ভাইভার প্রস্তুতি টা আমি বেশ গুছিয়ে নিয়েছিলাম। আমি এ সময়টাতে নিয়মিত পেপার পড়তাম। এটা গুছিয়ে কথা বলতে সাহায্য করে। আমাকে এক স্যার বলেছিলেন খবর পড়ার মতো করে কথা বলবেন। এখানে যারা যাচ্ছেন সবাই অনেক জানেন। আমি তখনই ঠিক করে নিয়েছিলাম আমাকে পার্থক্য সৃষ্টি করতে হবে। যেকোনো টপিক পড়ে নিজের মতো বলার চেষ্টা করতাম। আমি অনেক নোট করতাম। গুরুত্বপূর্ণ ব্যপারগুলো স্টিকিপেপারে নিখে চোখে পড়বে এমন কোথাও রাখতাম। আমার পড়ার টেবিলের পাশের জানালায় এখনও অনেক ক্ষুদে বার্তা লেখা কাগজ চোখে পড়ে। আরেকটা ব্যপার।।।। আমি প্রতিটা প্রশ্নের সম্পূরক প্রশ্নকি হতে পারে সেভাবে ভেবে নিজের মতো কিছি ফরমেট সাজিয়েছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ সে সব কাছে লেগেছে। আমার ভাইভা ছিল ৯/৩/২৩। পিএসসি’র বিজ্ঞ সদস্য জনাব এস এম গোলাম ফারুক স্যার এর বোর্ডে আমি ১৪ জনের শেষ জন হয়ে ভাইভা দিয়েছি। তবে আমার ভাইভা যে সবার শেষে হতে পারে, এ ধারণা আমার ছিল। কারন ময়মনসিংহ বোর্ডের ভাইভার সিরিয়াল সাধারণত পেছনে হয়। তাই আমার সে রকম মানসিক প্রস্তুতি ছিল। ভাইভার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়েছি সকাল সাতটার কিছু পর, পাছে জ্যাম এ না পড়ি। ভাইভার ডাক পড়লো দুপুর ২:৪৭ এ। সবার শেষের নারী ভাইভাপ্রার্থী আমি বোর্ডে প্রবেশ করলাম। প্রথমেই আমার মনে হচ্ছিল এতলম্বা সময় অপেক্ষায় আমার নেতিয়ে না গিয়ে প্রানশক্তিতে বলীয়ান অবয়ব স্যারদের ভালো লেগেছে। বড়দের কাছে শুনেছিলাম বোর্ডে ফার্স্ট ইম্প্রেশন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আমি যথারীতি অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করলাম। প্রথম প্রশ্নই ছিল কি করি আমি। আমার ভেবে যাওয়া কয়েকটি ফরমেটে এটা ছিল একটা। আমার গণমাধ্যমে কাজ করাটাও স্যার বেশ ভালোভাবে গ্রহন করলেন। তারপর গণমাধ্যম সমর্কিত কিছু প্রশ্ন। তার পর যোগ হল কৃষি। আমার স্নাতক বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তেমন প্রশ্ন করেননি স্যারেরা। এর মাঝে কিছু কুইক প্রশ্ন, এক কথায় উত্তরের মতো, অর্থনৈতিক সমীক্ষা থেকে। বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে কিছু প্রশ্ন ছিল। তার পর মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কিছু প্রশ্ন। আমি প্রতিটি প্রশ্ন অত্যন্ত যত্নের সাথে গুছিয়ে বলার চেষ্টা করেছি। আমার কথা বলার মুন্সীয়ানা কাজে লাগিয়েছি শতভাগ। আমার অনুভব হচ্ছিল বিজ্ঞ বোর্ড চেয়ারম্যান স্যার এবং দুজন এক্সটার্নাল স্যার ব্যপারটি পছন্দ করছেন। আমাকে করা প্রশ্নের ৯০% উত্তর আমি করতে পেরেছিলাম। যে কয়টা পারিনি সেগুলোও অত্যন্ত বিনয়ের সাথে ফেস করেছি। বলা যায় ভাইবা বোর্ড আমার দখলেই ছিল আলহামদুলিল্লাহ। ৪১তম এর আগে পরে আমার আর কোন বিসিএস নেই। এই এক বিসিএস এই মহান আল্লাহতালার রহমত এবং আমার মা বাবার দোয়া, জীবনসঙ্গির অনুপ্রেরণা এবং আমার দৃঢ় মনোবল ও সৎ প্রচেষ্টা আমাকে সাফল্য এনে দিয়েছে।