিয়ে মেয়েদেরকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করে। প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা কাটিয়ে সামাদ ও সাকিব মেয়েদের একাডেমীক লাইফ ধ্বংস করে দেওয়ার হুমকি দেয়। যার স্ক্রিনশট প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। অভিযোগ পত্র অনেকে নিরাপত্তাহীনতার কথা তুলে ধরে। অনেক মেয়ে মানুষিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করে।কিন্তু প্রভাবশালী সামাদের কারণে সাকিব কিংবা অন্যদের কিছু বলার সাহস পায়নি।
এছাড়া সাকিব সিআর থাকাকালীন সাধন শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন টাকা আত্মসাৎ এর প্রমাণসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগপত্রে দেখা যায় বিভিন্ন মেয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে বলে গুজব ছড়ানোর হুমকি দেন।
রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সামাদ ইতিপূর্বে পাশের শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তরের একটি ভবন থেকে ইতিপূর্বে তিন ট্রাক মালামাল ক্যাম্পাসে নিয়ে বিক্রি করে দেয়ার জন্য নিয়ে আসেন,পরবর্তীতে বাধার মুখে সেটি আর বিক্রি করতে পারেননি বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউজ পোর্টালে ইতিপূর্বে একটি নিউজ হয়েছিল।
এ ব্যাপারে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ও একই সঙ্গে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম সাদা দলের সভাপতি প্রফেসর জনাব আবুল বাশার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ডিসিপ্লিনারি কমিটির রয়েছে, অভিযোগ সেখানে উপস্থাপিত হলে যে কারো বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এছাড়া সামাদের নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে তিনি বলেন এরকম সুপারিশ তারা পেয়েছেন। তবে অনেকের এরকম সুপারিশ থাকে বলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টর প্রফেসর জনাব আরফান আলির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা তার কাছে এসেছিল, তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন, শিক্ষার্থীদের সেটি রবিবার নিয়ে আসতে বলেন।
ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন তিনি বাসায় আছেন এ বিষয়ে কিছু জানিনা। নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগের বিষয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলে হলে তিনি বলেন নিয়োগের বিষয়টি সম্পূর্ণ প্রশাসনের দায়ভার।সাদমান সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৪ বছর মাশরাফি ইসলাম উৎস তার একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে সামাদ ও সাকিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরেন।
২৪ বছর আরেকজন শিক্ষার্থী সৈকত জানান দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রদলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তার গ্রুপ করার জন্য নানাভাবে প্রেসার ক্রিয়েট করেন। সাদমান সাকিব আব্দুস সামাদের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় নানা অপকর্ম করছেন বলে জানান।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৮৩ ব্যাচের দুজন নারী শিক্ষার্থীর একজন বলেন অভিযোগ পত্রে আমরা আমাদের কথা বলেছি। আরেকজন এ বিষয়ের সত্যতা জানান এবং বলেন সামাদ এবং সাকিব অনেক প্রভাবশালী।তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার ক্ষমতা কারো নাই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় তারা অভিযোগপত্র দায়ের করে প্রশাসনকে ৭২ ঘন্টা সময় দিয়েছেন সাকিবকে বহিষ্কার করার জন্য এবং সামাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অন্যথায় তারা অনশনে যাবেন অথবা ক্লাস বর্জন করবেন।