মোঃমনিরুল,ইসলাম, বরগুনা জেলা প্রতিনিধি:
আমতলী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রুপ কুমার পালকে শুধু ঘুষ নয়,খুশীও করতে হয় নারী কর্মীকে। তার বিরুদ্ধে নারী কর্মীদের কু প্রস্তাব নিয়োগ বানিজ্য ও ঘুষ দুর্নীতিসহ নানান অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার( ৩সেপ্টেম্বর) টিমএসএস’র নারী মাঠ কর্মী জাকিয়া সুলতানা বাদী হয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসকের বরাবর এ অভিযোগ করেন।
অভিযুক্ত আমতলী উপজেলা ও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত বরগুনা জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রুপ কুমার পাল।
বর্তমানে তিনি বরগুনা জেলা, বরগুনা সদরও আমতলী উপজেলার দায়িত্বে রয়েছেন।
জানা যায়,বরগুনা আমতলী উপজেলা মহিলা বিষয়ক দপ্তরের আওতায় অসহায় পিছিয়ে পড়া হতদরিদ্র নারীদের জীবনের মান উন্নয়নের লক্ষ্যে গত ৫ নভেম্বর ২০২৩ সালে আমতলীতে আইসিভিজিডি’র ১বছর মেয়াদী টিএমএসএস’র বাস্তবায়নে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়।
এই প্রকল্পে মোট ৫৬ টি গ্রুপে ১৩৯৩ জন সুবিধাভোগী রয়েছে। উপজেলায় প্রকল্প পরিচালনায়(এলএফ) পদে মাঠে ১১জন কর্মী নিয়োগ দেওয়া হলেও বাস্তবে(৬)জন (এলএফ) দিয়ে কাজ করছেন।
নানান অনিয়ম আর নিয়োগ বানিজ্যের মাধ্যমে প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও চাকরি হারানোর ভয়ে কেউ তখন ভয়ে মুখ খোলেনি।ঘুষের বিনিময়ে এলএফ পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।এল এফ পদে ২০-৩৫ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
এছাড়া সোহানুর রহমান( এলএফ)নামে একই ব্যক্তিকে পলাশ নামে আলাদা ব্যক্তি দেখিয়ে দুটি পদে ভূয়া নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
পদাধিকার বলে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রুপ কুমার পাল প্রকল্পের সকল কাজ দেখবাল করে থাকেন এমনকি নিয়োগে রয়েছে তার হাতে।তার আস্থাভাজন রয়েছে কিছু দালাল যারা বিভিন্ন প্রজেক্টে কর্মরত রয়েছে। তাদের মাধ্যমে ঘুষ নিয়োগের সিন্ডকেটটা নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন বলে ধারনা করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মী ঘুষ দিয়ে চাকরি নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন,আমি (এলএফ) পদে চাকরির আবেদন করলে আইসিভিজিডি প্রকল্পের নাজমুল ইসলাম( ট্রেইনার)ভাই আমাকে বলেন চাকরি নিতে হলে চা নাস্তার খরচ দিলে চাকরি হবে বলে ২০ হাজার টাকা দাবী করলে আমি চাকরি পাওয়ার আশায় রাজি হই। চাকরি কনফার্ম হওয়ার পর ২০হাজার টাকা নাজমুল ইসলাম ভাইকে দেই।
প্রকল্পের (ট্রেইনার) রুবেল মিয়া বলেন,
তাছাড়া রুপ কুমার সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন,আমি লোক মুখে শুনেছি তার এ ধরনের চারিএিক সমস্যা রয়েছে।তবে মালা(এলএফ) নামে এক নারী কর্মীকে রুপ কুমার স্যারের কক্ষে প্রায়ই যাতায়াত করতে দেখা যেত।
অভিযোগকারী নারী কর্মী জাকিয়া সুলতানা( এলএফ) বলেন,এ প্রকল্পের শুরু থেকেই ব্যাপক অনিয়ম, ঘুষ দূর্নীতিসহ নারী কর্মীদের কু প্রস্তাব দিয়ে অপকর্ম করে আসছেন উপজেলা ও বরগুনার জেলার মহিলা বিষয়ক দপ্তরের( অ:দা:) উপ-পরিচালক রুপ কুমার পাল। তিনি অসহায় নারী কর্মীদের কাজের অজুহাতে রাতে অফিসে নিয়ে এসব কুকর্ম করে থাকেন। যা একাধিকবার আমার চোখের সামনে ধরাও পড়ে এবং আমাকেও বিভিন্নভাবে কু প্রস্তাব দেয়।ফোন দিয়ে বিরক্ত করতে থাকে,রাতে অফিসে আসতে বলে,ভিডিও কলে কথা বলতে বলে কিন্তু আমি তার এসব কু প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমাকে চাকরিচ্যুত সহ ভয় ভীতি দেখান।বিষয়টি গনমাধ্যমের লোকজন জানাজানি হলে আমাকে ম্যানেজ করার জন্য তিনি জোর তদবির শুরু করেন।তার মত একজন চরিত্রহীন লোকের সরকারি এত বড় গুরত্বপূর্ন পদে চাকরি করার কোন অধিকার রাখেন না।
আমি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে কঠিন শাস্তি দাবীও জানাই।
আমতলী উপজেলা ও বরগুনা জেলার অঃদাঃ মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রুপ কুমার পাল বলেন, নিয়োগ দেয়ার এখতিয়ার হলো প্রকল্প কর্মকর্তাদের আমি শুধু তদারকি করি, রাত ৮টা পর্যন্ত নারী কর্মী নিয়ে অফিসে কিসের কাজ জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিসিয়াল কাজ করার জন্য অনেক সময় রাত হয়,অনেকেই তো রাত করে অফিস করে।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান,লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।