মোঃ আশরাফুল ইসলাম
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার লাইফ কেয়ার হাসপাতাল পরিদর্শন করছেন জেলার সিভিল সার্জন মাহমুদা আক্তার।
গাজীপুরের শ্রীপুরে নার্স দিয়ে অস্ত্রোপচারে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় লাইফ কেয়ার হাসপাতালের সব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন জেলার সিভিল সার্জন মাহমুদা আক্তার। মঙ্গলবার দুপুরে এই হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
এর আগে গত রোববার রাতে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এলাকার লাইফ কেয়ার হাসপাতালে নার্স দিয়ে অস্ত্রোপচারে করানোয় এক প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। এর পরপরই চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যান। রোগীর স্বজনেরা হাসপাতালে ভাঙচুর চালান। পরে উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
নিহত প্রসূতি হলেন উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের ইন্দ্রপুর গ্রামের আসাদুল্লাহের স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার (৩০)।
সিভিল সার্জন মাহমুদা বলেন, ‘প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় সবকিছু জানতে হাসপাতালে এসেছি। ফাইল দেখে যা জানতে পারলাম, রোগীর কোনো অটি নোট নেই। কোনো ধরনের নিয়মকানুন অনুসরণ করা হয়নি। হাসপাতালে এসে আমি একজন নার্সের সঙ্গে কথা বললাম। তিনি আসলে নার্স না। তিনি কোনো ধরনের পড়াশোনা করেন নাই। ব্লাড সংগ্রহ করেন। তাঁর কোনো ট্রেনিং নাই। তিনি চিকিৎসাজগতের কেউ না।’
সিভিল সার্জন মাহমুদা আরও বলেন, ‘আমি এই হাসপাতালের সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ করে যাব। এ জন্য আমি হাসপাতালের পুরোটা ঘুরে দেখলাম। হাসপাতালে তিনজন ভর্তি রোগী রয়েছেন। তাঁদের অপারেশন করা হয়েছে। আগামীকাল তাঁরা চলে যাবেন। প্রতিটি রোগীর ফাইলে একই সমস্যা, কোনো ওটি নোট লেখা নেই। আজকে থেকে এই হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদি সব কাগজপত্র সঠিক করে আমাদের কাছে জমা দেন, পরবর্তীতে যাচাই-বাছাই করে কার্যক্রম চালুর নির্দেশনা দেওয়া হবে।’
শ্রীপুরে নার্স দিয়ে সিজারে প্রসূতির মৃত্যু, হাসপাতাল ভাঙচুর, কর্তৃপক্ষ পলাতকশ্রীপুরে নার্স দিয়ে সিজারে প্রসূতির মৃত্যু, হাসপাতাল ভাঙচুর, কর্তৃপক্ষ পলাতক
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন মাহমুদা বলেন, ‘আজকে থেকেই সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ। শুধু তিনজন ভর্তি রোগীর চিকিৎসা চালাতে পারবেন। নতুন করে কোনো রোগী ভর্তি বা চিকিৎসা দিতে পারবেন না। তিনজন রোগী আগামীকাল ছুটির পর সিলগালা করে দেওয়া হবে। আরেকটি বিষয়ে আশ্চর্য হয়েছি, এই হাসপাতালে নার্স না হয়েও অনেকেই অ্যাপ্রোন পরে রয়েছেন। এটি হতে দেওয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’