এম জাফরান হারুন, নিজস্ব প্রতিবেদক, পটুয়াখালী:
পটুয়াখালীর বাউফলে সেই আলোচিত একটি হাফেজি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আল-রাফি (১৩) বলাৎকারের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। শুক্রবার (২৫ আগষ্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার মহাখালী জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বড় ডালিমা মদিনাতুল উলুম কওমিয়া হাফিজিয়া ও নুরানি কিন্ডার গার্টেন মাদ্রাসা ও এতিমখানায়। নিহত শিক্ষার্থী আল-রাফি, নাজিরপুর ইউনিয়নের বড় ডালিমা গ্রামের বাসিন্দা মোঃ রেজাউল করিমের ছেলে।
ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক শিশুটিকে দিনের পর দিন বলাৎকার করায় সে অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে শিশুটির বাবা মোঃ রেজাউল করিম অভিযোগ করেন। মৃত্যুর আগে শিশুটির বলে যাওয়া ঘটনার বিবরনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। শিশুটির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক পলাতক রয়েছেন।
ভুক্তভোগী শিশুর স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, শিশুটি ওই মাদ্রাসায় থেকে পড়াশোনা করত। শিশুটির বাবার অভিযোগ, মৃত্যুর আগে তাঁর ছেলে জানিয়েছে, প্রায় এক বছর ধরে প্রতিনিয়ত তাঁর ছেলেকে ভয় দেখিয়ে বলাৎকার করতেন ওই শিক্ষক। এতে শিশুটির পায়ুপথে ক্ষত তৈরি হয়। কিন্তু ওই শিক্ষক তাঁদের কিছু না জানিয়ে নিজে বিভিন্ন ওষুধ কিনে দিতেন। সম্প্রতি বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে শিশুটির বাবা রেজাউলকে খবর দেন ওই শিক্ষক। তিনি ছেলেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এদিকে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে মহাখালীতে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউটে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যায় ওই শিক্ষার্থী। নিহত ওই ছাত্রের বাবা মোঃ রেজাউল এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ মোঃ সেলিম গাজীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলে তার ফোন বন্ধ থাকায় কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তিনি পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এবিষয়ে বাউফল থানার ওসি এটিএম আরিচুল হক বলেন, লাশ পোস্ট মর্টেমের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর এব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এদিকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে যে এঘটনার সাথে আরও কেউ জরিত আছে এমন খবরে অনুসন্ধানী রিপোর্টার শেখ এম জাফরান হারুন এর অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধানের পরই মূল ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হবে তাই অপেক্ষা করুন।