শরিফা বেগম শিউলী,স্টাফ রিপোর্টার
প্রেসক্লাব,রংপুরের অনুনোমোদিত কমিটির দৌরাত্মে নাজেহাল নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ও স্থানীয় কর্মরত অধিকার বঞ্চিত সাংবাদিকরা। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে অনেক অনৈতিক কর্মকাণ্ড। প্রেসক্লাব,রংপুর প্রতিষ্ঠা পায় ১৯৬৫ইং সালে। এরপর ১৯৮৯ইং সালে এরশাদ সরকারের আমলে নগরীর প্রাণকেন্দ্রে সরকারের খাস খতিয়ানভুক্ত ৩৪ শতক সম্পত্তি নামমাত্র মুল্যে রংপুর জেলার সম্পাদক প্রকাশক ও কর্মরত সাংবাদিকদের কল্যান, মানোন্নয়নে লিখে দেয়া হয়। ১৯৯১ইং সালে সমাজসেবা জেলা কার্যালয় হতে নিবন্ধন হয় সংগঠনটি। কিন্তু নিবন্ধন সাল হতে প্রতি বছর আয়-ব্যয়, নির্বাচিত কমিটির অনুমোদন যাবতীয় দেখভাল, তদারকির দায়িত্ব নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের। রহস্যজনকভাবে বিগত ৩৩ বছরে এর কোনটাই কোনপক্ষই পালন করে নাই। ফলে সংগঠনটিকে দেয়া সরকারি সাহায্য,অনুদান, প্রণোদনাসহ বিভিন্নভাবে দেয়া কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে চলেছে। শুধু তাই নয়, বরং প্রেসক্লাব কমপ্লেক্স নির্মানে ১৯৯৯ইং সালে ৫কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করে তৎকালীন জেলা প্রশাসক,রংপুরকে নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান করে এর নির্মাণ শুরু হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় সরকারের সচিব আরও ১ কোটি ২০লাখ, সড়ক ও জনপথ রংপুর থেকে ৮৯ লাখ এবং জেলা পরিষদ থেকে মোটা অংকের অনুদান প্রাপ্ত হয়। পরে কৌশলে জেলা প্রশাসককে বাদ করে দেন। এলজিইডির কারিগরি সহায়তায় কমপ্লেক্সটিতে প্রায় ৪শত দোকান করে। সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার ৫৯বছরে এবং নিবন্ধন অনুযায়ী ৩৩ বছরে সদস্য সংখ্যা মাত্র ৩২ জন। নিবন্ধন নেয়ার সময়ের গঠনতন্ত্রকে বাদ রেখে বিভিন্ন সময়ে ৩ বার গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে অনুনোমোদিত গঠনতন্ত্রে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে ফেলে। এ সুযোগে কমপ্লেক্সের সাড়ে ৩শ দোকান বিক্রি করে সমুদয় টাকা ভাগাভাগি করে আত্মসাৎ করে। জেলার বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক ও কর্মরত ২শতাধিক সাংবাদিককে বঞ্চিত রাখে। এসব অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে যারাই প্রতিবাদ প্রতিকার চেয়ে সরকারি যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে লিখিত অভিযোগ করলে তাদের ওপর নেমে আসে ষড়যন্ত্র, হামলা ও মিথ্যা মামলাসহ অন্যায় অবাঞ্ছিতের ঘটনা। এসব বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্ছিতদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করলে বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক আন্দোলন নামের সংগঠনটি প্রেসক্লাব,রংপুরের বৈষম্য দূর করতে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার, বিভাগীয় সিনিয়র তথ্য ও সম্প্রচার, জেলা প্রশাসক, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ও বিভাগীয় পরিচালকসহ অন্তবর্তীকালীন সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অবগতি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা চেয়ে আসে। এ ব্যপারে প্রেসক্লাব,রংপুরের নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ সমাজসেবা জেলা
কার্যালয়,রংপুরের উপ-পরিচালক আব্দুল মতিনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, নিবন্ধন তো আমার সময়ে হয়নি। দেখতে হবে কি অবস্থায় আছে। পরে জানান, এটি নিবন্ধন নেয়ার পর আমাদের কাররই সঙ্গে যোগাযোগ রাখেনি। ২০০৯ সালে নিস্ক্রিয়র তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়েও পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এরপর গত ১সেপ্টেম্বর২৪ইং তারিখে বর্তমান কমিটির অনুমোদন চায় প্রেসক্লাবের তথাকথিত অবৈধ কমিটি। এতে বিষ্ময় প্রকাশ করে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ ৫সদস্য বিশিষ্ট একটা তদন্ত কমিটি গঠন করে পত্র দিলে গায়ে আগুন ধরে যায় বর্তমান ফ্যাসিস্ট কমিটির। অনুমোদন না দেয়ায় এবং প্রেসক্লাবের তদন্ত করতে চেয়ে নোটিশ করায় গত ৪ সেপ্টেম্বর প্রেসক্লাবের অবৈধ চক্রটি নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালকসহ তদন্ত কমিটিকে আদালতের মাধ্যমে অস্থায়ী নিষধাজ্ঞা চেয়ে কারন দর্শাও নোটিশ করে। এ ব্যাপারে প্রবেশন অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, ওরা ওদের গঠনতন্ত্র মানবেনা আবার জবাবদিহিও করবেনা। আমরা তদন্ত কমিটি করলাম। তদন্ত আমাদের করার এখতিয়ার আছে। আদালত করে আটকে দেয়ায় আমরা নাজেহাল বোধ করছি। অন্যদিকে, আন্দোলন দমাতে বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক আন্দোলন এর প্রধান সমন্বয়ক সাংবাদিক এস.এম জাকির হুসাইন, এনামুল হক স্বাধীন ও শরিফা বেগম শিউলীর নামে মিথ্যা অভিযোগ এনে আদালতে মামলা দায়ের করে আওয়ামীলীগ নেত্রী মেরিনা লাভলী। প্রেসক্লাব,রংপুরের এ সকল অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও অধিকার বঞ্চিতদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, তদন্তে বাধা, নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলাসহ সার্বিক কর্মকান্ডে বিস্মিত সচেতনরা। অচিরেই প্রশাসক নিয়োগ করে অথবা তত্বাবধায়ক কমিটি করে চিরতরে বৈষম্যমুক্ত প্রেসক্লাব করার দাবী রংপুরের সম্পাদক ও কর্মরত সকল সাংবাদিকদের দাবি।