1. info@www.dailybdcrimetimes.com : দৈনিক বিডি ক্রাইম টাইমস.কম :
শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ১২:১৮ অপরাহ্ন
Title :
জলঢাকা উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকগনের পদোন্নতির লক্ষ্যে কমিটি গঠন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত গাজীপুরে নারী সাংবাদিকের সাথে তিতাসের ম্যানেজারের অসৎ আচরণের অভিযোগ বাউফলে লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে মানববন্ধন পন্ড, বিএনপি নেতার দাবী অনর্থক অপরাজনীতি রংপুরে দুই উপজেলায় পরীক্ষার সেন্টারে নকলের ভিডিও করায় ৬ সাংবাদিকের উপর হামলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে জুলাই যোদ্ধাদের আর্থিক অনুদানের চেক প্রদান স্ত্রী মায়ের গায়ে হাত তোলায় ক্ষোভ কষ্টের ইতি টানলেন এএসপি পলাশ সাহা সাংবাদিক নির্যাতন হামলা মামলা সহ দাবি আদায়ে কলম বিরতির ঘোষণা রূপগঞ্জে কাস্টমস্ কর্মকর্তা পরিচয়ে ছিনতাই হওয়া তেল উদ্ধার, গ্রেফতার তিন রহস্যময় ঐতিহ্যবাহী শাহ সূফী হযরত ইয়ারউদ্দীন খলিফা (রঃ) মাজার ও জীবনী কাতারে মৌলভীবাজার জেলা জাতীয়তাবাদী ফোরামের অভিষেক

দেশি পণ্য কিনুন, দেশের শিল্প ও শিল্পীকে বাঁচান : বিপ্লব সাহা

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২০
  • ১৫১ Time View
ছবি : সংগৃহীত

কে জানত, একটি ক্ষুদ্র ভাইরাস পুরো বিশ্বের খোলনলচে পাল্টে দেবে। লকডাউন, হোম কোয়ারেন্টিন, সেলফ-আইসোলেশন—এমন নানা শব্দ আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে মানুষকে। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে সর্বত্র। জীবন থেকে শিল্প, সর্বত্রই করোনার অকরুণ হানা। যদি না টেকে জীবন, শিল্প কি টেকে? তাই জীবন বাঁচাতেই উক্ত শব্দগুলো। জীবন বাঁচাতেই সামাজিক-শারীরিক দূরত্ব।

দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের ফ্যাশন শিল্প অঙ্গনে দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালনে-পালনে অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান ‘বিশ্বরঙ’। বহু মানুষের ঘামে-শ্রমে তৈরি হয় একটি পোশাক। সুতা থেকে সেলাইকারী, পূর্ণ পোশাক তৈরিতে অনেকের নান্দনিক চোখ ও মস্তিষ্ক যুক্ত। আর সে পোশাকের গায়ে যদি স্বদেশের চেতনার রং থাকে, তাহলে তো কথাই নেই। হয়ে ওঠে অনন্য। এমনই এক রূপকারিগর বিপ্লব সাহা। যিনি বিশ্বরঙের কর্ণধার। যদিও তাঁর মূল পরিচয় তিনি একজন শিল্পী।

বাঙালির নানা পালা-পার্বণ, পবিত্র দুই ঈদ ও পূজার সময়গুলোতে পোশাকের রঙেও আসে ভিন্নতা। রয়েছে ষড়ঋতুর বৈচিত্র্য। ঋতুকালীন বৈচিত্র্যের সঙ্গে রঙের খেলা ফুটে ওঠে পোশাকেও। তাই সারা বছরই নানা ভাবনার আভায় উজ্জ্বল হয় আমাদের পোশাক। বিপ্লব সাহাও দিনমান মেতে ওঠেন রঙের খেলায়। ছোট শিশু থেকে বয়স্কদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে তিনি তৈরি করেন পোশাকের ডিজাইন। সেখানে থাকে সুচিন্তার ছাপ, দেশের ঐতিহ্যের মিশেল। যোগাযোগব্যবস্থার উৎকর্ষে যেহেতু বিশ্বগ্রামের ধারণাও আমাদের অজানা নয়, তাই পছন্দের তালিকায় থাকে ফিউশনও। মানে, বিশ্বসংস্কৃতির যোগ।

আর তাই পোশাকের বৈচিত্র্যে ধীরে ধীরে মানুষের মনের কোণে স্থান করে নিয়েছে বিশ্বরঙ। ঢাকায় নয়টি আউটলেটসহ পুরো বাংলাদেশে বিশ্বরঙের আউটলেটের সংখ্যা ২২টি। সারা বছরই মানুষ পোশাক কেনেন। তাই আগে থেকেই প্রস্তুত থাকে এ প্রতিষ্ঠান। ক্রেতার চাহিদায় যেন কোনোরকম ঘাটতি না থাকে।

কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। আকস্মিক করোনার হানায় বিশ্বজুড়ে লকডাউন। বাংলাদেশও এর প্রভাবমুক্ত নয়। দোকানপাট, শপিং মলগুলো প্রায় বন্ধ। প্রাণ বাঁচাতে যেখানে সামাজিক দূরত্বই মুখ্য, সেখানে পোশাকের বাজার ক্ষতির মুখে পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। বাঙালির অন্যতম বড় সামাজিক-সাংস্কৃতিক উৎসব পহেলা বৈশাখ। এবারের বৈশাখে তাই বেশ মন্দা কেটেছে ফ্যাশন হাউসগুলোর। যেহেতু প্রায় একবছর আগে থেকে পোশাক-প্রস্তুতি শুরু হয়, তাই বৈশাখে করোনার উপদ্রব অনেকটা আকস্মিক ছিল। আর তাই ক্ষতি এড়াতে পারেনি এ শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলো।

বিশ্বরঙের কর্ণধার বিপ্লব সাহা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বৈশাখের আয়োজন যেহেতু অনেক আগে শুরু হয়, তাই পোশাক তৈরি হয়ে গিয়েছিল। এবারের বৈশাখে ফ্যাশন হাউসগুলো চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। পুরো ইন্ডাস্ট্রিতে তিন থেকে চার হাজার কোটির টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। বৈশাখ বড় উৎসব। এর পোশাকও আলাদা। তাই বৈশাখের পোশাক মানুষ অন্য সময় পরে না।’ এবারের বৈশাখে তাঁর নিজের প্রতিষ্ঠানেও আর্থিক ক্ষতি হয়েছে পাঁচ থেকে সাত কোটি টাকার মতো।

বিপ্লব সাহা জানান, পহেলা বৈশাখ ও পবিত্র ঈদুল ফিতর, এ দুই উৎসবকে কেন্দ্র করে ফ্যাশন হাউসগুলো পোশাক তৈরি করে বেশি। কারণ এ সময়েই পোশাক বিক্রি হয় সারা বছরের বিক্রির ৪০ শতাংশ। বাকিটা অন্যান্য উৎসবকে কেন্দ্র করে। তাই করোনার হানায় এবার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে অনেক।

আর কিছুদিন পরেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। কিন্তু করোনার কারণে দেশের বেশিরভাগ মার্কেট ও শপিং মল বন্ধ। ঘর থেকে বের হওয়াই অনিরাপদ। ঈদকে কেন্দ্র করে ফ্যাশন হাউসগুলোর যে ব্যবসা হতো, সেটাও এবার আর হচ্ছে না। অনলাইনে অনেকে পোশাক কিনছেন। তবে সেটার সঙ্গে স্বাভাবিক অবস্থার তুলনাই চলে না। বৈশাখী ব্যবসার ধাক্কা তাই সামলে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না কারও। ঈদের বাজারও মন্দা। তবে আশা হারাতে চান না বিপ্লব সাহা। বৈশ্বিক যুদ্ধের রেশ মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় কী!

তবে থেমে নেই বিশ্বরঙ। ঈদের আয়োজনে বৈচিত্র্যময় পোশাক যুক্ত করেছে এ প্রতিষ্ঠান। বিপ্লব সাহা জানালেন, তাঁদের রাজধানীর উত্তরা, বনশ্রী, লালমাটিয়া, বনানী, ওয়ারী; দিনাজপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জের আউটলেট এখন খোলা। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলছে আউটলেটগুলো। তা ছাড়া অনলাইনে পোশাক বিক্রি করছেন, দিচ্ছেন হোম ডেলিভারি। অর্ডার এলে ঢাকার বাইরে কুরিয়ারে পৌঁছে যাচ্ছে পোশাক।

বিপ্লব সাহা বলেন, ‘ঈদের পোশাকের ক্ষেত্রেও আমরা মৌসুমের কথা মাথায় রাখি। এখন যেহেতু গ্রীষ্মকাল, তাই পোশাকও ঋতুর সঙ্গে মানানসই হতে হবে। ঋতুর কথা মাথায় রেখেই কাপড়, ডিজাইনের মোটিভ ও রং করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বরঙের পোশাক সব বয়সীদের জন্য। তরুণদের জন্য ফিউশন-ফেইস রং, বয়স্কদের জন্য শ্রদ্ধা—এমন নানা ফর্মে সাজানো হয় পোশাকভাবনা। আমরা সরাসরি তাঁতিদের কাছ থেকে পোশাক আনি। আবার তার ওপর এমব্রয়ডারি বা কারচুপি, এমন নানা কিছুও অ্যাপ্লাই করি। আমাদের পোশাক যেহেতু বেশিরভাগ মধ্যবিত্তদের কথা ভেবে তৈরি, তাই মূল্যেও ক্রেতা চাপ অনুভব করেন না। উচ্চবিত্তদের জন্যও রয়েছে পোশাক। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন ক্যাগাগরিতে ভাগ করে আমরা দামের ব্যাপারটি সাজাই। সব ধরনের ক্রেতা যেন কিনতে পারেন, সেটা ভেবেই আমরা দাম নির্ধারণ করি।’

তবে বিশ্বরঙের ব্যবসা যেহেতু শোরুমকেন্দ্রিক, তাই করোনাকালে অনলাইনের ওপর নির্ভর করে ব্যবসা আগের মতো রমরমা হবে না বলেই মত বিপ্লব সাহার।

‘কিন্তু উপায় কী। এই যুদ্ধ বিশ্বের। এই যুদ্ধ বাংলাদেশেরও। এই ক্ষতি কীভাবে কাটিয়ে উঠব, জানি না। আগে মানুষকে বাঁচতে হবে। ১৬ কোটি মানুষকে সচেতন হতে হবে। নইলে দিনশেষে পুরো দেশই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে,’ যোগ করেন বিপ্লব সাহা।

বিপ্লব সাহা মনে করেন, এখন সবার উচিত দেশি পণ্য কেনা। বাইরের পণ্য কেনায় নিরুৎসাহ করা উচিত সংশ্লিষ্ট সবাইকে। কারণ, দেশের শিল্পকে তো আগে বাঁচাতে হবে।

‘এখন সবার উচিত হবে দেশি পণ্য কেনা। বিদেশি পণ্য কেনা ঠিক হবে না। নইলে দেশি পণ্যের ব্যবসায় ধস হবে। ফ্যাশন হাউসগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে। বিদেশি পণ্য যেন দেশে কম আসে, সে জন্য সরকারকেও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা স্বদেশকে আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরছি, ঐতিহ্য তুলে ধরছি। আমরা না বাঁচলে দেশের শিল্প ও শিল্পী বাঁচবে না,’ বলেন বিপ্লব সাহা।

বাংলাদেশ খুব দ্রুত করোনার ভয়াল থাবা থেকে মুক্তি পাবে, এ আশা বিপ্লব সাহার। মানুষ যেন সচেতন হন, আর মনোবল দৃঢ় রাখেন, এ আহ্বান বিশ্বরঙের কর্ণধারের।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved
প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং