ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে চর হাজিগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা দখল ও ভবনের পিলার ভাঙার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী একটি পরিবারের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে চরভদ্রাসন থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য ফরিদপুরের লক্ষ্মীপুরে বাসিন্দা তারা ডাক্তারের ছেলে আব্দুল কাদের সহ ওই পরিবারের আরো ১৫/১৬ জন।
গতকাল সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের পুরান ভবনের ২টি পিলার ভেঙ্গে ২১ শতাংশ জায়গা জুড়ে বাউন্ডারির কাজ চলছে। বাউন্ডারির মধ্যে উপজেলা পরিষদের একতলা একটি ডাকবাংলার ভবন রয়েছে ও বিদ্যালয়ের চারতালা ফাউন্ডেশনের এক তালা ভবনের পিলার পর্যন্ত নির্মিত ভবন রয়েছে। সেখান থেকে একতলা ভবনের দুটি পিলার ভেঙে বাউন্ডারি করা হয়েছে। সাথেই উপজেলা পরিষদের নির্মিত একতলা ভবনের ডাকবাংলা দখল নেয়ার পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে চরহাজীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রহমত আলী বাদী হয়ে চরভদ্রাসন থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা যায়, দখলদারদের পূর্বপুরুষ ২৮ শতাংশ জমির মালিক এরমধ্য ১৯৬২ সালে ১৫ শতাংশ জায়গা সরকার বাহাদুর একোয়ার করে বাকি ১৩ শতাংশ জায়গা চরহাজিগঞ্জ জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়ের নিকট ১৯৬৪ সালে বিক্রি করে। পরবর্তীতে চর হাজিগঞ্জ জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়ের এই ১৩ শতাংশ সহ ৩৩ শতাংশ জমি চর হাজিগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়।
দখলদারদের দাবি সরকার বাহাদুর একওয়ারকৃত ১৫ শতাংশ জায়গা তাদেরকে ফেরত দিয়েছে। অথচ ওই ১৫ শতাংশ জায়গার মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি অফিসের নামে ৮ শতাংশ রেকর্ড এবং তাদের একটি একতলা ভবন ছিল ২০০১ সালের নদী ভাঙ্গনে ভবনটি নিলামে বিক্রি করে দেয় আর সাত শতাংশ জমির উপর চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের একটি এক তলা ভবনের ডাকবাংলা এখনো বিদ্যমান।
দখলদাররা ২০১২ সালে এ ব্যাপারে একটি সত্তর মামলা করলে ২০১৯ সালের রাইতে তারা কোন জমি পায় না। ২০১৯ সালে আবার তারা আপিল করে আপিলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবহেলায় দখলদাররা একতরফা ভাবে ২১ শতাংশ জমির রাই পায়। রাইতে বলা হয়েছে ৬০ দিনের মধ্যেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাদী পক্ষের জমি বুঝিয়ে দিতে এর ব্যত্যয় হলে কোট তাদেরকে উক্ত জমি বুঝিয়ে দিবে।
কিন্তু বাদী পক্ষ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও কোর্টের তোয়াকা না করে ২১ শতাংশ জায়গা বাউন্ডারি করে ঘিরে রেখেছে।এতে এলাকার সর্বসাধারণের মনে বিরাট ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক বর্তমানে অবসরে আছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খবির উদ্দিন মাস্টার বলেন, ১৯৬৪ সালে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে উক্ত জায়গা আমাদের দখলে পরবর্তীতে বিএস রেকর্ড আসলে ১৮২৬ দাগ নম্বরে বিদ্যালয়ের নামে রেকর্ড হয়। ২০০১ সালে বিদ্যালয়ে নতুন ভবনের বরাদ্দ এলে উক্ত জায়গা চারতলা ফাউন্ডেশনের একটি একতলা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে পিলার পর্যন্ত উঠে পরবর্তীতে পদ্মা নদীর প্রবল ভাঙনে বিদ্যালয়ের কাছাকাছি ভাঙ্গন আসলে ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সেই ভবনের অর্ধেক সহ কিভাবে দখলদাররা বাউন্ডারি করে দখল করে নেয় আমার মাথায় আসেনা।
চর হাজিগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আসমা বেগম বলেন, উক্ত জায়গায় বিদ্যালয়ের নামে ১২শতাং শ জায়গা রেকর্ড হয়েছে অথচ মামলায় আমাদেরকে বিবাদী করা হয় নাই আমাদেরকে বিবাদী না করে কিভাবে তারা রাই পায়।
চর হাজিগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল খন্দকার বলেন, যথাযথ আদালতের মাধ্যম ছাড়া জোর করে বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করতে চাইলে আমরা তা যেকোন মূল্যে প্রতিহত করব