আমাদের সংবাদ প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুর ভাঙ্গা উপজেলায় গতকাল রবিবার ১৬ই এপ্রিল২০২৩ইং দুপুর আনুমানিক ১.৩০ ঘটিকায় পুখুরিয়া বাসষ্টেন্ডে মধ্য বয়সী এক ব্যক্তিকে ছেলে ধরা সন্দেহে স্থানীয় উশৃঙ্খল জনতার নির্মম গনপিটুনিতে গুরুতর আহত হয়। ঘটনাটি আইন প্রশাসন জানার পর দ্রুত সেখানে উপস্থিত হয়ে গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত জ্ঞানহীন অবস্থায় ভিকটিমকে তাৎক্ষনিক উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করলে চিকিৎসারত আনুমানিক ৪৫/৫০মিনিটের মধ্যে মস্তিষ্ক থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরনের ফলে তাহার মৃত্যু ঘটে। উপস্থিত পুলিশ ফোর্স স্থানীয় বাসিন্দা ও পার্শ্ববর্তি গ্রামের লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদে ভিকটিমের প্রকৃত পরিচয় জানতে পারেন যে-তাহার নাম সামচেল মোল্লা বয়স ৪৫/৪৭, পিতা-মৃত রমিজ উদ্দিন মোল্লা, সাং-উত্তর নাজিরপুর গ্রামের স্থায়ি বাসিন্দা এবং পেশাগত গবাদি পশু গরু ছাগল ভেড়া ইত্যাদি ব্যবসায় জড়িত। প্রতিনিধি এই নির্মম হত্যা প্রসঙ্গে ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদে সন্দেহাতীত নিশ্চিত হয় যে-ভিকটিম পুখুরিয়া বাজার বাসষ্টেন্ডের পার্শ্ববর্তি গৃহস্থদের বাড়ীর আশে পাশে ঘোড়াফেরা ও ছেলে-মেয়েদের গরু ছাগল ইত্যাদি বিষয় জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকলে বিষয়টি এলাকাবাসির নজরে পড়ে ও সন্দেহের সৃষ্টি হয়। ফলে উক্ত ভিকটিম বাসষ্টেন্ডে হালিম মিয়ার চায়ের দোকানে ২/৩জন নাবালক ছেলেকে চকলেট কিনে দেওয়ার সময় স্থানিয় লোকজন তাহাকে বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন করলে তিনি বিব্রত হয়ে দ্রুত পালানোর চেষ্টা চালায় এবং তাৎক্ষনিক লোকজন তাহাকে ছেলে ধারা সন্দেহে নির্মম গনপিটুনি দিতে থাকে। এই প্রসঙ্গে প্রতিনিধি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগে নিশ্চিত হয় যে-ভিকটিমের মাথায় ও দেহের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাৎ ও মস্তিস্ক থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরনের ফলে তাহার মৃত্যু ঘটে। কিন্তু প্রতিনিধি থানা পুলিশের সাথে যোগাযোগে এই হত্যার ঘটনার সম্পূর্ন ভিন্ন তথ্য জানতে পারে যে ভিকটিম সামচেল মোল্লার সাথে স্থানিয় কিছু লোকের ব্যবসা ও ব্যক্তিগত শত্রুতার কারনে সুপরিকল্পীত গনধোলাইর মাধ্যমে তাহাকে হত্যা করা হয়। ফলে এই হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় সন্দেহভাজন ৭জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে এবং পুলিশ প্রত্যক্ষদর্শী কিছু স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্যর উপর ভিত্তিকরে এই হত্যার মূল হোতা ও হুকুমের আসামী ১।মোঃ কামাল হোসেন, পিং-মোঃ মোতালেব মোল্লাসহ ২। শাহজাহান মোল্লা, পিং-মৃত আজাদ মোল্লা, ৩। আইউব শেখ, পিং-মুনায়েম শেখ, ৪। মোঃ ফিরোজ, পিং-জামাল উদ্দিন, ৫। আবু সাইদ, পিং- মুক্তার হোসেন, ৬। জাবেদ মুন্সি, পিং-সুরোজ মুন্সি, ৭। মোঃ জামাল, পিং-মৃত কাসেম মিয়া, সাং-সকলে মানিকদাহ ইউনিয়ন পরিষদ অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা এবং ভাঙ্গা থানা পুলিশি অভিযানে ৩জন আসামীকে গ্রেফতার ও থানার নিয়ন্ত্রনে তাহাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলমান আছে। পুলিশ কর্মকর্তা আরো নিশ্চিত করে যে-ধৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাহারা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছে কিন্তু জড়িতদের বিষয় সম্পূর্ন স্বীকার উক্তি বা বয়ানে অজ্ঞাত আসামীদের নাম পরিচয় এখনো সঠিক ভাবে জানা যায় নাই। তবে অনুসন্ধান চলমান আছে এবং ও/সি সাহেব নিশ্চিত করেন যে-অত্যন্ত দ্রুত এই হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উৎঘাটন ও প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় কঠোর শাস্তি ও অর্থ জড়িমানা আদায়ে সক্ষম হবেন।