নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম টেন মিনিট স্কুল অ্যাপে বাংলাদেশের ৬ষ্ঠ-১২শ শ্রেণির বোর্ড সিলেবাসের ওপর ৩৫,০০০ এরও বেশি ফ্রি ভিডিও লেকচার ও ৮২ হাজারেরও বেশি কুইজ আছে। পাশাপাশি টেন মিনিট স্কুলের অনলাইন ব্যাচে নিয়মিত লাইভ ক্লাস ও পরীক্ষার মাধ্যমে প্রস্তুতি নিয়ে প্রতি বছর ১০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পাচ্ছে। ভর্তি হচ্ছে দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।
– পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়ন নিয়েও নিয়মিত কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। স্পোকেন ইংলিশ, IELTS, সফটওয়্যার, সফট স্কিলস, ফ্রিল্যান্সিংসহ আরও অনেক ধরনের দক্ষতা উন্নয়নভিত্তিক কোর্স আছে টেন মিনিট স্কুলের।
– বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ শিক্ষামূলক এই অ্যাপটি ব্যবহার করছে ৬৭ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী। এছাড়াও টেন মিনিট স্কুলের ওয়েবসাইট, ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন কনটেন্ট দেখে প্রতি মাসে ১ কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী অনলাইনে পড়াশোনা ও স্কিল শিখছে।
– টেন মিনিট স্কুল আগামী প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও অন্যান্য নতুন প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজেদেরকে আরো দক্ষ ও উন্নত শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জন্যে কাজ করছে। তারা শিক্ষার্থীদের গুণগত শিক্ষা ও দক্ষতাভিত্তিক সহায়তা দিয়ে বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ট্যালেন্ট হাব হিসেবে তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। বিনিয়োগের এই অর্থ আরো অনেক নতুন শিক্ষামূলক কনটেন্ট তৈরি করার পাশাপাশি এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে ব্যবহার করা হবে।
ঢাকা, বাংলাদেশ, ৫ অক্টোবর ২০২৩ –
৬১ কোটি টাকা বিনিয়োগ পেয়ে সফলভাবে প্রি-সিরিজ এ ফান্ডিং রাউন্ড নিশ্চিত করলো দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান, টেন মিনিট স্কুল। ২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করা এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে ৬ষ্ঠ-১২শ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অনলাইন ব্যাচে লাইভ ক্লাস ও পরীক্ষার মাধ্যমে বোর্ড সিলেবাসভিত্তিক পড়াশোনা ও পরীক্ষা প্রস্তুতির নিয়মিত সহায়তা করছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থী ও চাকরির প্রত্যাশীদেরও প্রস্তুতিতে সাহায্য করছে টেন মিনিট স্কুল।
এই অ্যাপে বাংলাদেশের বোর্ড সিলেবাসের ওপর ৩৫ হাজারেরও বেশি রেকর্ডেড ভিডিও লেকচার আছে। এর পাশাপাশি ৮২ হাজারেরও বেশি কুইজ আছে। এছাড়াও মডেল টেস্ট, ই-বুক, ও লেকচার শিটের মতো শিক্ষামূলক রিসোর্স টেন মিনিট স্কুল নিয়মিত শিক্ষার্থীদের দিয়ে থাকে। এই রিসোর্সগুলো দেশের সেরা শিক্ষক এবং প্রফেশনালদের তত্ত্বাবধানে তৈরি। বাংলাদেশের সববৃহৎ এই শিক্ষামূলক অ্যাপটি ব্যবহার করছে ৬৭ লক্ষের বেশি শিক্ষার্থী। এছাড়াও টেন মিনিট স্কুলের ওয়েবসাইট, ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন কনটেন্ট থেকে প্রতি মাসে ১ কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী অনলাইনে পড়াশোনা করছে।
সারা দেশের কোটি কোটি শিক্ষার্থীদের জন্য পড়াশোনা ও সব ধরনের শেখাকে সহজলভ্য করে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া এই প্রতিষ্ঠানটির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে এই বিনিয়োগ। দেশের সবচেয়ে বড় অনলাইন শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে টেন মিনিট স্কুলের লক্ষ্য সবসময় শিক্ষিত ও দক্ষ মানুষ গড়ে তোলা। ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই টেন মিনিট স্কুল গুণগত পড়াশোনাকে সারাদেশের সব শিক্ষার্থীদের কাছে সহজলভ্য করে তোলা ও প্রথাগত ও ডিজিটাল শিক্ষা পদ্ধতির মধ্যকার দূরত্ব নিরসনের লক্ষ্যে কাজ করছে। টেন মিনিট স্কুলের ৫২% শিক্ষার্থী শহরের বাইরে, এবং তার মধ্যে ৩৪% শিক্ষার্থী মেয়ে। এই বিনিয়োগ একটি শিক্ষিত ও দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরিতে টেন মিনিট স্কুলকে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সাহায্য করবে।
“টেন মিনিট স্কুলে, আমরা সব সময় শিক্ষাকে সবার জন্য সহজলভ্য করার লক্ষ্যে কাজ করছি। এই বিনিয়োগ যে শুধু আমাদের লক্ষ্যকে সমর্থন দিচ্ছে তা নয়, এর পাশাপাশি তা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও দক্ষতা উন্নয়ন খাতে আমাদের ভূমিকাকে উৎসাহিত করেছে। বিনিয়োগকারীদের এই পর্বের বিনিয়োগের মাধ্যমে আগামী প্রজন্মকে পড়াশোনা ও দক্ষতা সম্পর্কিত উন্নত সহায়তা দিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা এখন আমাদের ভিশনকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।” – আয়মান সাদিক, সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিইও, টেন মিনিট স্কুল
এই পর্বের বিনিয়োগের নেতৃত্ব দেয় ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম কনজাংশন ক্যাপিটাল, এবং এই পর্বের পূর্ববর্তী বিনিয়োগকারী পিক ফিফটিনের সার্জ (পূর্বে সিকয়িয়া ক্যাপিটাল ইন্ডিয়া), বাংলাদেশ সরকারের সার্বভৌম ভেঞ্চার ফান্ড, স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড। দেশের নামকরা অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টরস, ভারতীয় ইউনিকর্ন ক্রেড-এর প্রতিষ্ঠাতা ও CEO কুনাল শাহ, প্রবীণ বাংলাদেশী অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টর, মাইএশিয়াভিসি এর ম্যানেজিং পার্টনার সাজিদ রহমান এবং বেশ কয়েকজন অন্যান্য স্থানীয় অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টরও অংশ নেন। এটি একটি বাংলাদেশী স্টার্টআপের জন্য সর্বোচ্চ সীড-স্টেজ ফান্ডরেইজিং, এতে টেন মিনিট স্কুলের এর মোট ফান্ডিংয়ের পরিমাণ এখন ৭৮ কোটি টাকা।
গত বছর থেকে, বিশ্বজুড়ে স্টার্টআপসমূহের সামগ্রিক কার্যক্রম ও গতিবিধি ধীরগতির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও বিনিয়োগের অভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে বিশ্বব্যাপী মাত্র $০.৫ বিলিয়ন বিনিয়োগ সংগ্রহ করা হয়েছে, যা ২০২২ সালে ছিল $১.৮ বিলিয়ন ডলার; এই হিসাব অনুযায়ী এড-টেক স্টার্টআপসমূহের ওপর এই প্রভাব পড়েছে আরো ভয়াবহভাবে। এই ম্যাক্রো রিয়েলিটি এবং বাংলাদেশের মতো একটি খুব প্রাথমিক পর্যায়ের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে থাকা সত্ত্বেও টেন মিনিট স্কুল তাদের বিভিন্ন প্রোডাক্ট ও সার্ভিসগুলোর গুণগত মান ও উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে নিজেদের ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছে। এবং এর ফলাফলস্বরূপ, দেশের শিক্ষার্থীদের কাছে টেন মিনিট স্কুলের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। টেন মিনিট স্কুল অ্যাপটি ডাউনলোড করা হয়েছে ৬৭ লাখেরও বেশি বার, এবং টেন মিনিট স্কুল থেকে নিয়মিত ফ্রি-তে শিক্ষাসেবা নিয়েছে ৩ কোটি ২০ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী। এই অ্যাপের পেইড ইউজার সংখ্যা সাড়ে ৬ লাখেরও বেশি।
“ভিসি উইন্টার এবং বিশ্বের চলমান অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে বিনিয়োগ পাওয়া বেশ রোমাঞ্চকর একটি অভিজ্ঞতা ছিল। সহপ্রতিষ্ঠাতা হিসেবে এটা আমাদের একাগ্রতার একটা পরীক্ষাও ছিল বলা যায়। এই চ্যালেঞ্জটি আমাদের মিশনকে সত্যি করার আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়িয়েছে যা আমাদের জন্য একটা অন্যরকম অভিজ্ঞতা হিসেবে কাজ করেছে। আমাদের সারাদেশে মানসম্মত শিক্ষাকে অনলাইনে সহজলভ্য করার এই যাত্রাকে সমর্থন করে আমাদের সঙ্গী হওয়ার জন্য আমরা বিনিয়োগকারীদের প্রতি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ।” – মির্জা সালমান হোসেন বেগ, সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিওও, টেন মিনিট স্কুল
“টেন মিনিট স্কুল এবং তাঁদের শিক্ষাব্যবস্থা/শিক্ষাপদ্ধতিকে পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়ার মিশন আসলে আমাদের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটানোর চলমান প্রতিশ্রুতির একটি চমৎকার উদাহরণ। টেন মিনিট স্কুলের বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে নতুনভাবে গড়ে তোলার এই জার্নিকে সাপোর্ট করতে পেরে আমরা ভীষণভাবে উচ্ছ্বসিত।”
– সামি আহমেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড
“টেন মিনিট স্কুলের এই গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ পর্বের একটি অংশ হতে পেরে আমরা ভীষণভাবে উচ্ছ্বসিত। এটা বাংলাদেশের মার্কেটে আমাদের প্রথম ভেঞ্চার, এবং আমরা বিশ্বাস করি আমাদের এই পার্টনারশিপ বাংলদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য একটা পরিবর্তন আনবে। টেন মিনিট স্কুলের স্বপ্ন, লক্ষ্য ও মিশন আমাদের মূল্যবোধ ও লক্ষ্যের সাথে বেশ ভালোভাবে মিলে যায়, এবং আমরাও তাদের এই মিশনকে সফল করার যাত্রার একটা অংশ হতে পেরে আনন্দিত।” – কিরিল কোযেভনিকভ, ম্যানেজিং পার্টনার, কনজাংশন ক্যাপিটাল (আরটিপি গ্লোবালের সাবেক ভারতীয় প্রতিনিধি)