অথই নূরুল আমিন
গত বছরের ৮ আগস্টে বর্তমান সরকার শপথ নেয়ার পর থেকেই দেখে আসছি। বেশকিছু রাষ্ট্র সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। এখানে নারী সংস্কার কমিশনও রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোও এখানে বিভিন্ন মতামত দিয়েছেন। তবে আসল কথাটা কেউ বলছেন না। কারণ আমাদের দেশের সুশীল সমাজ অনেকটাই নষ্ট চিন্তা ভাবনার। তাই অনেকে বলেছেন ছয়শ এমপির সংসদ চাই। অনেকে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী দুইবারের বেশি নয় ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে আমার মতে এখানে যেসকল কমিশন তাদের মতামত দিয়েছেন। এবং যেসকল রাজনৈতিক তাদের মতামত দিয়েছেন। এবং নির্বাচন কমিশন বলেছেন। জাতীয় নির্বাচন দিতে তারা প্রস্তুত।
তাহলে বুঝে নিতে হবে। আসলে তারা কেউই আসল রোগ সনাক্ত করতেই পারেননি। তাহলে রাষ্ট্র সংস্কার হবে কি করে? দেশের আসল রোগটা হলো অর্থনৈতিক। বিশেষ করে বাংলাদেশের সরকারের নিজস্ব কোনো আয় ইনকাম নেই। যার ফলে একটি দল ক্ষমতায় আসার পর তাদের এমপি মন্ত্রীদের খরচ যোগান দিতে হয়। সিন্ডিকেট করে জিনিস পত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়ে। ভ্যাট ট্যাক্স বাড়িয়ে দিয়ে।
যার ফলে দেশের এক শ্রেণির জনগণ দিনদিন গরিব হতে থাকে। আর অন্য দিকে জনগণের কষ্টের পয়সা শোষণ করে সরকারি দলের এমপি মন্ত্রীরা। তারপর ঐ অর্থ আবার বাহিরে পাচার করে। সেখানে তারা হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করার পরেও ক্ষমতা ছাড়তে চান না। এর মানে কি? তাদের আরো টাকা লাগবে।
এদিকে একটি দল পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার পরেও দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ বড় হয় না। অন্যদিকে সরকারি ব্যাংক গুলো দেউলিয়া হয়। এগুলো করা হয় শুধুমাত্র একটি অশুভ চিন্তা থেকে। আর সেটা হলো অন্য দল ক্ষমতায় এসে যেন। বেশি অর্থ না পায়। না রিজার্ভের না অন্য ব্যাংকের। আর বিদেশে টাকা পাচার করার মূল কারণ হলো। দলীয় এমপি মন্ত্রীরা ভাবে ক্ষমতা হারালে এই দেশে তারা কেউ অক্ষত থাকতে পারবে না। এছাড়া প্রায় সাড়ে তিনশ এমপি মন্ত্রীর বাৎসরিক খরচ কয়েক বিলিয়ন টাকা। যার ফলে দেশে বেকারের হার বাড়ে চরমভাবে।
আমি এই মর্মে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। জাতীয় নির্বাচন যদি হয় নিম্নরুপ এবং ভোটার পদ্ধতি যদি পরিবর্তন করেন। তাহলে নির্বাচন করতে রাষ্ট্রীয় টাকা লাগবে না দশ কোটিও। কেন আপনি রাষ্ট্রীয় হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে যাবেন।
১. প্রথমে ভোটার বাছাই করতে হবে। শুধুমাত্র যারা ঘরে বসে অনলাইনে ভোট দিতে সক্ষম। অর্থাৎ যারা ওয়েবসাইট বিজিট করে নাম নিবন্ধন করতে সক্ষম। শুধুমাত্র তারাই হবেন অনলাইন ভোটার। তাহলে ভোটার পাবেন আপনি দুই কোটির কিছু উপরে।
২. উল্লেখিত অনলাইন ভোটার নিয়ে ভোট দেবার উপযোগি ভোটার তালিকা প্রকাশ করবেন।
৩. তারপর রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, আটজন বিভাগীয় প্রশাসক, চৌদ্দ জন মন্ত্রী পরিষদ সদস্য। মেয়াদ থাকবে চার বছর পর্যন্ত।
এভাবে যত গুলো প্যানেল হবে। সকলের প্যানেলে এক, দুই, তিন, চার ব্যালট নম্বর থাকবে। তারা তাদের প্যানেলের প্রচার কার সময় পাবেন মোট এক মাস। নির্বাচন হবে অনলাইন পদ্ধতিতে। কেন্দ্র থাকবে নির্বাচন কমিশন অফিস। এবং ভোট হবে তিনদিন পর্যন্ত প্রয়োজনে দিনরাত ৭২ ঘন্টা।
এরকম পদ্ধতিতে নির্বাচন দিলে দেশে আইনশৃঙ্খলা সুন্দর থাকবে। এবং রাষ্ট্রীয় খরচ কমে আসবে আশিভাগ পর্যন্ত। তখনই সহজে বাড়বে না জিনিসের দাম। বাড়বে না ভ্যাট ট্যাক্স। দেশ সহজে উন্নত হবে। এবং দেশের রিজার্ভ বাড়বে প্রতিনিয়ত। এদিকে দেশের পরিবেশ সুন্দর হবে। এবং রিজার্ভ বাড়লে সরকারের পক্ষ থেকে করতে পারবে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। আমি মনে করি আমাদের দেশে কোনো এমপি প্রয়োজন নেই। দেশের চুয়ান্ন বছরের ইতিহাসে কোনো এমপি এই সমাজের কোনো কাজে লেগেছে বলে আমার জানা নেই।