আশরাফুল আলম সরকার,নিজস্ব প্রতিবেদক
নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সদ্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) দেশবাসীকে কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়ে রাজধানীতে বর্ণাঢ্য মোটর শোভাযাত্রা করেছে। ১২ আগষ্ট শনিবার সকাল ১০টায় বিএসপি’র উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পার্টি’র চেয়ারম্যান শাহজাদা ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী প্রতিটি মানুষের রাজনীতি করার অধিকার রয়েছে। আমাদেরকে কে চিনল আর কে চিনল না তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। ২০১৯ এর ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) গঠনের পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের মূলধারার প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় সহস্রাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। কেউ যদি জেগে থেকে ঘুমের ভান করে তাহলে তাকে জাগানো যায় না। আমাদের বিষয়ে কেউ জানতে না পারলে এটা তার ব্যর্থতা; আমাদের নয়। নির্বাচন কমিশনের আরপিওতে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের বিধানে কোথাও লেখা নাই একটি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন পেতে হলে দেশের আঠারো কোটি মানুষ সেই দলকে চিনতে হবে। আরপিওর বিধান অনুযায়ী রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত হতে হলে তার একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, কেন্দ্রীয় কমিটি, কমপক্ষে ২২টি জেলায় কার্যালয় ও কমিটি এবং কমপক্ষে ১০০টি উপজেলা ক্ষেত্র মতে মেট্রো থানায় কার্যালয়, কমিটি ও ২০০ ভোটারের প্রমাণপত্র থাকতে হবে। বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির ৩৫টির ওপরে জেলা ও দুই শতাধিক উপজেলা/থানায় কার্যক্রম থাকলেও নির্বাচন কমিশনে ২৫টি জেলা ও ১১০টি উপজেলা/থানার যাবতীয় প্রমাণাদি দাখিল করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আরপিও শর্তাদি বিএসপি পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পূরণ করে রাজনৈতিক দল হিসেবে চূড়ান্ত নিবন্ধন পেয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় আমাদের নেতাকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আমি আজ আমাদের নেতাকর্মীসহ দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। আর আমি মনে করি আরপিও সংশোধনের মাধ্যমে নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে আরো সহজ করা দরকার। বিএসপি কখনো জনগণের ক্ষতি করে নেতিবাচক ধারা বা সহিংসতার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। বিএসপি সবসময় জনকল্যাণ মুলক ইতিবাচক রাজনীতির চর্চা করে। আমাদের মূল স্লোগান ‘ঐক্যের সাথে দেশ গড়ি’।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতীয় সংলাপের বিকল্প নেই। সংলাপ আয়োজনে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। তবে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) রাষ্ট্রপতির অধিনে অর্থবহ জাতীয় সংলাপ আয়োজনের দাবি করছে। তিনি বলেন, গণতন্ত্র, সুশাসন ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে হলে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ অংশগ্রহণ মুলক নির্বাচন অনিবার্য। আমরা মনে করি নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্থায়ী সমাধান আনতে হলে নির্বাচন কমিশনকে কার্যত স্বাধীন ও শক্তিশালী করতে হবে। তবেই অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব। স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে এসেও একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে প্রতিবারই আন্দোলন সংগ্রাম করতে হয়। এই অবস্থা থেকে দেশের জনগণ মুক্তি চায়। আমরা এই প্রক্রিয়ার স্থায়ী সমাধান চাই। ফখরুদ্দীন ইয়াজ উদ্দিন মার্কা তত্ত্বাবধায়ক সরকার এই দেশের জনগণ আর দেখতে চায় না। গণতন্ত্রের নামে অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া জনগণ কখনো মেনে নিবে না।
সমাবেশে অতিরিক্ত মহাসচিব মুফতী বাকী বিল্লাহ আল আযহারী ও তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক শায়খ আজমাঈন আসরারের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, বিএসপির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফজলুল হক আকন্দ, মুফতী গোলাম মহিউদ্দিন লতিফী, মোঃ মনির হোসেন, আল্হাজ্ব মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, জাতীয় স্থায়ী পরিষদ সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আবুল কালাম আজাদ, স্থায়ী পরিষদ সদস্য ও দপ্তর সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম মিয়া, যুগ্ম মহাসচিব আজাদ দোভাষ, মোঃ আসলাম হোসাইন, বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ঢালী কামরুজ্জামান হারুন, মোঃ হাবিবুর রহমান পায়েল, অ্যাড শাহ আলম অভি, মিরানা জাফরীন চৌধুরী, মোঃ দেলোয়ার হোসেন জন, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আশরাফিয়া আলী আহমদ নানতুসহ কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন পর্যায়ের বিএসপির নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করায় সমাবেশ শেষে মোটর শোভাযাত্রা করে দেশের বীর শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ ও বীর শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মুনাজাত করেন।