
শাহাদাত হোসেন রুবেলঃ
চন্দ্রমোহন ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বহুদিন ধরে জিম্মি ছিল ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি চুন্নু এবং তার ভাই পান্নার দৌরাত্ম্যে। সরকারি সম্পদ লুট, চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি ও সন্ত্রাস—তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকা দীর্ঘ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বছরের পর বছর তারা প্রকাশ্যে সরকারি বৈদ্যুতিক তার চুরি করলেও ক্ষমতার দাপটে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না।
সেই ভয়ঙ্কর সিন্ডিকেটের আস্তানা ফাঁস হলো অবশেষে। চুন্নু ও পান্নার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার সরকারি বৈদ্যুতিক তার। আরও জানা গেছে, এই চক্র দীর্ঘদিন ধরে ভোলা-বরিশাল বিদ্যুৎ সংযোগ লাইনের বহু কোটি টাকার তার চুরি করে পাচার করে আসছিল। যে প্রকল্পে সরকারের বিনিয়োগ ছিল কয়েকশো কোটি টাকা—সেই লাইনের তার কেটে একের পর এক বিক্রি করেছে তারা।
স্থানীয়রা জানান, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সুযোগ বুঝে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। রাতের অন্ধকারে সরকারি বৈদ্যুতিক তার কেটে নেওয়া, পাহারাদারদের ভয়ভীতি দেখানো, এলাকার মানুষকে জিম্মি করে রাখা—সবই করত প্রকাশ্যে। তাদের বিরুদ্ধে আগে বহু অভিযোগ উঠলেও রাজনৈতিক আশ্রয়ে তারা ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে।
অভিযানের খবর পেয়ে চুন্নু–পান্না গং রাতারাতি পালিয়ে যায়। এলাকাবাসীর ভাষ্য—“ওরা এখানে ছোট সরকার ছিল। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই বিপদ।”
এলাকাজুড়ে এখন একটাই দাবি—
এই তারচোর সিন্ডিকেটকে গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনাকে ‘বড় ধরনের রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। পলাতক দুই ভাইকে গ্রেপ্তারের জন্য বিশেষ অভিযান চলছে এবং এ চক্রে জড়িত আরও যাদের নাম পাওয়া যাচ্ছে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
এ ব্যাপারে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, আমি এ ব্যাপারে অবগত আছি, খুব শিগগিরই দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।