নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঝোপ বুঝে কোপ দিতে পেরেছেন অর্থাৎ সময়ের কাজ সময়ে আয়ত্ত করেছেন তিনি।ছোট বেলা থেকেই নিজেকে গুছিয়ে ও পরিকল্পনা মতো কৌশলী মনোভাব কাজে লাগিয়ে যে ভাবে সফলতা পেয়েছে তার ভাষায় –
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বিসিএস এর মতো লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে চাকুরী পাবার কথা আমি কখনো ভাবিনি। ইচ্ছা ছিল পড়াশোনা শেষে স্বল্প সময়ের মধ্যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে অথবা অন্য কোন সরকারি চাকুরীতে যোগদান করবো। কিন্তু এ জব গুলোর অনিয়মিত সার্কুলার, অনিশ্চয়তা ও করোনা কালীন লকডাউন এর কারনে বিসিএস এর লম্বা পথ পাড়ি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।এছাড়া সিভিল সার্ভিসে থেকে তৃনমুল মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ আমাকে এ পথে আসতে প্রতিনিয়ত অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।
প্রস্তুতিকালে আমি নিজেকে একটা রুটিনে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি। সপ্তাহের প্রথমেই আমি একটা ছোট খাতায় কি কি পড়বো সেই পরিকল্পনা লিখে ফেলতাম। এরপর কোনদিন কোন সময় কি পড়বো তা লিখতাম। প্রিলি প্রস্তুতির জন্য নিজে নিজে প্রচুর মডেল টেস্ট দিয়েছি।গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলো একটা খাতায় নোট রাখতাম এবং প্রায়ই রিভাইজ করতাম।লিখিত প্রস্তুতির জন্য আমি অনেক মৌলিক এবং রেফারেন্স বই সাথে রেখেছি। যেকোনো টপিক বিভিন্ন বই থেকে পড়ে আইডিয়া ক্লিয়ার করতাম। এক্ষেত্রে আমি বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলে বিশ্লেষণমূলক কনটেন্ট ও দেখতাম। লিখিত পরীক্ষার জন্য টপিক ভিত্তিক বিভিন্ন ডাটা ও কোটেশন নোট রাখতাম।নিয়মিত দুইটি পত্রিকা অবশ্যই পড়তাম।লিখিত প্রস্তুতিতে বিগত বছরের প্রশ্ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে । প্রশ্ন বিশ্লেষণের সময় ভেবে দেখতাম, কিভাবে একই প্রশ্নের উত্তর একটু ইউনিক ভাবে উপস্থাপন করা যায় । এক্ষেত্রে খাতার প্রেজেন্টেশন ও সময় ব্যবস্থাপনা ও গুরুত্বপূর্ণ। ছোটবেলা থেকে গুছিয়ে লিখার এবং উপস্থাপন এর অভ্যাস আমার পথকে সহজ করে তুলেছে। তবে লিখিত পরীক্ষায় যেহেতু বিশাল সিলেবাস, এক্ষেত্রে কৌশলী হয়ে পড়াশোনা করতে হয়। নিজের স্ট্রং ও উইক পয়েন্ট চিহ্নিত করে পড়াশোনা করেছি। বেসিক ক্লিয়ার ছিল বলে আমার ম্যাথ এবং ইংরেজির জন্য খুব বেশি সময় দিতে হয় নি। আমার উইক পয়েন্ট ছিল আন্তর্জাতিক। তাই আন্তজার্তিক প্রস্তুতির জন্য আন্তজার্তিক রাজনীতি বিষয়ক বিভিন্ন লেখকের বই, ইউটিউবের বিভিন্ন নিউজ চ্যানেল নিয়মিত দেখতাম। ফলে আইডিয়া গুলো ক্লিয়ার হয় এবং বিশ্লেষণমূলক প্রশ্নের উত্তর দিতে সহজ হয়েছে।
ভাইবার জন্য বাচনভঙ্গি, কথা বলার দক্ষতা, শুদ্ধ উচ্চারণ ও আত্নবিশ্বাস জরুরি। ভাইভায় মূলত আমাদের ব্যাক্তিত্বের সত্যিকার বহিঃপ্রকাশ ই ঘটে। ভাইভা প্রস্তুতির জন্য পত্রিকা, প্রস্তুতি সহায়ক বই পড়ার পাশাপাশি নিজে নিজেই কনভারসেশন করতাম।
আমি সবসময় লক্ষ্যে ফোকাসড থাকার চেষ্টা করেছি । আমার পরিশ্রম, পরিবার ও প্রিয়জনদের সাপোর্ট ও দোয়া আমাকে লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করেছে। পরম করুনাময় আল্লাহর কাছে আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা এই ক্ষুদ্র আমাকে এই সম্মান প্রদানের জন্য। ভবিষ্যতে আমি আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করার চেষ্টা করব। সোনার বাংলা বিনির্মাণে একজন গর্বিত অংশীদার হতে চাই। সুদীর্ঘ চলার পথে, মা,মাটি ও মানুষের জন্য কাজ করতে সুস্বাস্থ্য কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া ও ভালবাসা চেয়েছেন তিনি।