হাকিকুল ইসলাম খোকন,যুক্তরাষ্ট্র সিনিয়র প্রতিনিধিঃ
যুক্তরাষ্ট্রের আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগ পরিবারের উদ্যাগে যথাযথ মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ৪৮তম সাহাদৎ বার্ষিকী ও ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে গত রবিবার ,১৩ আগষ্ট ২০২৩,নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে-এর মামুন টিঊটোরিয়াল্ এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের অনুষ্ঠাত হয় খবর বাপসনিউজ ॥
সভায় সভাপতিত্ব করেন ড. প্রদীপ রন্জন কর ও সন্চালনায় ছিলেন প্রকৌ: মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী। সভার শুরুতে পবিএ ধর্ম থেকে পাঠ করেন বিভিন্ন জন ও দোয়া পরিচালনা করেন জালাল উদ্দিন জলিল। পরে বঙ্গবন্ধু পরিবারের নিহত সকল শহীদানসহ জাতীয় চার নেতা, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে উনসত্তরের গনঅভ্যূত্থান, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ও স্বৈরাচার বিরোধী সকল আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে দাড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতাপালন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান উপস্থিত বীর মুক্তিযেদ্ধাবৃন্দ সহ অনুষ্ঠানের অতিথিবৃন্দ।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়রে উপ উপাচার্য প্রফেসর বেনু কুমার দে, প্রধান আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সাবেক ডীন অধ্যাপক মতলুব আলী, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সাপ্তাহিক ঠিকানা সম্পাদক মুহমমদ ফজলুর রহমান, নটরডেম কলেজের সাবেক অধ্যাপক হোসনে আরা, বেগম ,টিভি ব্যাক্তিত্ব বেলাল বেগ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আকবর রিচি, কামরুল হাসান চৌধুরী, এম এ হাসান, যুক্তরাস্ট্র আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ডা. মাসুদুল হাসান, সিনিয়র সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন, রমেশ চন্দ্র নাথ, আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট শাহ মো: বখতিয়ার, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এমএ করিম জাহাঙ্গীর, কার্যকরী সদস্য আসাফ মাসূক, আওয়ামী লীগ নেতা আক্তার হোসেন, চিএ ও অংশনেন শিল্পী ওবায়দুল্লাহ মামুন, একে চৌধুরী, জেসমিন কহিনুর, দেলোয়ার হেসেন মোল্লা, ছাত্রলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম,আহমেদ ওয়াদুদ, শেখ মোহাম্মদ জুয়েল, নুরুল আলম মিয়া, আব্দুল্লাহ জুবায়ের, প্রসূন ঘোষ রায়, সৌরভ বিকাশ দে প্রমুখ।
সভায় বক্তারা ৭৫ এর ১৫ই আগস্টের বিয়োগান্তক ঘটানার আদ্যপান্ত তূলে ধরেন। কেন আমরা বাঙালী জাতির মহানায়ক সর্বকালের সর্বশ্রেস্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে পারলাম না! চারিদিকে ষড়যন্ত্র, দলের মধ্যে বিশ্বাসঘাতকদের ক্ষমতালিপ্সা, জাসদও বামপন্থী কিছু দলের লুটপাট, থানা আক্রমন, পাটের গুদামে আগুন, স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার-আলবদর-আলশামসদের পরাজয়ের প্রতিশোধ স্পৃহা, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের গোপন চক্রান্ত ইত্যাদি বঙ্গবন্ধু সরকারকে উৎখাত ও হত্যার মিশন জানা সত্বেও জাতির পিতা আমলে নেননি। তার বিশ্বাস ছিলো বাঙ্গালীরা কোনদিন তার গাঁয়ে আঁচড় দেবে না। বিশ্বাসঘাতক খন্দকার মুসতাক ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্থ সহচর তাজউদ্দিনকে দূরে সরিয়ে দিয়ে ছাতার মত বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে ফেলে এবং পাকিস্তানী চর মেজর জিয়ার সমর্থনে ওবায়দুর রহমান, শাহ মোয়াজ্জেম, মাহাবুবুল আলম চাষী, তাহের উদ্দিন ঠাকুর, নুরুল ইসলাম মন্জুর এবং সেনাবাহিনীর বহি:স্কৃত কিছু সদস্যদের সাথে মিলে ইতিহাসের নারকীয় এই হত্যাকান্ড ঘটায়। পরে মেজর জিয়া খুনীদের রক্ষায় ইনডেমনিটি আইন সংসদে পাশ করে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকুরী দিয়ে পুরস্কৃত করে। টানা একুশ বছর বুট ও ব্যারেলের নীচে গনতন্ত্রকে চাপা দিয়ে কারফিউ গনতন্ত্র চালু করে। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত মূল্যবোধ ধ্বংস করে পাকিস্তানী ধারায় দেশকে ফিরিয়ে নেয়। নিষিদ্ধ ঘোষিত ধর্মীয় রাজনীতির বিষবাস্প আবার দেশে চালু করে। হাজার হাজার নিরাপরাধ সৈনিক, বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের নির্বিচারে হত্যা করে। যাদের লাশ গুলোও পরিবারের কাছে ফেরত দেয় না।
আজ আবার বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারকেও ক্ষমতাচ্যূত করতে খুনী জিয়ার দল তাদের ইসলামিস্ট এলায়েন্স জামাত ও অন্যান্য সন্ত্রাসী দলসমূহ নিয়ে মাঠে নেমেছে সেই পুরনো মোড়ল মার্কিনীদের সহায়তায়। প্রতি সপ্তাহে তারা বাংলাদেশে যাচ্ছে এবং তথাকথিত সূশিল সমাজ আওয়ামী লীগ বিরোধী জোটের সাথে প্রকাশ্যে সভা সমাবেশ করে যাচ্ছে আসন্ন নির্বাচনকে সুস্ঠু ও নিরপেক্ষ করার দাবীতে। হয়ত এবারও তারা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে নির্বাচনে হারানো যাবেনা আঁচ করতে পেরে হত্যার মত ঘৃন্য পথ বেছে নিতে পারে। তাই দেশপ্রেমিক আওয়ামী লীগের প্রতিটা নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে এই অপশক্তিকে রূখে দিতে সর্বদা সজাগ ও প্রস্তুত থাকতে হবে। এবার কোন রক্তপাত হলে জাতী কাউকে ক্ষমা করবে না। এটা ২০২৩ সন, ১৯৭৫ নয়। লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী রাজপথে নেমে এসে চক্রান্তকারীদের বিষদাঁত চিরতরে ভেঙ্গে দিতে হবে। বাঙালী যদি একবার জেগে ওঠা তাহলে তাদের সামনে কোন শক্তি টিকতে পারে না এবং পারবে না। তাই শোক দিবসের শপথ হোক – আমরা বাঙালী, বাংলা আমার দেশ, শেখ হাসিনা আমাদের নেতা। ৭১ এর পর ছাড় পেলেও এবার আর সে সূযোগ দেয়া হবে না।
শেষে সভাপতির বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।শেষে সবাইকে নৈশ ভোজে আপ্যায়ন করা হয় ।