তোফায়েল আহমেদ
ঢাকার ধামরাই উপজেলার সানোড়া ইউনিয়নের বাটুলিয়া গ্রামে মাজার পূজারীদের আস্তানা গুড়িয়ে দিলেন তৌহিদী জনতা। ১১ সেপ্টেম্বর (বুধবার) সকাল আনুমানিক ১১ ঘটিকার সময় বাটুলিয়া গ্রামের বাবা বুচাই চান পাগল মাজারের বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন স্থানীয় জনগণ। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুচাই নামক এক পাগল বাটুলিয়া এলাকায় বসবাস করত। প্রায় ২৫-২৬ বছর পূর্বে বুচাই পাগলের মৃত্যু হলে বাটুলিয়া গ্রামের (বাটুলিয়া কবরস্থানে) কালামপুর – সাটুরিয়া রাস্তার পাশে তাকে সমাধিস্থ করা হয়। পরবর্তীতে এলাকার কিছু কুচক্রী মহল ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে কবরটি মাজারে রূপ দেয়। তারপর হতে আস্তে আস্তে কবরটি একটি মাজারে পরিণত হয়। এবং মাজারের আশেপাশে আরোও বেশ কয়েকটি টিন সেট স্থাপনা তৈরি করা হয়। মাজারের লোহার সিন্দুকের দান বাক্সে পথচারী, যানবাহনের শ্রমিক এবং মাজারে আগত ব্যক্তিরা প্রতিনিয়ত নগত টাকা দান করত।এসব টাকা দিয়ে চলত বাৎসরিক ওরশ। প্রতিবছর সাত দিনব্যাপী চলে ওরশ। ওরশের নামে রাতভর চলে নারী-পুরুষের পালা গান, গাজা সেবন নারী ও পুরুষের অবাধ মেলামেশা। সরে জমিনে দেখা যায় মাজারের উত্তর পাশে একটি টিনশেড নির্মাণ করা হযেছে। যেখানে ওরসের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি রাখা হতো। তার ঠিক উত্তরে আরোও একটি টিনশেড বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়। যেখানে বিভিন্ন সময় মাজারে আসা পাগল গাঁজা সেবন সহ বিভিন্ন অপকর্ম সহ রাত্রি যাপন করত। সাত দিনব্যাপী ওরশের কথা থাকলেও তা চলতো মাস ব্যাপী। স্থানীয়দের অভিযোগ বাবা বুচাই চান পাগলের আস্তানায় মদ, গাজা , জুয়া, যেনা ব্যভিচার, মাজারে সেজদা (শিরক) জমি দখল সহ এহেন অপকর্ম নাই যা এখানে সংঘটিত হয় না । এইসব অপকর্মের বিষয়টি ইতিপূর্বে বিভিন্ন প্রশাসনে জানিয়েও প্রভাবশালী মহলের চাপের কারণে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
গেল ৫ই আগস্ট সরকার পতনের সাথে সাথে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বদলে যায়। যার ফলে মানুষ অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারছে। এরই ধারাবাহিকতায় এলাকার তৌহিদী জনতা, উলামায়ে কেরাম, ছাত্রসমাজ সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ সম্মিলিতভাবে মাজার পূজারীদের আস্তানা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন।
খবরটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাভার সেনানিবাস থেকে সেনাবাহিনী সহ ধামরাই সহকারী কমিশনার (ভূমি), ধামরাই থানার অপারেশন অফিসার ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিবেশ শান্ত করেন। এ সময়ে এলাকার উলামায়ে কেরাম, তৌহিদী জনতা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে আস্তানার ব্যাপারে যে সমস্ত অভিযোগ উঠেছে তার সমাধানের আশ্বাস দেন। এবং ওলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে ধামরাই থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
ওলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে জানানো হয় আগামী মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ইউএনও মহোদয়ের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসবে। তাদের দাবি অবিলম্বে মাজার নামক ইসলাম বিধ্বংসী ও অনইসলামিক কর্মকান্ডের আতুরঘরের মূলউৎপাদন করতে হবে। অন্যথায় লাগাতার কর্মসূচি চলবে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।